ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন মিচেল স্টার্ক

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৩১ মার্চ ২০১৫

ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন মিচেল স্টার্ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা দেড় মাসে মোট ৯ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ। এমনটা হতে পারে শুধু বিশ্বকাপের মতো একটি বড় আসরেই। আর সে কারণেই অন্যরকম এক মর্যাদার মঞ্চ বিশ্বকাপ। ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকতা রেখে ভাল করাটা সহজ কাজ নয়। কিন্তু সেই কাজটা দারুণভাবে করেছেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিচেল স্টার্ক। ৮ ম্যাচ খেলে সর্বাধিক ২২ উইকেট নিয়ে হয়েছেন বিশ্বসেরা। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন তিনি এক নম্বরে উঠে এসেছেন। বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতির সঙ্গে বড় একটা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী স্টার্ক মনে করছেন বিশ্বকাপটা তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য সত্যিকারের একটা ভাল শিক্ষণীয় টুর্নামেন্ট। আর এ শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে ওয়ানডেতে আরও ভাল করতে চান তিনি। শুধু গতিটাই সঙ্গী নয় স্টার্কের। মাত্র ২৫ বছর বয়সী এ বাঁহাতি পেসারের মূল শক্তি গতির সঙ্গে দারুণ সুইং করানোর ক্ষমতা। আর সেই গতি আর সুইং দিয়েই প্রতিপক্ষ শিবিরের জন্য আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপে। ৮ ম্যাচে ২২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি মাত্র ১০.১৮ গড়ে। রান দেয়ার ক্ষেত্রে ছিলেন দারুণ মিতব্যয়ী। যত রান দিয়েছেন এ ৮ ম্যাচে তার রেট ছিল ওভারপ্রতি মাত্র ৩.৫০। এমন অভূতপূর্ব নৈপুণ্য দেখানোর কারণে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পর আরেকটি বড় স্থান দখল করেছেন তিনি। প্রথমবারের মতো আইসিসি ওয়ানডে বোলিংয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে এসে হয়েছেন বিশ্বসেরা বোলার। ৭৮৩ রেটিং নিয়ে তিনি এখন শীর্ষে। অনেক পিছিয়ে থেকে ৭৩৪ রেটিং নিয়ে দুই নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার ইমরান তাহির। আর বিশ্বকাপ খেলতে না পারায় পাকিস্তানী স্পিনার সাঈদ আজমল ৭১৮ রেটিং নিয়ে নেমে গেছেন তিনে। স্টার্ক বিশ্বকাপে যেভাবে বোলিং করেছেন সেটা সবাইকেই মুগ্ধ করেছে। অসি পেসার শন টেইট দারুণ প্রশংসা করেন পেসার স্টার্কের। তিনি লিখেছেন, ‘তুমি অপূর্ব!!’ শ্রীলঙ্কার সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার রাসেল আর্নল্ড লিখেছেন, ‘সেরা পর্যায়ের মঞ্চে স্টার্ক সেরাটা দেখিয়েছেন সেরার বিরুদ্ধে। বিশাল!!’ স্টার্কের দারুণ বোলিংয়ে মুগ্ধ কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন লিখেন, ‘বুমমম!! ওহ, কি দারুণ সূচনা অস্ট্রেলিয়ার জন্য। দারুণ দেখালে স্টার্ক সাহেব, একেবারেই দুর্দান্ত...।’ সাবেক অসি স্পিনার জেসন গিলেস্পি লিখেছেন, ‘এই বিশ্বকাপ আমাদের যেটা পরিষ্কারভাবে শেখাল, তা হচ্ছে দ্রুতগতির, পূর্ণ লেন্থের সরাসরি করা ইয়র্কারই সবচেয়ে ভাল বল।’ দলের বোলিং কোচ আরেক সাবেক পেসার ক্রেইগ ম্যাকডারমটও দারুণ মুগ্ধ স্টার্কের বোলিংয়ে। তিনি বলেন, ‘স্টার্ক নতুন বলে দারুণ সুইং করাতে সক্ষম এবং দুর্দান্ত গতির কারণে প্রতিপক্ষের দুশ্চিন্তা হয়ে ওঠেন।’ যাঁরা ক্রিকেট মাঠে আসেন খেলা দেখতে তাঁরা বেশি পছন্দ করেন চার-ছক্কা দেখতে। কিন্তু স্টার্ক যেন সবার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ছিলেন। মিতব্যয়ী বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করেছেন বারবার। ওয়ানডের বর্তমান নিয়ম অনুসারে বোলারদের জন্য উইকেটে দীর্ঘক্ষণ টিকে যাওয়া ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে বোলিং করাটা বেশ দুঃসাধ্য কাজ। কিন্তু তা করে দেখিয়েছেন এবার স্টার্ক। বিশ্বকাপে বড় দলগুলো অধিকাংশ ম্যাচেই রানের পাহাড় গড়েছে। এর মধ্যে ওভারপ্রতি এত কম রান দিয়ে সবারই নজর কেড়েছেন স্টার্ক। তবে এখনও অনেক দূর যেতে হবে। দীর্ঘ ক্যারিয়ার পড়ে আছে সামনে। ২০১০ সালে অভিষেক হওয়ার পর খুব বেশি নিয়মিত হতে শুরু করেছেন গত এক বছর ধরে। মাত্র ৪১ ওয়ানডে খেলেছেন। মোট শিকার ৮৩ উইকেট ১৮.৩৩ গড়ে। অর্থাৎ বিশ্বকাপের আগে ৩৩ ওয়ানডেতে ৬১ উইকেট ছিল তাঁর দখলে। কিন্তু ভবিষ্যতে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য ভাল অনুপ্রেরণা পেয়ে গেছেন এবার বিশ্বকাপেই। বুঝে গেছেন কোন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কিভাবে বোলিং করতে হবে। ভবিষ্যত ক্যারিয়ারটা সেভাবেই সাজাবেন এখন তিনি।
×