ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাসের দেনা শুধতে হবে, নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর জাতি

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৯ এপ্রিল ২০১৫

ইতিহাসের দেনা শুধতে হবে, নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর জাতি

মোরসালিন মিজান ॥ মানুষের মতো দেখতে। আদতে তা নন। হায়েনার যত যা, নিজের মধ্যে ধারণ করেছিলেন কামারুজ্জামান। ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা ১৯৭১ সালে মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। বাঙালী যখন একটি ফুলকে বাঁচানোর জন্য লড়ছে, তিনি তখন বিষাক্ত সাপ। পাকিস্তানের হয়ে স্বজাতিকে দংশন করেছেন। নিজ ভূখ-ের বিপরীতে জেনে-শুনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বাংলার নিরীহ-নির্দোষ মানুষ খুনে হানাদার বাহিনীকে সব রকমের সহায়তা দিয়েছেন। নিজে অংশ নিয়েছেন গণহত্যায়। অসহায় মা-বোনকে ধর্ষণ করেছেন ইসলামের নামে। গণিমতের মাল হিসেবে পুরে দিয়ে এসেছেন পাকিস্তানী বাঙ্কারে। একাত্তরে আল বদরের ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রধান ছিলেন কামারুজ্জামান। তার পরিকল্পনায় সোহাগপুর গ্রামের ১২০ পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বহু নারীকে ধর্ষণ করা হয়। বেদনার ইতিহাস ধারণ করে সোহাগপুর এখন বিধবাপল্লী নামে পরিচিত। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস আরও অনেক অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন কামারুজ্জামান। হ্যাঁ, ইতিহাসটি সকলের জানা। এর পরও, কী আশ্চর্য, সোনার বাংলায় দিব্যি ছিলেন ঘাতক! স্বাধীন দেশে যুদ্ধপরাধীদের দল জামায়াতের তিনি বড় নেতা হয়েছিলেন। ‘আল্লার আইন চাই/ সৎ লোকের শাসন চাই’ বুলি আওড়েছেন। হয়ত স্বপ্ন দেখছিলেন দলের অন্য নেতাদের মতো তিনিও হবেন ‘মাননীয় মন্ত্রী’। কিন্তু ত্রিশ লাখ শহীদের বাংলাদেশ আর কত সইবে? এ পর্যায়ে তাই শুরু হয় বিচার। পাপীষ্ঠদের যত পাওনা, একে একে বুঝিয়ে দিতে থাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে শুরু। সেই ধারাবাহিকতায় একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দ- পেয়েছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় সর্বোচ্চ আদালত হয়ে এখন কার্যকরের অপেক্ষা। হ্যাঁ, অনেক বিলম্ব হয়েছে। কালক্ষেপণ হয়েছে। তবে আর নয়। সব কিছু ঠিক থাকলে আজ বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের জীবনের শেষ দিন। গোটা জাতি সুসংবাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে। কারণ, শুধু ফাঁসি নয়। এ দ- কার্যকরের মধ্য দিয়ে নিজের দেনা শোধ করবে ইতিহাস। আরও একবার আইনের শাসনের বিজয় ঘোষিত হবে। সব বাধা পেরিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানান দেবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। সঙ্গতকারণেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনরতরা আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা করতে রাজি নন। কলঙ্কমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান তাঁরা। এ প্রসঙ্গে একাত্তরের ঘাতক-দালাল-নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা পরিচালিত
×