ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে ফের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে রাজউক

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৩১ মার্চ ২০১৫

রাজধানীতে ফের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে রাজউক

মশিউর রহমান খান ॥ অনুমতি না নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক ভবন বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব ভবনের বিরুদ্ধে এবার উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজধানীর মতিঝিল, বনানী, গুলশান, ধানম-ি, উত্তরাসহ সকল আবাসিক এলাকাকে বাণিজ্যিকীকরণের হাত থেকে বাঁচাতে ও আবাসিক এলাকার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজউক এ বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। রাজউকের আটটি জোনে পর্যায়ক্রমে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া রাজউকের নক্সাবহির্ভূত বা নক্সার বাইরে নিয়ম ভঙ্গ করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহ থেকে এ অভিযান পরিচালনা করছে রাজউক। বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্টের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করছে। উচ্ছেদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রবিবার রাজধানীর উত্তরার হাউজবিল্ডিং এলাকার সোনারগাঁ জনপথ রুটের ১১ প্লটের ১৬ স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজউক। সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এলাকার ব্র্যাক ব্যাংক ভবনসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রুকনউদ্দৌলার নেতৃত্বে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। রাজউকের এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে বাধা প্রদান করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এরপর বেলা দুটোয় দক্ষিণখান থানার ফায়দাবাদ এলাকার একটি বাড়ি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান নক্সা না মেনে নিয়মবহির্ভূতভাবে তৈরি অবৈধ অংশ রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেঙ্গে ফেলে। ভবনটির অবৈধ বাকি অংশ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে ভাঙ্গা হবে বলে স্ট্যাম্পে উক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে লিখিত অঙ্গীকারনামা প্রদান করলে রাজউক কর্মকর্তারা ফিরে আসেন। এর আগে মতিঝিলের রূপালী ব্যাংক এলাকার আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নক্সায় নিয়ম অনুযায়ী গাড়ি পার্কিংয়ের কথা উল্লেখ থাকলেও তা না মেনে পার্কিং স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় ষোলোটি প্রতিষ্ঠানের নিচতলা ভেঙ্গে দেয় রাজউক। এতে কয়েক কোটি টাকার স্থাপনা নষ্ট হয়। গত শনিবার রাজধানীর গুলশানের নিকেতন ১নং গেট সংলগ্ন একটি পুকুর রাজউকের অনুমতি না নিয়ে রাতারাতি মাটি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করার অপরাধে রফিক চিশতি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে গুলশান থানায় সোপর্দ করা হয়। এছাড়া একই দিনে গুলশানের ২ নম্বর গোল চক্করের পাশে আবাসিক অনুমতি নিয়ে তৈরি ভবনে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করে রাজউক বিধি লঙ্ঘন করার অপরাধে দেশের নামকরা ১১ প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজউকের এ অভিযানে সাধারণ নাগরিকরাও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার কিছু কিছু স্থানে রাজউকের এ টিমকে উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়নের রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে রাজউক তার এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। রাজউক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোঃ মোশাররফ হোসেনের এ উচ্ছেদ অভিযানে সম্মতি রয়েছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান, বনানী ও ধানম-ির কয়েকটি বাড়িতে আবাসিক অনুমতি নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বাণিজ্যিকভিত্তিতে হোটেল ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ আসে। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে রাজউক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়।
×