ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

বর্ণিল আয়োজনে বিশ্ব নাট্যদিবস পালন সম্মাননা পেলেন আসাদুজ্জামান নূর

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৮ মার্চ ২০১৫

বর্ণিল আয়োজনে বিশ্ব নাট্যদিবস পালন সম্মাননা পেলেন আসাদুজ্জামান নূর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুক্রবার ছিল বিশ্ব নাট্যদিবস। ১৯৮২ সাল থেকে মঞ্চশিল্পীরা এ দিনটি উদ্যাপন করে আসছেন। বরাবরের মতো এবারও বর্ণিল আয়োজনে মঞ্চশিল্পীরা উদ্্যাপন করলেন বিশ্ব নাট্যদিবস। সন্ধ্যায় শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালায় আায়োজিত অনুষ্ঠানে বিশ্ব নাট্যদিবস সম্মাননা প্রদান করা হয় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে। সম্মিলিতভাবে দিবসটি উদ্্যাপনের আয়োজন করে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আর দিনটিকে সামনে রেখে বাণী দিয়েছেন প্রখ্যাত ইউরোপীয় পরিচালক ক্রিস্তফ্ ওয়ারলিকাস্কি। রং-বেরংয়ের প্লাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে নাট্যকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বিকেলে বের করা হয় বিশ্ব নাট্যদিবসের শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির অভিজিত রায় হত্যার স্থান থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয় শিল্পকলা একাডেমিতে। শোভাযাত্রা শেষে সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে বিশ্ব নাট্যদিবসের স্মারক বক্তৃতা করেন বরেণ্য অভিনয়শিল্পী ফেরদৌসী মজুমদার। আর বিশ্ব নাট্যদিবসের বাণী পাঠ করেন মোহাম্মদ বারী। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকী। প্রধান অতিথি ছিলেন আইটিআইয়ের সাম্মানিত সভাপতি রামেন্দু মজুমদার। এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেনÑ আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল আকতারুজ্জামান, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মীনু হক ও দেবপ্রসাদ নাথ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কৃষ্টি হেফাজ। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব নাট্যদিবস আয়োজনের সমাপ্তি হয়। সঙ্গীত পরিবেশন করে কুষ্টিয়ার বাউল দল সব শেষে ছিল প্রীতি আপ্যায়ন। মুক্তিযুদ্ধের আবৃত্তি উৎসব শেকল ভাঙার পদ্য ॥ পাকবাহিনীর শাসন-শোষণকে জয় করে বাঙালীর শেকল ভাঙার মাস অগ্নিঝরা মার্চ মাস। আর স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে মিশে থাকা এ মাসটিকে শুক্রবার উদযাপন করলো আবৃত্তি সংগঠন বাকশিল্পাঙ্গন। ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো মুক্তিযুদ্ধের আবৃত্তি উৎসব ‘শেকল ভাঙার পদ্য’। এবারের উৎসবে সম্মাননা জানানো হয় স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের সম্বলহীন বীরাঙ্গণাদের জীবন সুরক্ষায় নিবেদিত মুক্তিযোদ্ধা সাফিনা লোহানিকে। উৎসব শুরু হয় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে। চৈত্রের বিকেলে উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সাফিনা লোহানির জীবনের ওপর আলোকপাত করেন বাকশিল্পী ও জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতি নাসিরউদ্দিন। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে একটি রক্ত¯œাত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে। আজ যারা গণতন্ত্রের নামে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে মানবতাবিরোধী, সমাজবিরোধী কাজ করছে, জনগণকে পুড়িয়ে মারছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাহলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। সম্মাননাপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে সাফিনা লোহানি বলেন, বীরাঙ্গনা মায়েদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক লাঞ্চনা বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে। তবু পিছিয়ে যাইনি। তিনি বলেন, বীরাঙ্গণারা যাতে মুক্তিযোদ্ধার সম্মান পায় এটুকু দেখার আশায় বুক বেঁধে আছি। সম্মাননা প্রদান ও উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে মুখরিত হয়ে ওঠে জল-হাওয়া ও নিসর্গে আবৃত সরোবর মঞ্চটি। খ্যাতিমান ও প্রতিশ্রুতিশীল আবৃত্তিশিল্পীদের একক আবৃত্তির সঙ্গে ছিল দলীয় আবৃত্তি। শুধুই কবিতার ঝঙ্কার। শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় দলীয় আবৃত্তি ‘নোঙর তোলো তোলো’। তারপর ছিল দলীয় ও একক আবৃত্তি। দলীয় আবৃত্তিতে পরিবেশিত হয় প্রযোজনা ‘ধইরে দিবানে’, ‘হাড়েরও ঘরখানি’, ‘শেষবার চাই আজ মুক্তি’, ‘মানুষ জাগবে ফের’, ‘বারবার ফিরে আসে’। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেনÑ বাকশিল্পী ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, লায়লা আফরোজ, শিমুল মুস্তাফা, হাসান আরিফ, বেলায়েত হোসেন, আহ্্কাম উল্লাহ্্্, মাহিদুল ইসলাম, ইকবাল খোরশোদ, রেজিনা ওয়ালি লীনা, ফয়জুল আলম পাপ্পু, রাসেদ হাসান, মোকাদ্দেস বাবুল, পারভেজ চৌধুরী, নাসিরউদ্দিন ও ডলি দাস। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, স্রোত আবৃত্তি সংসদ, শ্রুতিঘর, স্বরব্যঞ্জন এবং বাকশিল্পাঙ্গন। স্বাধীনতা দিবসের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ॥ মহান স্বাধীনতা উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রামাণ্যচিত্র পর্ষদ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ৪টি প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের বিপরীতে ছবির হাট সংলগ্ন বটতলায় একটি উন্মুক্ত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রদর্শিত প্রামাণ্যচিত্রগুলো হলোÑ মুশতাক আহমেদ নির্মিত ‘ডাই মিলিয়ন ’৭১’, মৃদুল মামুনের ‘সবাই একজাত’, ফৌজিয়া খানের ‘কোথায় পাবো তারে’ ও এস. সুখদেভের ছবি ‘নাইন মান্থস টু ফ্রিডম’।
×