ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্টার্ক-বোল্টের গতি লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৯ মার্চ ২০১৫

স্টার্ক-বোল্টের গতি লড়াই

মিথুন আশরাফ ॥ ভেন্যু-নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের ইডেন পার্ক। তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব। মুখোমুখি দুই স্বাগতিক দল, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড। ম্যাচটি জিতে নিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দুই পেসার মিচেল স্টার্ক কিংবা ট্রেন্ট বোল্ট, সেদিন বোলিংয়ে কেউই হারেননি। এবার ভেন্যু-অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। তারিখ ২৯ মার্চ, ২০১৫। আজ আরেকটি দিন। মুখোমুখি আবার সেই দুই স্বাগতিক দল। এবার ম্যাচটি একাদশ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। কোন দল জিতে শিরোপা নিজেদের করে নেবে? এ প্রশ্নের চেয়ে যেন সবচেয়ে বেশি ভাবনা কাজ করছে স্টার্ক আর বোল্টে’র গতির ঝড় দেখাতেই। এ দুই পেসারের যুদ্ধে শেষপর্যন্ত জিতবে কে? সেটিই যেন সবাই দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আজ সেই দিন। যেখানে স্টার্ক না বোল্ট শেষপর্যন্ত জিতলেন, তার উত্তর মিলে যাবে। মনে আছে বিশ্বকাপের সেই উত্তেজনাকর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি। যা এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ হয়ে আছে। সেই উত্তাপ প্রায় এক মাস আগে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে দেখা গেছে। উত্তাপ তৈরি করে দিয়েছিলেন বোল্ট ও স্টার্কই। এবার বিশ্বকাপ ব্যাটসম্যানদের ধরা হচ্ছে। অথচ সেই ২৮ ফেব্রুয়ারি বোলাররাই শুধু চমক দেখালেন। প্রথমে অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করল। বোল্টের (৫/২৭) তোপে ১৫১ রানেই অলআউট হয়ে গেল। এ রান তোলা কোন বিষয় হলো। তাও আবার খেলা হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। কিন্তু স্টার্ক এমন বোলিংই করলেন মাত্র ২৮ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নিলেন। ১৪৬ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে বসল নিউজিল্যান্ড। কী প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হলো! সেই ম্যাচে আবার বোল্ট ম্যাচসেরাও হলেন। তবে স্টার্ক যে দুর্দান্ত বল করে ম্যাচকে একপেশে হতে দেননি, এমনকি নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই দিচ্ছিলেন; এ জন্য প্রশংসা কুড়ালেন। এ বিশ্বকাপে সেই ম্যাচটি সেরা ম্যাচ হিসেবেও প্রাধান্য পেল। তবে এবার এ দুই পেসারের সেরা হওয়ার দিন আজ। শুধু যে ম্যাচ জেতানোর ক্ষেত্রেই সেরা হওয়ার দৌড় চলবে এমন নয়। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেয়ার দিক দিয়েও দুইজনের মধ্যে চলবে যুদ্ধ। এখন বিশ্বকাপে দুইজনের অবস্থান একেবারে পিঠাপিঠি। বোল্ট ৮ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন। ৭ ম্যাচে ১ উইকেট কম নিয়ে ২০ উইকেট নিয়ে পরের অবস্থানেই আছেন স্টার্ক। একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলেনি স্টার্কের। সেটি বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায়। না হলে হয়ত এখন স্টার্কই উইকেটশিকারিদের মধ্যে সেরা অবস্থানেই থাকতেন। তবে খুব বেশি পিছিয়ে নন স্টার্ক। একটি উইকেট পেছনে আছেন। আজ বোল্টের চেয়েও বেশি জ্বলে উঠতে পারলে স্টার্কই এবার বিশ্বকাপের সেরা বোলার হতে পারেন। দুইজনই বামহাতি পেসার। দুইজনই লম্বা পেসারও। তবে বোল্টের একটু বেশিই লম্বা স্টার্ক। তবে এসব বিষয় নিয়ে কারও মাথা ব্যথাই নেই। সবার দৃষ্টি বোল্ট-স্টার্ক যুদ্ধ এবার কতটা জমে তার দিকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি যে দুই পেসার ম্যাচে আলাদা আবহ তৈরি করে দিয়েছেন, আজ প্রায় এক মাস পর আবার দুই পেসার মুখোমুখি হচ্ছেন। আজও নিশ্চয়ই তেমন কিছুরই দেখা মিলবে। শেষ বেলায় এসে ব্যাটসম্যানদের ভোগাতে পারলে, বিশ্বকাপ যে শুধু ব্যাটসম্যানদের দখলে ছিল; তা অন্তত খানিক ধামাচাপ পড়বে। পারবেন স্টার্ক ও বোল্ট এবারও ম্যাচকে জমিয়ে তুলতে? বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড যে খেলেছে সেই ম্যাচেই প্রথম স্টার্ক-বোল্ট মুখোমুখি হয়েছেন। এর আগে কখনওই এ দুইজন মুখোমুখি হননি। আজ বিশ্বকাপের ফাইনালে আবার দুইজন মুখোমুখি। এ দুইজনের কাছ থেকে কে কি চান, সেদিকে মনোযোগ নেই নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের। তার চাওয়া একটাই, ‘ম্যাচটাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলো। যেন ক্রিকেট পিপাসুরা আবার অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দেখে তা মনে রাখে। ঠিক যেমনটি গ্রুপ পর্বে হয়েছিল।’ সঙ্গে এও জানিয়ে দিলেন, ‘স্টার্ক ও বোল্ট এখন ফাইনাল ম্যাচের বিজ্ঞাপনও।’
×