ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ অবশেষে কলকাতায় আটক

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৬ মার্চ ২০১৫

শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ অবশেষে কলকাতায় আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে পুরস্কার ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম মোল্লা মাসুদ ধরা পড়েছে। তাকে আটক করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহসান রবিবার এ খবর নিশ্চিত করে জনকণ্ঠকে জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় আটক করা হয় তাকে। এ খবরটি এতদিন অফিসিয়ালি ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরকে জানানো হয়নি। রবিবার বিকেলে ঢাকায় পুলিশ সদর দফতর এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়। নয়াদিল্লীতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন এবং বাংলাদেশ পুলিশ রবিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের রেড নোটিসধারী পলাতক আসামি। তাকে ভারতের পশ্চিম বাংলার গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইডি) গত ৮ ফেব্রুয়ারি ফরেনার্স এ্যাক্টের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী গ্রেফতার করে। মোল্লা মাসুদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রমনা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এদিকে সূত্র জানায়, ঢাকায় পুলিশের সদর দফতর আরও আগেই এ বিষয়ে নিশ্চিত হলেও তা কৌশলগত কারণে মিডিয়াকে আনুষ্ঠানিক জানানো থেকে বিরত থাকে। তবে রবিবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ দফতর থেকে মোল্লা মাসুদের অপরাধ জগতের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠায়। তারপরই ঢাকায় সেটা জানাজানি হয়ে যায়। এআইজি কামরুল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, এখন মোল্লা মাসুদকে দ্রুত আনার উদ্যোগ নেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০০১ সালে জোট সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা তৈরি করে। ওই তালিকার অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন মোল্লা মাসুদ। তখন থেকেই তিনি ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় আশ্রয় নেন। সেখানে বসবাস করলেও ঢাকায় তার ক্যাডাররা ছিল সক্রিয়। তিনি নিয়মিত তাদের মাধ্যমে তার অপরাধ জগতের খবরদারি করতেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করার পর ১৩ বছর পার হয়ে গেছে। এ সময়ে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনে অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকেই পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সবার নাম জানেনই না। এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কে কোথায় আছে তার সঠিক কোন খোঁজখবর নেই। কালা জাহাঙ্গীর কি মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে সেই ব্যাপারে কেউ কোন হদিস দিতে পারছে না। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতর জানায়, পুরস্কার ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর মধ্যে ২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান ক্রসফায়ারে খুন হয়েছে। আর আলাউদ্দিন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। লিয়াকতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে তাকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে দেশে গ্রেফতার হয়েছে যারা তারা হচ্ছে পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল, খোরশেদ আলম ওরফে রাশু, কামাল পাশা ওরফে পাশা, মশিউর রহমান কচি, আব্বাস ওরফে কিলার আব্বাস। বিদেশে গ্রেফতার হয়েছে ত্রিমতি সুব্রত বাইন। ভারত থেকে পালিয়ে নেপালে যাওয়ার সময় নেপাল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে আমিন রসুল সাগর অবস্থান করছে আমেরিকায়। কানাডায় অবস্থান করছে ইমাম হোসেন। প্রকাশ কুমার বিশ্বাস অবস্থান করছে কলকাতায়। মোল্লা মাসুদও এতদিন কলকাতায় অবস্থান করেই ধরা পড়ে। হারিস আহমেদ ও শামিম আহমেদ অবস্থান করছে কলকাতায়। তানভিরুল ইসলাম জয় অবস্থান করছে কলকাতায়। জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ কোথায় অবস্থান করছে সেই ব্যাপারে কারও কাছে কোন তথ্য নেই। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয় নগদ টাকা। বিগত ১৩ বছর ধরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কাউকে নগদ টাকা পুরস্কার দেয়া হয়নি। জোট আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ পুরস্কার হিসেবে নগদ টাকা প্রদানের দাবিদার হয়েছেন। দীর্ঘদিনের পুরনো শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকাটি নিয়ে মাঝে মধ্যেই জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
×