ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাশরাফিদের সংবর্ধনায় জনতার ঢল

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১২ এপ্রিল ২০১৫

মাশরাফিদের সংবর্ধনায়  জনতার  ঢল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বছর যেতে না যেতেই ১৮ বছর চলে গেল মাঝখানে। কিন্তু এমন কোন নৈপুণ্যই চোখে পড়ল না যে বীরের সম্মান দেয়া হবে ক্রিকেটারদের। গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। অবশেষে ২০১৫ সালে এসে উপলক্ষ মিলল। আবারও সংবর্ধিত হলেন ক্রিকেটাররা। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জেতা দলকে গণসংবর্ধনা দেয়ার পর এবার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ক্রিকেটারদের বীরের সম্মানই দেয়া হলো। গণসংবর্ধনা দেয়া হলো শনিবার। সেই সংবর্ধনায় জনতার ঢলও নামল। স্থান একই থাকল, মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ। বাকি সব কিছুতেই যেন পরিবর্তন হলো। ১৯৯৭ সালে আকরাম খানের আইসিসি ট্রফি জয়ী দলকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবর্ধনা দিলেন। এবার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা মাশরাফির দলকে সংবর্ধনা দিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন উপস্থিত ছিলেন । বিকেল ৫টার পর সংবর্ধনা দেয়া হলো। সবার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেয়া হলো। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ বলে গর্জনও উঠল। তবে ১৯৯৭ সালে যেভাবে জনতার ঢল নেমেছিল, এবার সে রকম ঢল নামল না। দুপুরে তো ঠিকমতো জনতার দেখাই মিলল না। সময় যত গড়াল ক্রিকেটপ্রেমীদের সংখ্যাও ততই বাড়তে থাকল। একটা সময় বিকেল ৫টায় গিয়ে হাজার হাজার জনতা উপস্থিত হয়ে গেলেন। ক্রিকেটাররাও ধীরে ধীরে এক এক করে মঞ্চে উঠলেন। তবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মজার ঘটনা বলতে একটিই ভালভাবে ঘটল। যখন বাংলাদেশ পেসার রুবেল হোসেন মঞ্চে উঠলেন, সঙ্গে সঙ্গে জনতার ঢল থেকে আওয়াজ উঠল, ‘হ্যাপী, হ্যাপী’। সেই আওয়াজ যেন অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলল। রুবেলের হাসি যেন থামেই না। শেষে কোচ হাতুরাসিংহেকে মাঝখানে রেখে ক্রিকেটাররা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে দুই হাত উপর করলেন। তখন যেন সবার ভেতর একটা আলোড়নই তৈরি হয়ে গেল। কখনও ‘মাশরাফি, মাশরাফি’ রব উঠল। কখনও, ‘মাহমুদুল্লাহ, মাহমুদুল্লাহ’ রব উঠল। আর সুযোগ পেতেই ‘রুবেল, রুবেল’ রবে পুরো এলাকায় কম্পন ধরল। এর মধ্যেই বিসিবি সভাপতি বক্তব্য দিতে গিয়ে বললেন, ‘দল অসাধারণ খেলেছে। আমরা গর্বিত। রুবেল ৮ উইকেট পেয়েছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে যেন ৮০ উইকেট পেয়েছে!’ মাশরাফি বক্তব্যে, ‘জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। সবসময় পাশে থাকার অনুরোধ করলেন।’ এরপর বিসিবি সভাপতি যখন আবার বললেন, ‘আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছি। আরও অনেকদূর যেতে পারতাম। কিন্তু তা হয়নি। সামনে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ আছে। সেই সিরিজে আরও ভাল করবে দল। সেই আশাই করছি।’ সবার ভেতর তখন বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তগুলোতে ভারতের কাছে হারের স্মৃতিই সামনে চলে আসল। বিসিবি সভাপতি যখন ভারতের নামটি উচ্চারণ করলেন, তখন ‘জবাব দেব, জবাব দেব’ রবই উঠে গেল। অনুষ্ঠান যেন তখন আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠল। ব্যান্ড দলগুলো সঙ্গীত পরিবেশনা করে যে আমেজ তৈরি করতে পারলেন না, মাশরাফি, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, রুবেলরা মঞ্চে উঠতেই সেই আমেজ দেখা গেল। অনুষ্ঠানটি তো তাদের জন্যই ছিল। হাজার হাজার জনতাও উপস্থিত হয়ে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা বীরদের সংবর্ধনাও দিলেন।
×