ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৩ ভাগ সেচের পানির অপচয় রোধ হবে ॥ আজ একনেকে উঠছে

কৃষিতে পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির প্রয়োগ শুরু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৪ মার্চ ২০১৫

কৃষিতে পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির প্রয়োগ শুরু হচ্ছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ পানি সাশ্রয়ী আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ শুরু হচ্ছে ৪০ জেলায়। এর আগে স্বল্প পরিসরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রথমবারে মতো এ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। এর মাধ্যমে অল্টারনেটিভ ওয়েটিং এ্যান্ড ড্রাইং (এডব্লিউডি), রাইসড বেড (আরবি) এবং সিস্টেম অব রাইস ইনটেনসিফিকেশন (এসআরআই) শীর্ষক প্রযুক্তি ব্যবহার, সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ধানের ফলন বৃদ্ধি করা হবে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি ২ লাখ টাকা। এটি বাস্তবায়নের ফলে সেচযোগ্য জমিতে পানির সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে ৩০ শতাংশ সেচের পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত প্রকল্পটি। অনুমোদন পেলে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) বগুড়া। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় একনেক বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য এ এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিয়ে জানান, প্রকল্পটি প্রায়োগিত গবেষণাধর্মী। তাই এটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও সেচের পানির দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ধান ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এজন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য। প্রকল্পটি যেসব জেলায় বাস্তবায়িত হবেÑপঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ,পাবনা, নাটোর, গাজীপুর, ঢাকা, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বাগেরহাট, খুলনা,সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া জেলা, চাঁদপুর, কুমিল্লা,বরিশাল, মৌলভীবাজার ও সিলেট। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ সূত্র জানায়, বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য চাল। মোট কৃষিজমির শতকরা ৭৫ ভাগ ধান উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। ধানচাষ প্রধানত সেচনির্ভর এবং বর্তমানে জমিতে যেভাবে সেচ প্রদান করা হচ্ছে তাতে ১ কেজি ধান উৎপাদনে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। ভূগর্ভের পানির তুলনায় ভূউপরিভাগের পানিই সেচের জন্য অধিক উপযোগী। কিন্তু দেশের ৭৫ ভাগ সেচ কার্যক্রম ভূগর্ভের পানির ওপর নির্ভরশীল। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে আর্সেনিকের সংমিশ্রণসহ মাটির গুণগত মান (জৈব উপাদান ও পুষ্টিমান) নষ্ট হচ্ছে। তাই সেচ কাজে ভূগর্ভের পানির ব্যবহার কমানো, মাটির গুণাগুণ রক্ষা এবং উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে ফলন বাড়ানো জরুরী। তাই সেচকাজে পানিসাশ্রয়ী আধুনিক উন্নত কৃষি প্রযুক্তি যেমন, অল্টারনেটিভ ওয়েটিং এ্যান্ড ড্রাইং (এডব্লিউডি),রাইসড বেড (আরবি) এবং সিস্টেম অব রাইস ইনটেনসিফিকেশন (এসআরআই) শীর্ষক প্রযুক্তি ব্যবহার, সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ধানের ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
×