ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক ডামাডোলে ইয়াবা পাচারের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৩০ মার্চ ২০১৫

রাজনৈতিক ডামাডোলে ইয়াবা পাচারের হিড়িক

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে হরতাল ও অবরোধেও ইয়াবা পাচারকারীরা থেমে নেই। রাজনৈতিক ডামাডোলে ইয়াবা পাচার চলছে জোরেশোরে। দেশের নাজুক পরিস্থিতিকে টার্গেট করেই ইয়াবা কারবারিরা কাজ করছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চাঙ্গা রাখতে জামায়াত-বিএনপি ককটেল আর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের মধ্যে রয়েছে। ফলে র‌্যাব ও পুলিশের নজরদারি রয়েছে ওই দুটি দলের ক্যাডারদের ওপর। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কারবারিরা। তবে তল্লাশি অভিযানের কারণেই ইয়াবার চালান ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা। র‌্যাব সেভেন সূত্রে জানা গেছে, র‌্যাবের চান্দগাঁও ক্যাম্পের কাছে তথ্য ছিল, পাঁচলাইশ থানা এলাকার পশ্চিমপাড়ার জসিম উদ্দিনের বাড়িতে মাদকদ্রব্য ক্রয় বিক্রি চলছে। তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ মার্চ ৩ হাজার ৬০০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ জসিম উদ্দিন নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। আটককৃত জসিম বিবিরহাট এলাকার মৃত রহম আলীর ছেলে। জসিমের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত এসব ইয়াবার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এদিকে গত ১২ মার্চ পাহাড়তলী থানার অলঙ্কার মোড় এলাকায় থাকা ফুলকলি রেস্টুরেন্টের পাশে অভিযান চালায় র‌্যাব সেভেনের সদস্যরা। হারুন-অর-রশীদের কাছ থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এসব ইয়াবার বাজারমূল্য প্রায় চার লাখ টাকা। র‌্যাব সেভেনের কক্সবাজার ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, চন্দনাইশ উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের দোহাজারীর হাজারী টাওয়ার এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব। গত ৬ মার্চ রাত সাড়ে বারোটার দিকে ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে চারজনকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলোÑ দোহাজারী স্টেশন রোড এলাকার মৃত বাঁচা মিয়ার ছেলে আন্নর আলী, সৈয়দ হোসেনের ছেলে মোঃ হাকিম হোসেন, মৃত কবির আহম্মদের ছেলে মোঃ সৈয়দ আলম ও করিম উল্লাহর ছেলে মোঃ রহিম। এ সময় আটককৃত আন্নর আলীর দেহ তল্লাশি করে পাঁচটি প্যাকেটে মোট পাঁচ হাজার ইয়াবা, হাকিম হোসেনের কাছ থেকে দুটি প্যাকেটে দুই হাজার, সৈয়দ আলমের দেহ থেকে দুটি প্যাকেটে দুই হাজার ও রহিমের দেহ থেকেও দুই হাজার ইয়াবাসহ মোট ১১ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ইয়াবার বাজারমূল্য প্রায় ৪৪ লাখ টাকা। অপরদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব সেভেনের চান্দগাঁও ক্যাম্প চাঁনমিয়া আবাসিক এলাকার হোল্ডিংনং ১৮৬/ই/২৮৬ চৌধুরী ম্যানশনে অভিযান চালায়। ভবনের পঞ্চম তলায় থাকা হোসেন আহম্মদের ছেলে নুর হাকিমকে আটক করা হয়। ভাড়া বাসায় থেকেই সে ইয়াবার কারবার পরিচালনা করে আসছিল। রাজশাহীর চারঘাট থানার বালুদিয়া এলাকায় তার গ্রামের বাড়ি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৬২ পিস ইয়াবা। এছাড়াও ইয়াবা বিক্রির নগদ ২২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে উদ্ধারকৃত ইয়াবার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে র‌্যাব সেভেনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের কড়া নজরদারি রয়েছে। যে কোন স্থােেন তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশি ছাড়াও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চলছে। গত এক মাসে ছোট-বড় অভিযানে প্রায় কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াবা ব্যবসার অন্তরালে থাকাদের বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
×