ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এএফসি অনুর্ধ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব

বাংলাদেশ-ভারত মর্যাদার লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ৩১ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশ-ভারত মর্যাদার লড়াই আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এএফসি অনুর্ধ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব’ থেকে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিদায় নিয়েছে দুটি দল। একটি স্বাগতিক ‘বেঙ্গল টাইগার্স’ খ্যাত বাংলাদেশ যুব দল। অন্যটি ‘ওয়ারিয়র্স হিন্দ’ খ্যাত ভারত যুব দল। আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় এ দুই দল মুখোমুখি হবে নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে। ম্যাচটি যতটা না নিয়ম রক্ষার, তার চেয়ে বেশি মর্যাদার। কেননা প্রতিবেশী এই দেশ দুটোর শক্তি-সামর্থ্য, র‌্যাঙ্কিং- সবই কাছাকাছি। অনুর্ধ-২৩ লেভেলের ফুটবলে এই দুই দেশ এ পর্যন্ত খেলেছে ৪ বার। তাতে বাংলাদেশের এক জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় দুটিতে। বাকি একটি ম্যাচ ড্র হয়। বাংলাদেশের দুই গোলের বিপরীতে ভারতের গোল ৫টি। অবশ্য সিনিয়র দলের ক্ষেত্রে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশই। তাদের র‌্যাঙ্কিং ১৬২, ভারতের ১৭৩। বাংলাদেশের এএফসি র‌্যাঙ্কিং ৩২, ভারতের ৩৬। এ আসরে দুই দলই ২ ম্যাচে হেরে কোন পয়েন্ট অর্জন করতে পারেনি। কোন গোলও করতে পারেনি। তবে গোল কম খেয়েছে ভারত, ৬টি। বাংলাদেশ ৮টি। ‘আমি মনে করি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা কৌতুহলোদ্দীপক হতে যাচ্ছে। কেননা দুই দলই টানা দুই ম্যাচে হেরেছে। দুই দলই বিধ্বস্ত অবস্থায়। দুই দলই শক্তিমত্তায় প্রায় সমানে সমান। ভারত ভাল দল, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন লেভেলে আমরা একাধিক ম্যাচ খেলেছি সাম্প্রতিক সময়ে। ফলে তাদের সম্পর্কে ভাল ধারণা আছে। কালকের (আজ) ম্যাচে হোমটিম বলে আমরা প্রচুর দর্শক সমাগম এবং তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন প্রত্যাশা করছি। ইতোমধ্যেই আমাদের এ টুর্নামেন্টের মূলপর্বে যাওয়ার আশা শেষ। ভারতেরও তাই। এজন্য ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচটা জয় দিয়েই শেষ করতে চাই’Ñ কথাগুলো লোডভিক ডি ক্রুইফের। তিনি বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ দলের হেড (ডাচ্) কোচ। সোমবার বাফুফে ভবনে এক প্রি-ম্যাচ কনফারেন্সে এমনটাই বলেন তিনি। এ আসরে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ সিরিয়া ও উজবেকিস্তানের কাছে হারে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তির তারতম্যটা কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে ক্রুইফ বলেন, ‘সিরিয়া যুব দলের নয় ফুটবলার দেশের বাইরে বিভিন্ন লীগে খেলে। একই অবস্থা উজবেকিস্তানেরও। তারা সারাবছর লীগ খেলার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে এবং অনেক সময় একসঙ্গে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ লাভ করে। ফলে তাদের রেজাল্ট ভাল। আর এ জায়গাতেই তাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আমরা।’ সিরিয়া আর উজবেকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ হজম করেছে মোট ৮ গোল! তার মধ্যে ৬টি গোলই সেটপিস থেকে খেয়েছে ক্রুইফের শিষ্যরা! সেট পিস থেকে গোল হজম করা বাংলাদেশ দলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। টুর্নামেন্টের আগে একজন জার্মান গোলরক্ষক কোচকে (ক্রিস্টিয়ান শোয়েচলার) আনা হলেও অবস্থার কোন উত্তরণ ঘটেনি। তাই গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নÑ সেটপিস ‘ক্যান্সার’ থেকে গোল খাওয়ার কবে ইতি ঘটবে? কিন্তু প্রশ্নটি পছন্দ হয়নি ক্রুইফের। তাই উত্তর দেননি। গত ম্যাচে রায়হানের লালকার্ড এবং হেমন্তর চোট নিয়ে প্রশ্ন করলে ক্রুইফ জানান, ‘রায়হান গত ম্যাচে যেভাবে লালকার্ড পেয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। ভারতের বিরুদ্ধে তার স্থলে বাদশা বা ফয়সালÑ এই দুইজনের মধ্যে একজনকে খেলাতে পারি। হেমন্ত অনেক দিন খেলার মধ্যে নেই চোটের কারণে। গত ম্যাচে খেলতে নেমে আবারও চোট পেয়েছে। ভেবেছিলাম তার ইনজুরি প্রকট। কিন্তু ডাক্তারের রিপোর্ট মোতাবেক তার চোট সিরিয়াস নয়। ভারতের বিরুদ্ধে তার খেলার সম্ভাবনা আছে।’ কেন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি ইন্টারেস্টিং, তার ব্যাখ্যা দেন ক্রুইফ। তিনি বলেন, ‘শক্তিমত্তার নিরিখে প্রতিবেশী যখন দুটি দেশ প্রায় একই মানের হয়, তখন তাদের দ্বৈরথ দারুণ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। যেমন হল্যান্ড বনাম জার্মানির লড়াই। বাংলাদেশ-ভারতের দ্বৈরথকেও তেমন বলা যায় অনায়াসেই। এজন্য ম্যাচটিকে আমার কাছে খুবই ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। তাদের মোকাবেলা করার জন্য আমরা তৈরি।’ বাংলাদেশ যুব দলের অধিনায়ক সোহেল রানা বলেন, ‘টানা দুই ম্যাচেই হেরেছি অত্যন্ত বাজেভাবে। আজ প্রতিপক্ষ ভারত। অতীতে ওদের সঙ্গে ওদের মাটিতে যতবারই খেলতে গিয়েছি, ততবারই ওরা স্বদেশী রেফারি দিয়ে খেলা চালিয়ে পক্ষপাতমূলক রেফারিং করে নিজেদের পক্ষে রেজাল্ট নিতে চেষ্টা করেছে। এবার নিজেদের মাটিতে যেকোন উপায়েই হোক, তাদের হারাতে চাই আমরা। যদি তা না পারি, তাহলে দেশবাসী যে আমাদের প্রচ- সমালোচনা করবে, তা ভালমতোই জানি।’ সেটপিস থেকে গোল খাওয়া নিয়ে ক্র্ইুফ জবাব না দিলেও সোহেল বলেন, ‘সিরিয়া-উজবেকিস্তান উভয় দলই সেটপিসে খুবই দক্ষ। তবে ভারত এ ব্যাপারে দক্ষ নয়। কাজেই আশা করি, তারা আমাদের বিরুদ্ধে সেটপিস থেকে গোল করতে পারবে না।’ ভারতের কোচ সাভিও পি মেদেইরা বলেন, ‘গত দুই ম্যাচে আমরা হেরেছি, সিরিয়া, উজবেকিস্তান) এ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় চাই। বাংলাদেশ দলটি অত্যন্ত পরিণত। ওদের দলে বেশকিছু ভাল খেলোয়াড় রয়েছে। তবে আমরা জয়ের বিকল্প অন্য কিছু ভাবছি না।’
×