ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আড়িয়াল খাঁয় জালের বেড় দিয়ে মাছ চাষ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৬ মার্চ ২০১৫

আড়িয়াল খাঁয় জালের বেড় দিয়ে মাছ চাষ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা দখল করে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে আটকে নৌচলাচল বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। মাছ চাষের প্রতিবাদ করায় অতিসম্প্রতি একাধিক গ্রামবাসীকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। সূত্র মতে, অনতিবিলম্বে নদীর বাঁধ অপসারণের জন্য এলাকাবাসী প্রায় প্রতিদিন নানা কর্মসূচী পালন ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তা সত্ত্বেও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা কিংবা নদীর বাঁধ অপসারণ না করায় ভুক্তভোগীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদীর জাহাপুর ও কেদারপুর ইউনিয়নের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশে বাঁশ ও জালের আড়াআড়ি বেড়া দিয়ে মূল নদী আটকে গত এক মাস পূর্বে মাছ চাষ শুরু করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেন স্বপন এবং তার সহযোগীরা। এতে নদীতে সব ধরনের নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সিলন্দিয়া, চরজাহাপুর, ঠাকুর মল্লিক, চরফতেপুর, চরহোগলপাতিয়া, ইসলামপুর, নতুনচর, কিসমৎ ঠাকুর মল্লিক (টেংরাখালি) ও ভূতেরদিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষরা। একই কারণে ওইসব এলাকার শাখা খালে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদন, পণ্য পরিবহন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি নদীপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। রবিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, কেদারপুর ইউনিয়নের চরফতেপুর এলাকায় আড়িয়াল খাঁর প্রায় তিনশ’ মিটার চওড়া নদীতে অসংখ্য মোটা বাঁশ পুঁতে ও জাল দিয়ে আটকে পুরো নদী দখল করে মাছ চাষ করা হয়েছে। মাছ চাষের দেখভালের দায়িত্বে থাকা এনায়েত আকন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমরা কয়েকজনে মিলে এখানে মাছ চাষ করেছি। জানা গেছে, অনতিবিলম্বে জনগুরুতপূর্ণ নদী দখলমুক্ত করার জন্য দুই শতাধিক গ্রামবাসীর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত আবেদন স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, জেলা মৎস্য অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পরিবেশ অধিদফরের পরিচালকের বরাবরে জমা দেয়া সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে কোন প্রতিকার মেলেনি। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগীরা নদী দখল মুক্ত করার দাবিতে বাঁধ এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচী পালন করেছেন। এ ব্যাপারে সরদার খালেদ হোসেন স্বপন বলেন, একসময় এ নদী দিয়ে ছোট লঞ্চ চলাচল করলেও এখন ওই নদীতে কিছুই চলে না। তাই ওই নদীর এক কিলোমিটার জায়গায় বাঁশ ও জাল দিয়ে আটকিয়ে গ্রামের ১৭১ জন ব্যক্তিকে নিয়ে সমিতির মাধ্যমে মাছ চাষ করা হয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বাকাহিদ হোসেন বলেন, নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করার কোন অনুমতি দেয়ার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, গ্রামবাসীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ইতোমধ্যে প্রতিবেদন জেলায় পাঠানো হয়েছে।
×