ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শিল্পকলায় বর্ণাঢ্য আয়োজন

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৬ মার্চ ২০১৫

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শিল্পকলায় বর্ণাঢ্য আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৫ উদ্যাপন উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির নন্দনমঞ্চে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুই দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বুধবার সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর্যশিল্পী ফেরদৌসী প্রিয়ভাসিনী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার এবং শহীদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দীন হোসেনের সন্তান তৌহিদ রেজা নূর। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। আলোচনানুষ্ঠানের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ‘মরণ সাগর পারে তোমরা অমর তোমাদের স্মরি’ দলীয় গানের সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ’ শিরোনামের দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা। এর পর ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে ভাবনানৃত্য সংগঠনের শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ঢাকা সাংস্কৃতিক দল ও একাডেমির বাঁশি প্রশিক্ষণার্থীরা। সমবেত নৃত্যে অংশগ্রহণ করে সুকন্যা সাংস্কৃতিক সংগঠন ও কস্তুরী মুখার্জী ও তার দল। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী রিংকু, আলম দেওয়ান ও আইরিন পারভীন মুন্না। আবৃত্তিতে অংশ নেন শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মাহিদুল ইসলাম ও ঝর্ণা সরকার। ‘সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা’ গানটির সঙ্গে কস্তুরী মুখার্জী ও তার দলের দলীয় নৃত্য পরিবেশনের মধ্যদিয়ে প্রথম দিনে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় অনুষ্ঠিত হবে শেষদিনের আয়োজন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে ভয়াল কালরাত্রি স্মরণানুষ্ঠান ॥ ‘সন্ত্রাস, নাশকতা রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ সেøাগানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও রবীন্দ্র সরোবরে তিন দিনব্যাপী স্বাধীনতা উৎসবের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এ উৎসবের অংশ হিসেবে ভয়াল কালরাত্রি স্মরণে বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজারবাগ স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আলোচনা, প্রদীপ প্রজ্বলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইজিপি শহীদুল হক, জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ প্রমুখ। রাত ১২ টা ১ মিনিটে প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুধবার বিকেল থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না ও মলয় কুমার গাঙ্গুলী। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে প্রকাশ ও শ্রুতিঘরের আবৃত্তি শিল্পীরা। আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে উদীচীর গণসঙ্গীত উৎসব ও প্রতিযোগিতা ॥ ‘পথে পথে মিছিলের প্রতিরোধ, জনতার ঐক্যকে গড়েছি’ সেøাগানে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব ও জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতা ২০১৫’। শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে ষষ্ঠবারের মতো দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে গণসঙ্গীতকে ছড়িয়ে দেয়া, এর প্রচার, প্রসার এবং গণসঙ্গীতকে সঙ্গীতের একটি স্বতন্ত্র ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সত্যেন সেনের জন্মদিবস উপলক্ষে সংগঠনটি প্রতিবছর এই উৎসবের আয়োজন করে। এ উপলক্ষে উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার, অমির রঞ্জন দে, সহসাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন ও অমিত রঞ্জন দে প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎসব প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি শংকর সাঁওজাল। এতে তিনি জানান, বিকেল ৪টায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত গবেষক ও শিল্পী স্বপন কুমার হালদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ভারতের গণসঙ্গীত শিল্পী শুভ প্রসাদ নন্দী মজুমদার। অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিকদের সম্মাননা প্রদান করা হবে। তিনি আরও জানান, উৎসবের শেষদিন ২৮ মার্চ বিকেল ৪টায় জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের সম্মাননা ও সনদ প্রদান করা হবে। এছাড়া, প্রতিদিন আমন্ত্রিত শিল্পী, প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিল্পী এবং প্রতিষ্ঠিত গণসঙ্গীত শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা থাকবে। তিনি বলেন, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষকনেতা, শিল্পী-সংগ্রামী ও উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের জন্মদিন ২৮ মার্চ। দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ক্রমবর্ধমান নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞ, চোরাগুপ্তা হামলা ও হত্যা, মারামারি, ক্ষমতা দখল আর ক্ষমতায় টিকে থাকার হীন কার্যকলাপ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার নানামুখী ষড়যন্ত্র, হত্যাকা-, ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনার মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এবারের গণসঙ্গীত উৎসবটি অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে লিখিত বক্তব্যে তিনি তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতায় নতুন নতুন গান, তরুণদের উৎসাহী অংশগ্রহণ আশাব্যঞ্জক। এবারে অনূর্ধ ১২ বছর, ১২ থেকে ১৮ বছর ও ১৮ বছরের বেশি বয়সী প্রতিযোগীদের তিনটি পৃথক বিভাগে বিভক্ত করে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিযোগিতা। রয়েছে দলীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতা। এরই মধ্যে জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শেষে আটটি বিভাগীয় পর্যায়ের (ঢাকা পূর্ব ও পশ্চিমসহ) প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে। উদীচীর তিন শতাধিক শাখার শিল্পীবৃন্দসহ সংগঠনের বাইরে থেকেও অনেক প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। ২৭ মার্চ সকাল ১০ টায় শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
×