ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে তৌফিক ইলাহী

প্রধানমন্ত্রী চান না জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হোক

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২১ মার্চ ২০১৫

প্রধানমন্ত্রী চান না জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হোক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দাতা সংস্থা এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের চাপ রয়েছে। কিন্তু আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিচারে বিদ্যুতের দাম তাদের প্রত্যাশিত মাত্রায় বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। শুক্রবার রাজধানীর বিদ্যুত ভবনে আয়োজিত ‘সেক্টর লিডারদের নিয়ে আয়োজিত ওয়ার্কশপ’ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম এ কথা বলেছেন। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান না জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হোক। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গণশুনানি করেছে। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের সবুজ সংকেত পাচ্ছে না কমিশন। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির শুনানির পর প্রতিবারই সরকারের শীর্ষ মহলকে অবহিত করে থাকে কমিশন। তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, দাতা সংস্থার লোকজন বলে থাকেন, তোমরা বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছ। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে এই টাকা দিয়ে অনেক হাসপাতাল স্থাপন করতে পার। তাদের সেই পরামর্শ আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেলানো যায় না। দাম বাড়ানোর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। কাগজে লিখে সমাধান দেয়া যায় না। তারপরও মানুষ বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখলে বিদ্যুত বাবদ খরচ কম হবে। উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে বিদ্যুতের সুবিধাভোগী বলা হচ্ছে ৬৮ শতাংশ। আমার মনে হয়, এই হিসেব সঠিক নয়। এখন সুবিধাভোগী ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আসছে গ্রীষ্ম মৌসুমে লোডশেডিং প্রসঙ্গে বলেন, আসছে মৌসুমে চাহিদা সাড়ে ৮ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। তবে কিছুটা সমস্যা হলে জনগণকে মেনে নেয়ার অনুরোধ করছি। যদিও এর আগে ২০১৪ সালকে লোডশেডিং ফ্রি বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করতে চেয়েছিল সরকার। পরবর্তী সময়ে বলা হয়, ২০১৫তে বাংলাদেশ লোডশেডিং ফ্রি হবে। দু’দিনব্যাপী সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইংয়ের কর্মকর্তা, অর্থ বিভাগ, রাজস্ব বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দফতর-পরিদফতরের কর্মকর্তারা। দুদিনব্যাপী এই সেমিনারে সেক্টর লিডাররা তাদের অবস্থান তুলে ধরবেন। একইভাবে কিভাবে সেবার মান আরও বৃদ্ধি করা যায়, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করা যায় সেসব দিক নিয়ে আলোচনা হবে। একই সঙ্গে সরকার তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে কি করতে চায় তাও সেক্টর লিডারদের জানানো হবে। বিভাগ আয়োজিত ওয়ার্কশপটির বিষয় ছিল ‘সাসটেইনেবল এনার্জি সিকিউরিটি’। এ প্রসঙ্গে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, নিরাপত্তা শব্দটি আপেক্ষিক বিষয়। পুরোপুরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এখন যাকে নিরাপত্তা বলছি, দশ বছর তা বদলে যেতে পারে। সেক্টর লিডারদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা রাষ্ট্রের বড় বন্ধু। বেস্ট সার্ভিস দিলে সব কিছুই অর্জন করা সম্ভব। ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া কঠিন বিষয় মনে করি না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যুতের সঙ্গে এনার্জি সরাসরি জড়িত। এতে সামঞ্জস্য করা না গেলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এখানে আরও মনোযোগ দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি সকলকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে আহ্বান জানান। বিদ্যুত বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্লানিং কমিশনের সদস্য এসএম গোলাম ফারুক, বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং শ্রেডার চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায়।
×