ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শীর্ষ ঋণখেলাপীদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে সরকার

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১২ এপ্রিল ২০১৫

শীর্ষ ঋণখেলাপীদের শ্বেতপত্র প্রকাশ  করবে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শীর্ষ ঋণখেলাপীদের একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমানকে চিঠি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চিঠির সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্যের একটি ছকও দেয়া হয়েছে। এ তথ্য দিতে যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের ছকের হালনাগাদ করার প্রয়োজন হয়, তবে সে পরিবর্তন এনে তথ্য সরবরাহ করার অনুরোধ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সূত্র জানায়, গত সংসদ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান তার বক্তব্যে শীর্ষ ঋণখেলাপীদের সংখ্যা ও ঋণের পরিমাণ জানতে চান। এ বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করারও দাবি জানান তিনি। এরপর ঋণখেলাপীদের নিয়ে খবরের কাগজে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংক গবর্নরকে চিঠি দিয়ে ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণখেলাপীদের বিস্তারিত প্রতিবেদন সরবরাহ করতে বলেন। অর্থমন্ত্রীর পাঠানো চিঠিতে ঋণখেলাপীদের তালিকা ও তাদের ঋণ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- সংশ্লিষ্টদের কত টাকা খেলাপী ঋণ আছে, তাদের ঋণের আসল ও সুদের অঙ্ক কত, কতবার ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন, প্রতিবারে কত সুদ মওকুফ পেয়েছেন, কখনও ঋণখেলাপী অবস্থান থেকে তার উত্তরণ হয়েছে কি-না ইত্যাদি। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থমন্ত্রীর পাঠানো চিঠিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্যও রয়েছে। অতিরিক্ত কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করে অর্থমন্ত্রীকে সরবরাহ করা হবে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, এটি একটি ভাল উদ্যোগ। তবে এর আগেও খেলাপী গ্রাহকদের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর আর প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। কারণ ঋণখেলাপীদের হাত অনেক লম্বা। এবারও হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্তদের খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিলে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে। ফলে খেলাপী ঋণের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকগুলোকে এসব ঋণ নিয়মিত তদারকির মধ্যে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রীর চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্যই শীর্ষ ঋণখেলাপীদের বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ১৭ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণ ছিল ৪০ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ২০১২ সালে খেলাপী ঋণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ওই বছর ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।
×