ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাজে আম্পায়ারিংয়ে ক্ষুব্ধ ক্রিকেটপ্রেমীরা, সাবেক ক্রিকেটারদের সমালোচনা

উৎসবের পরিবর্তে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২০ মার্চ ২০১৫

উৎসবের পরিবর্তে বিক্ষোভ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নকআউট ম্যাচ। এমন ম্যাচে সামান্যতম ভুলের কারণেই ম্যাচের গতিপ্রকৃতি পাল্টে যেতে পারে। সেই ভুলের ছড়াছড়ি থাকল বাংলাদেশ-ভারত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে। তবে ক্রিকেটাররা যতটা না ভুল করলেন সে সব ছাপিয়ে গেল আম্পায়ারদের ত্রুটি। পরাজয়ে বাংলাদেশের ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমীরা মাশরাফি বিন মর্তুজা বাহিনীর কোন দোষ দেখছেন না। কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়ে বাংলাদেশকে ‘চুরি করে হারানো হয়েছে’ এমনটাই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় দাবি অনেকের। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আইসিসি এবং ম্যাচের দুই আম্পায়ার পাকিস্তানী আলিম দার ও ইংল্যান্ডের ইয়ান গোল্ডের বিষোদগার করা হয়েছে। আম্পায়ারিং নিয়ে কিংবদন্তি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন, ভারতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ও ভিভিএস লক্ষণসহ আরও অনেকেই সমালোচনায় সোচ্চার। পেসার রুবেল হোসেনের বলে সেঞ্চুরিয়ান রোহিত শর্মাকে ৯০ রানে ক্যাচ আউট হলেও ‘নো’ ডাকেন আম্পায়ার গোল্ড। বাংলাদেশ দল ব্যাটিংয়ে নামার পর অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকেও বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সাজঘরের পথ দেখানো হয়েছে। রুবেলের বলটাকে ‘নো‘ ডাকায় বিশিষ্ট ধারাভাষ্যকার ও বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার এবং নির্বাচক আতহার আলী খান বলেছেন, ‘দারুণ হতাশ এবং এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না লেগ আম্পায়ার কেন এটিকে নো বল ডাকলেন। কেউ কেন এটা নিয়ে কিছু বলছেন না?’ তবে আতহারের এই হতাশার ভেতরে থাকা ক্ষোভটা চাপা থাকেনি। ওয়ার্ন টুইটারে লিখেছেন, ‘আলিম দারের মতো একজন আম্পায়ারের কাছ থেকে এটা হতাশাজনক সিদ্ধান্ত। যথেষ্ট উঁচুতে ছিল না বলটি।’ বিষয়টি ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভেরও মনঃপুত হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘বলের উচ্চতা নিয়ে সন্দেহ থাকলে সেটা তৃতীয় আম্পায়ারকে দেয়া উচিত।’ ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোতে লেখা হয়েছে, ‘উচ্চতার জন্য নো বল দেয়া হলো কিন্তু তাই ছিল কী? ম্যাচের ফল নির্ধারণী সিদ্ধান্ত হতে পারে এটি।’ ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষণ টুইটারে লিখেছেন, ‘গোল্ডের কাছ থেকে বাজে সিদ্ধান্ত এলো। ভাগ্যের সহায়তা পেল রোহিত।’ প্রখ্যাত সাংবাদিক সম্বিত বল লিখেছেন, ‘এই নিয়ম পরিবর্তন প্রয়োজন। মাঠে থাকা আম্পায়ারদের নিশ্চিত ভুল থার্ড আম্পায়ারের মাধ্যমে নির্ভুল হওয়া উচিত।’ বৃহস্পতিবার কার্যদিবস। কিন্তু রাস্তাঘাট ছিল জন-যান শূন্য, ঘরে বসে টিভিতে খেলা দেখতে বসে গিয়েছিলেন সবাই। কিন্তু তারা হতাশ হন বাজে আম্পায়ারিং দেখে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হারল, নাকি জোর করে হারানো হলো? এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একজন বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক লিখেছেন, ‘টিভি স্বত্ব ভারতের, টাইটেল স্পন্সর ভারতের। এমন দলকে কি আর এত তাড়াতাড়ি টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় হতে দেয়া যায়? শেষ দাওয়াই টেবিল গেম।’ এমন পরাজয় দেখার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী আইনুল হাবিব লিখেছেন, ‘আইসিসি-ইন্ডিয়ান ক্রিমিনাল কাউন্সিল।’ এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় ছেয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো। তবে দেশের মানুষের মন ঠিকই জয় করে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা। এ জন্য জাহানারা জুঁই নামে একজন লিখলেন, ‘আমরা হারি নাই, আমাদের হারানো হয়েছে, আই লাভ টাইগার্স।’ বাজে আম্পায়ারিংয়ের কারণে ভারতীয় দল রান বেশি করেছে এবং বাংলাদেশকেও কম রানে গুটিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে মারিয়া ইসলাম প্রিয়ান্ত লিখেছেন, ‘ওরা এভাবেই জিতুক, আমরা সততার সঙ্গে জিতব ... ইনশা আল্লাহ।’
×