ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এক হাজার একর জমির ফসল হানির আশঙ্কা

কলাপাড়ায় লোনা পানিতে পাঁচ গ্রাম ডুবে গেছে

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৬ এপ্রিল ২০১৫

কলাপাড়ায় লোনা পানিতে পাঁচ গ্রাম ডুবে গেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৫ এপ্রিল ॥ পূর্ণিমাপরবর্তী জোয়ারের প্রবল চাপে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে প্রবলবেগে লোনা পানি প্রবেশ করায় লালুয়ার পাঁচটি গ্রামের কৃষকের বোনা আউশ আবাদ পড়েছে অনিশ্চয়তায়। ডুবে গেছে রবিশস্যের ক্ষেত। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে স্লুইসগেট খুলে অভ্যন্তরীণ খাল-বিলে লোনা পানি প্রবেশ করানো হয়েছে। ফলে কৃষকের অন্তত এক হাজার একর জমির ফসলহানির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া বহু বিল পুকুর তলিয়ে গৃহস্থালি কাজসহ গবাদিপশুর খাবার পানির তীব্র সঙ্কট শুরু হয়েছে। শনি ও রবিবার এসব দৃশ্য দেখা গেছে। লালুয়ার চারিপাড়া, পশুরবুনিয়া, চৌধুরীপাড়া, নয়াকাটা, মহিপুরের নিজামপুর, চাকামইয়ার কাঁঠালপাড়ার কৃষক সবচেয়ে বেশি ক্ষতির কবলে পড়েছেন। বাড়ির উঠানের সবজি পর্যন্ত লোনা পানিতে ডুবতে বসেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় পর পর দুই বছর লালুয়ার রামনাবাদ নদীপাড়ের প্রায় দেড় হাজার কৃষক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এ বছর আমন ফসল পায়নি। শুকনো মৌসুমে বোনা আউশ আবাদের প্রস্তুতি নেয় এরা। কিন্তু পূর্ণিমা পরবর্তী তিনদিনে তাদের সব লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিন জোয়ারে দুই দফা পানি প্রবেশ করছে জনপদে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি প্রভাবশালী মহল আবার স্লুইস গেট খুলে অভ্যন্তরীণ খাল-বিল লোনা পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে। রক্ষা পায়নি পুকুর পর্যন্ত। নিরাপদ পানির ভা-ার নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এমন দৃশ্য দেখা গেছে চাকামইয়ার কাঁঠালপাড়ায়। ছয় ভেন্টের স্লুইসগেট খুলে অনবরত ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে লোনা পানি। একই দৃশ্য নীলগঞ্জের নিজকাটা, টুঙ্গিবাড়িয়া, নীলগঞ্জ, হাজিপুর, সদরপুর, মেলাপাড়া, পক্ষিয়াপাড়া, তুলাতলী, ধানখালী, মহিপুরসহ সব কয়টি ইউনিয়নে। অন্তত ৫০টি স্লুইসগেট খুলে লোনা পানির প্রবেশ করানো হয়েছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে প্রকৃতি এবং মানবসৃষ্ট বিপদ সাধারণ কৃষকের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। গোসলসহ রান্নার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শুধু ফসলহানি নয়, বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটার শঙ্কা করছেন গ্রামের মানুষ। ইউপি চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জামার তারা জানান, চারিপাড়া ও পশুরবুনিয়া গ্রামের চারটি পয়েন্ট দিয়ে গত বছর বর্ষা মৌসুমে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে কৃষকরা আউশ আবাদ করে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হতো। এখন কৃষকদের জমি থাকলেও ফসল ফলানোর কোন সুযোগ নেই। কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, লালুয়ার পাঁচটি গ্রামের অন্তত ১০০ হেক্টর জমিতে আউশ চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে গ্রামের ভিতর লোনা পানি প্রবেশ করায় গ্রামের সকল জমি আউশ আবদ করার উপযোগিতা হারিয়ে ফেলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌলী মোঃ শহীদুল ইসলাম জানান, চারিপাড়া ও পশুরবুনিয়া অংশের বেড়িবাঁধ সংস্কার বিষয় এই মুহূর্তে সঠিক তথ্য দিতে পারছি না।
×