ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তরুণ ক্রিকেটাররা

লক্ষ্য এবার ২০১৯ বিশ্বকাপ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৩ মার্চ ২০১৫

লক্ষ্য এবার ২০১৯ বিশ্বকাপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলে প্রথমবারেই বাজিমাত। বাংলাদেশ যে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়ল, সেই ইতিহাসের সাক্ষী হলেন প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলা বাংলাদেশের তরুণরা। তাদের সামনে এখন অবারিত ভবিষ্যত। অনেক সিরিজ, টুর্নামেন্ট। তবে চার বছর পর যে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ হবে তা নিয়ে যেন এখনই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন দলের তরুণ ক্রিকেটাররা। রবিবার দেশে ফিরেছেন। এর আগেই জানিয়ে দিয়েছেন ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ নিয়ে তাদের স্বপ্নের কথা। স্বপ্ন তাদের একটাই, ‘বিশ্বকাপ জেতার কথা যেন পরের বিশ্বকাপে দেশ ছাড়ার আগে বলে যেতে পারি।’ তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলামের কণ্ঠে এমনই সুর শোনা গেছে। এনামুল হক বিজয়, আরাফাত সানি, নাসির হোসেন, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, মুমিনুল হক, সাব্বির রহমান রুম্মান, আল আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ খেলেছেন প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ। এর মধ্যে বিজয় ইনজুরির জন্য পুরো বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি। আর পেসার আল আমিন হোসেনকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকিরা খেলার সুযোগ পেয়েই দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়েছেন। তাসকিন আর তাইজুলের কাছে প্রশ্ন ছিল, অসাধারণ খেলল বাংলাদেশ, সেমিফাইনালেও উঠে যেতে পারত; আমরা কবে বলতে পারব বিশ্বকাপ জিতব? তাসকিন ও তাইজুল দুইজনই বললেন, ‘আশা করছি পরের বিশ্বকাপেই তা বলতে পারব।’ এবার যে আত্মবিশ্বাস মিলেছে, যেভাবে বাংলাদেশ দল খেলেছে, তা বজায় থাকলে পরের বিশ্বকাপে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ। অবশ্য এর জন্য আগে র‌্যাঙ্কিংয়ের ৮ নম্বরে থাকতে হবে। তা না থাকলেও বিশ্বকাপের আগেই যে বাছাইপর্ব হবে, তা উতরে যেতে হবে। সাব্বির রহমান দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। বিশ্বকাপে তার ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ সবাই। তার স্বপ্নই ছিল খেললে কিছু একটা করা। যেমন বললেন, ‘বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন সেই ছোটবেলা থেকে ছিল। এত বড় আসরে ভাল খেলতে পারব, এ বিশ্বাস ছিল। কিছু একটা করে দেখাতে পারব, এ আত্মবিশ্বাস ছিল। বিগ হিটের জন্য আমাকে অতিরিক্ত কিছু করতে হয়, এই যেমন বাড়তি ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ। প্রতিদিন জিমে এক থেকে দেড় ঘণ্টা কাটিয়ে শারীরিক শক্তি এবং সাহস অর্জন করেছি।’ সৌম্য সরকারত বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে খেলতে হবে বাউন্সি উইকেটে, তা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। তবে এ নিয়ে কোন ধরনের ভয় কাজ করেনি। যেভাবে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি, সেভাবেই খেলতে চেয়েছি। প্রতিটি ইনিংসকেই বড় করার সুযোগ ছিল, পারিনি, আফসোস এখানেই।’ তাসকিন বলেছেন, ‘ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপে পারফর্ম করতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভাল লাগছে। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে পারফর্ম করতে পারলে অনেক পরিচিতি পাওয়া যায়, এ অনুভব করলাম। ৬ ম্যাচে ৯ উইকেট পেয়েছি, যার মধ্যে ইংল্যান্ডের জস বাটলারের উইকেটটির কথা বিশেষভাবে মনে রাখব। কারণ, ওটাই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। রুবেল ভাই, আমি ১৪০ কিলোমিটারের বেশি বল করতে পেরেছি, তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা দলে একসঙ্গে চার পেস বোলার পাব, যাদের সবার গতি থাকবে ১৪০ কিলোমিটারের বেশি। এমনটাই প্রত্যাশা করছি। আমাদের দেশে এখন যেভাবে পেস বোলাররা উঠে আসছে, তাতে এই স্বপ্নই দেখছি। আশা করছি আগামী বিশ্বকাপে শিরোপার টার্গেট নিয়েই আসতে পারব। সে দোয়াই করবেন।’ তাইজুল ইসলাম বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছি। সেই ম্যাচেই নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি সামনে আরও ভাল করব। দলকে ভাল কিছু উপহার দেব।’ নাসির হোসেনও বিশ্বকাপে দলের পারফর্মেন্সে খুশি। বলেছেন, ‘দল যেভাবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে, তাতে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। এখন তা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাই আমরা।’ এভাবে এগিয়ে যেতে পারলে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বলতেই পারবে শিরোপা জিততে চাই। এখন সেই আশাই সবার মনের ভেতর কাজ করছে।
×