ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তান ক্রিকেট দল আসছে আজ

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

পাকিস্তান ক্রিকেট দল আসছে আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবার মুখে একই সুর, এবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজে স্বাগতিক বাংলাদেশই ফেবারিট। বাংলাদেশের চেয়ে কম শক্তিশালী পাকিস্তান। তাহলে তো অন্তত ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশেরই জেতা উচিত! পাকিস্তানের সাবেক উইকেটরক্ষক রশিদ লতিফ তো বলেই দিয়েছেন, ‘সিরিজে বাংলাদেশ জিতলে আমি অবাক হব না।’ তাহলে কী দাঁড়াল? বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে যে আজ ঢাকায় পা রাখবে পাকিস্তান, প্রথমবারের মতো ফেবারিট তকমা নিয়ে আসছে না। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে যখন পাকিস্তান ক্রিকেট দল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখবে তখন থেকেই ১৯৯৯ সালের পর আবারও পাকিস্তানকে হারানোর ক্ষণ গননাই যেন শুরু হয়ে যাবে। ১৭ এপ্রিল প্রথম ওয়ানডেতে না হোক, ১৯ এপ্রিল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে না হোক, ২২ এপ্রিল তৃতীয় ওয়ানডেতে হলেই হয়। অথবা তিন ওয়ানডের সিরিজের যে কোন একটি ম্যাচ জিতলেই তো হয়ে যায়। ওয়ানডেতে সেই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে হারানোর পর থেকে যে প্রায় ১৬ বছর পাকিস্তানকে হারানোর স্বাদ মিলেনি তা মিলে যায়। এবারই সেরা সুযোগ। প্রথমবারের মতো পাকিস্তান দলটি বাংলাদেশ আসছে ফেবারিট তকমা ছাড়াই। দলটিতে তরুণ ক্রিকেটারে ঠাসা। ১৯৯৯ সালের পর ২৫ ওয়ানডে খেলে একটিতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার যে ওয়ানডেতে নতুন অধিনায়ক আজহার আলির (১৪ ওয়ানডে) নেতৃত্বে সামি আসলাম (অভিষেকই হয়নি), সহঅধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ (৩৯ ওয়ানডে), মোহাম্মদ হাফিজ (১৫৫ ওয়ানডে), আসাদ শফিক (৫৩ ওয়ানডে), ফাওয়াদ আলম (৩৫ ওয়ানডে), মোহাম্মদ রিজওয়ান (অভিষেকই হয়নি), হারিস সোহেল (১৭ ওয়ানডে), সাদ নাসিম (অভিষেকই হয়নি), সাঈদ আজমল (১১১ ওয়ানডে), ইয়াসির শাহ (২ ওয়ানডে), ওয়াহাব রিয়াজ (৫৪ ওয়ানডে), রাহাত আলি (৬ ওয়ানডে), এহসান আদিল (৬ ওয়ানডে) ও জুনায়েদ খান (৪৮ ওয়ানডে) আসছেন, দলটি আনকোরাই। মিসবাহ উল হক, ইউনুস খান, শহীদ আফ্রিদিদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারই নেই। শুধু দুই ক্রিকেটার আছে ১০০’র বেশি ওয়ানডে খেলা। অলরাউন্ডার হাফিজ ও স্পিনার আজমল। ৫০ ওয়ানডের বেশি খেলা ক্রিকেটারও আছেন মাত্র দুইজন। একজন, আসাদ শফিক; আরেকজন, ওয়াহাব রিয়াজ। এ দলটি নিয়ে তাই পাকিস্তান কোচ ওয়াকার ইউনুস থেকে শুরু করে অধিনায়ক আজহারও চিন্তিত। তাইত বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেই দিয়েছেন, ‘এবার সিরিজে আমরাই ফেবারিট। পাকিস্তানকে হারানোর এবারই সুযোগ। তবে ‘জান-প্রাণ’ লাগিয়েই যে জয়ের জন্য মাঠ ধাপিয়ে বেড়াবে পাকিস্তান ক্রিকেটাররা তা আর বোঝার অপেক্ষা থাকে না। নতুন অধিনায়ক হয়েছেন আজহার। তরুণ একটি দল নিয়েই তাকে এগিয়ে যেতে হবে। এমন সময় আজহার জয়ই চাইবেন। বিশ্বকাপে দল এতটাই বাজে খেলেছে, সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছে। যদি বাংলাদেশের কাছেও হারে, সমালোচনা আরও বাড়বে। সেই সমালোচনা থেকে মুক্ত হতে হলেও পাকিস্তানকে জিতে যেতে হবে। ১৯৯৯ সালের পর যে পাকিস্তান হারেনি, সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বিষয়ও আছে। পারবে পাকিস্তান অন্তত এবার মিসবাহ, ইউনুস, আফ্রিদিহীন দল নিয়ে বাংলাদেশকে প্রতি ম্যাচে হারাতে? ওয়াকার বলছেন, ‘তা কঠিন।’ কারণ? পাকিস্তান কোচ জানালেন, ‘একে তো খেলা বাংলাদেশে। এরপর দল বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলেছে। অনেক আত্মবিশ্বাস আছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে কঠিন সিরিজ হবে।’ একই মতো দিয়েছেন অধিনায়ক আজহারও। বলেছেন, ‘আশা করছি দলের তরুণ ও প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা জয় এনে দেবে। কিন্তু এটাও সত্য তরুণ দলটি নিয়ে বিশ্বকাপে তাক লাগিয়ে দেয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলা কঠিনই হবে।’ সাবেক উইকেটরক্ষক রশিদ লতিফ তো বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফর্মেন্সে মুগ্ধ। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশ দলকে নিয়ে পাকিস্তানকে সতর্কও করে দিলেন। তাও ‘যেন-তেন’ মন্তব্য নাকি! পাকিস্তান হারতেও পারে বলেই জানিয়েছেন লতিফ। বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। দলটি এখন এতটাই ভাল যে পাকিস্তান হারতেও পারে।’ সবার নজরেই এবার বাংলাদেশই শক্তিশালী। এ শক্তি এখন মাঠে কাজে লাগাতে পারলেই হয়। ২৪ এপ্রিল হবে একমাত্র টি২০ ম্যাচ, ২৮ এপ্রিল থেকে ০২ মে প্রথম টেস্ট ও ৬-১০ মে দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। টি২০ ও টেস্টের চেয়ে ওয়ানডে সিরিজের দিকেই সবার নজর থাকবে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চেয়ে কম শক্তির দল নিয়ে আজ পাকিস্তান ওয়ানডে দল যে বাংলাদেশে আসছে, সেই দলকে আবারও ১৯৯৯ সালের পর হারানোর সুযোগ যে মিলছে।
×