ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাহিদুর ও চুটুর বিরুদ্ধে দশম সাক্ষীর জবানবন্দী ২২ মার্চ

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২০ মার্চ ২০১৫

মাহিদুর ও চুটুর বিরুদ্ধে দশম সাক্ষীর জবানবন্দী ২২ মার্চ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের রাজাকার মাহিদুর রহমান ও মোঃ আফসার হোসেন চুটুর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দশম সাক্ষী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেডএম আলতাবুর রহমানের জবানবন্দীর জন্য ২২ মার্চ রবিবার দিন পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দীর দিন থাকলেও আসামি পক্ষ জেরা শেষ করতে পারবে না বিধায় তা পিছিয়ে রবিবার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম। প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা বেগম চমন। এর আগে এ মামলায় আরও ৯ জন সাক্ষী তাদের পক্ষে জবানবন্দী প্রদান করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। ২৭ জানুয়ারি থেকে প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এ পর্যন্ত যে ৯ জন সাক্ষী প্রদান করেছেন তারা হলেনÑ মোঃ আহাসান হাবীব, মোঃ মহবুল হক, রইস উদ্দিন, জাকারিয়া, মোঃ মোখলেসুর রহমান, মোঃ ফসি আলম ওরফে সান্টু, মোঃ খুদি, মহসীন আলী ও দাউদ হোসেন। অভিযুক্ত মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটুর বিরুদ্ধে গত ১৬ নবেম্বর অনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। এরপর গত ২৪ নবেম্বর তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২৭ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের পক্ষে প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান ও অভিযোগে গঠনের বিপক্ষে শুনানি করেন তাদের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। ২৪ নবেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে (শ্যোন এ্যারেস্ট) মাহিদুর-আফসারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ১৬ নবেম্বর এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান। এ দু’জনের বিরুদ্ধে ২৭ অক্টোবর তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। ২৮ অক্টোবর তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয়া হয়। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন প্রসিকিউশন। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের দাদনচক গ্রামের মাহিদুর রহমান ও বিনোদপুর ইউনিয়নের সাতরশিয়া গ্রামের আফসার হোসেন চুটুকে যার যার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর সকাল ছয়টা থেকে পরদিন ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত মোঃ মাহিদুর রহমান ও মোঃ আফসার হোসেন চুটুর সহযোগিতায় রাজাকার ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবপুর থানার চাঁদশিকারী, চামাটোলা, বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদশিকারী গ্রাম থেকে ২০০ গজ পশ্চিমে ফিরোজের আমবাগান এবং কবিরাজটোলায় যৌথ আক্রমণ চালায়। তারা এ সব গ্রামের ৩৯ জনকে আটক করে। কাউকে কাউকে অপহরণ করে, এক পর্যায়ে নির্যাতনের পর ৩৯ জনের মধ্য থেকে ২৪ জনকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর দুপুর একটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই দুই আসামির সহযোগিতায় রাজাকার ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবপুর থানার এরাদত বিশ্বাসের টোলা এবং কবিরাজটোলা গ্রামে যৌথ আক্রমণ চালায়। এদিন তারা এ দুই গ্রামের ৭০টি বাড়িতে লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে। সর্বশেষ অভিযোগে রয়েছে, ১৯৭১ সালের ২ নবেম্বর দুপুর দুইটা থেকে পরদিন ৩ নবেম্বর রাত পর্যন্ত মোঃ মাহিদুর রহমান ও মোঃ আফসার হোসেন চুটুর সহযোগিতায় রাজাকার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার শেরপুর ভা-ার (লক্ষীপুর), আদিনা ফজলুল হক ডিগ্রী কলেজ, শিবগঞ্জ সিও ডেভ অফিস এবং উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ইয়াকুব বিশ্বাসের আমবাগান এলাকার চার জনকে অপহরণ করে আটকের পর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে।
×