ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌদি সীমান্তের দিকে হুতিরা

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ৩০ মার্চ ২০১৫

সৌদি সীমান্তের দিকে হুতিরা

আরব নেতারা ইয়েমেনের সঙ্কটাপন্ন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর হাদির প্রতি সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা জোরদার করেছে। আর হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে সংঘাতের মাত্রা এতই বেড়ে গেছে যে, ইয়েমেনে এক স্থল আক্রমণ শুরু হতে পারে বলে অনেক বাসিন্দা আশঙ্কা করছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও আল জাজিরা অনলাইনের। সৌদি বিমান হামলা সত্ত্বেও হুতিরা এগিয়ে চলেছে এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় এডেন শহরে ট্যাঙ্কের সাহায্যে গোলাবর্ষণ করেছে। বেশকিছু সংখ্যক কূটনেতিক এরই মধ্যে এডেন ত্যাগদ করেছেন। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হাদি গত সপ্তাহে এডেন থেকে পালিয়ে গিয়ে সৌদি আরবে আশ্রয় নেন। হুতিরা ক্রমশ দেশটির ভূখ- দখল করার প্রেক্ষাপটে তিনি ক্ষমতায় থাকতে কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালান। সৌদিরা ও তাদের মিত্ররা মনে করছে, ইরান শিয়া বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছে এবং ইয়েমেনের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। ইয়েমেন রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মিত্র ছিল। শনিবার আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা হাদির প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেন। মিসরের অবকাশ কেন্দ্র শার্ম আল শেখে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য দেশের মধ্যে মিসর, বাহরাইন, কাতার ও সৌদি আরবের নেতারা ইয়েমেনের অরাজকতা দেখা দেয়ার ঘটনাকে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের প্রতি এক ভয়াবহ হুমকি বলে অভিহিত করেন। কর্মকর্তারা ঐ অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান সঙ্কট মোকাবেলা করতে এক যৌথ আরব সামরিক বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে এক খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছেন। কোন সম্ভাব্য নিরাপত্তা বাহিনীর বিস্তারিত দিক অস্পষ্ট রয়ে গেছে। কিন্তু লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে লড়াই চলার মধ্যে হুতিবিরোধী অভিযানের প্রতি আরবদের সমর্থন থেকে সহিংসতা কবলিত প্রতিবেশী দেশগুলোতে হস্তক্ষেপ করতে ঐ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর প্রস্তুতিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সৌদি আরবের বাদশাহ প্রতিনিধিদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ইয়েমেনে স্থিতিশীলতা না ফেরা পর্যন্ত সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সঙ্কল্প ব্যক্ত করেন। তিনি হাদির কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধারের প্রতিই ইঙ্গিত করছিলেন। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট হুতি বিদ্রোহীদের দখল করা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং হুতিদের প্রধান মিত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহের অনুগত সেনা ইউনিটগুলোর বিভিন্ন ঘাঁটির ওপর নতুন করে বিমান হামলা চালায়। রবিবার ভোর রাতে চালানো ঐসব হামলায় রাজধানী সানা শহরের ফাজ আত্তান এলাকার এক অস্ত্রাগার ও বিশেষ বাহিনীর সদর দফতরের ওপর আঘাত আনা হয়। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি এক সামরিক বিমান ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়। রাজধানীর বাইরে আসর পার্বত্য এলাকায় এক অস্ত্রাগার ঐ হামলায় ধ্বংস হয়। এতে বিমান, বিমানবন্দর অবকাঠামো ও রানওয়েরও ক্ষতি হয়। হুতি যোদ্ধারা শনিবার হুমকি দিয়েছে যে, যদি সৌদিরা দলটির অবস্থানগুলোর ওপর বিমান হামলা চালিয়ে যায়, তাহলে সৌদি আরবের আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হবে। আরব জোটের মুখপাত্র সৌদি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমদ আসিরি বলেন, হুতি যোদ্ধারা সৌদি সীমান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আসিরি বলেন, সৌদি বাহিনী হুতিদের জিজান ও নাজরানের কাছে সমবেত হওয়া থেকে নিবৃত্ত রাখতে কামান ও এ্যাপাচে হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে। হাদি আরব লীগ সম্মেলনে বলেন, বিদ্রোহী দলটি আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত বিমান হামলা বন্ধ করা হবে না। কিন্তু হুতি নির্বাহী কমিটির এক সিনিয়র সদস্য আবদেল মোনেম আল কুরেশি বলেন, দলটি সৌদি সরকারকে এর আগ্রাসী নীতির জন্য ধ্বংস করবে।
×