ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অভিজিত হত্যা মামলা তদন্তে এফবিআইর আরেক কর্মকর্তা আসছেন বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বি

প্রকাশিত: ০৭:৪০, ১৭ মার্চ ২০১৫

অভিজিত হত্যা মামলা তদন্তে এফবিআইর আরেক কর্মকর্তা আসছেন বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিজ্ঞানমনস্ক লেখক, ব্লগার ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিত রায় হত্যা মামলার তদন্তে সহায়তার জন্য ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) আরও এক উর্ধতন কর্মকর্তা। প্রায় ১২ দিন আগে গত ৪ মার্চ এসেছেন এফবিআইর ৪ কর্মকর্তা। এফবিআইর আরও এক কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সোমবার তাঁর নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম। অভিজিত হত্যাকা-কে ইসলামী জঙ্গীদের টার্গেট এবং এই হত্যাকা-ের মধ্যদিয়ে জঙ্গীগোষ্ঠী সিগন্যাল দিয়েছে বলে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন নিহতের বাবা সাবেক ঢাবি অধ্যাপক অজয় রায়। মনিরুল ইসলাম সোমবার তাঁর নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, অভিজিত রায় হত্যাকা-ে পুলিশ যেসব আলামত সংগ্রহ করেছে সেগুলোর টেকনিক্যাল এ্যানালাইসিস চলছে। এফবিআই আমাদের সে কাজে সহায়তা দিচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ধরনের ফিজিক্যাল এ্যাভিডেন্স দেয়া হয়েছে এফবিআইকে। তবে এখনও এর ফল পাওয়া যায়নি। এফবিআইর আরও এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশে আসছেন এবং ইতোমধ্যে তিনি রওনা হয়েছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনার ছায়া তদন্ত করছি না। মূল তদন্ত করছি আমরা। আর এতে আমাদের সহযোগিতা করছে এফবিআই। আর অভিজিত রায় ছিলেন মার্কিন নাগরিক। এজন্য তাঁর হত্যাকা-ের পর সেখানে একটি মামলা হবে। এফবিআই আমাদের সহযোগিতা এবং তাদের মামলা বিষয়ে তদন্ত করতেই কাজ করে যাচ্ছে। বাবা অজয় রায় বলেন ॥ ইসলামের নামে জঙ্গীগোষ্ঠী যা করছে তা প্রকৃত ইসলাম নয়। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ওরা মূলত ধারণ করে মওদুদীর ইসলাম ও সৌদি আরবের ওয়াহাবি ইসলাম যা মূল ইসলাম থেকে বিচ্যুত বলে সাক্ষাতকারে বলেছেন নিহত অভিজিতের বাবা ড. অজয় রায়। অজয় রায় বলেন, এসব তথাকথিত ইসলামবাদীর সবকিছুই ঠুনকো। ওদের লেখাপড়া নেই, ওরা মৌলবাদীও নয়। ওরা যে লেখালেখি করে তা খুবই একঘেঁয়ে, যার ভিত্তি হচ্ছে কিছু ভুল দর্শন আর অপব্যাখ্যা। ওরা স্রেফ সন্ত্রাসী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রকৃত দর্শন প্রচার করতে গিয়েই তথাকথিত ইসলামী জঙ্গীদের টার্গেটে পরিণত হয়ে শহীদ হতে হয়েছে অভিজিতকে। তাকে হত্যার মধ্যদিয়ে জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী ‘সিগন্যাল’ দিয়েছে যে, এ ধরনের মানুষকে বাংলাদেশে বাড়তে দেয়া হবে না। কিন্তু যারা আদর্শভিত্তিক এবং বিজ্ঞানমনস্ক লেখক তাদের কলম তো থেমে গেলে চলবে না। কারণ অভিজিতদের এ আত্মদানই কাক্সিক্ষত বাংলাদেশের প্রেরণা। সেভাবেই তাদের লেখালেখি ও সক্রিয়তা চালিয়ে যেতে হবে। একুশে পদকজয়ী এই শিক্ষক বলেন, বাংলাদেশকে আমরা দেখতে চাই সেক্যুলার ডেমোক্র্যাটিক রাষ্ট্র হিসেবে। যদি কখনও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে তাহলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ যেন মোটামুটি সমভাবে বণ্টিত হয়। আর সে কারণেই মুক্তমনাদের বেশি বেশি করে লিখতে হবে। অভিজিত রায়কে যে সন্ধ্যায় হত্যা করা হয়, সেই রাতে তাকেও হুমকি দেয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এসব হুমকিকে ভয় পেলে দেশ সঠিক পথে এগোতে পারবে না। বাংলাদেশের জঙ্গীগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রয়েছে। কখনও হুজি, কখনও আনসারুল্লাহ নাম নিয়ে থাকলেও গোষ্ঠীটা একই।
×