ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের পূর্বাঞ্চলে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৫ মার্চ ২০১৫

ভারতের পূর্বাঞ্চলে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদারের লক্ষ্যে ব্যবসা অবকাঠামো, অভিবাসন, শুল্ক সুবিধা, স্থলবন্দর স্থাপনসহ অন্যান্য ইস্যুতে বাংলাদেশ অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪,০৯৬ কিলোমিটার স্থলসীমা রয়েছে এবং প্রাকৃতিকভাবেই বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার।’ শনিবার ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত দশম উত্তর-পূর্ব ব্যবসা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন শিল্পমন্ত্রী। নয়াদিল্লীর অশোক হোটেলে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স-এর আয়োজন করে। ভারতীয় চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) নর্থ ইস্ট ইনিসিয়েটিভ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান এমকে সাহারিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিসি’র প্রেসিডেন্ট রূপেন রায়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের সচিব আর. বিজয় কুমার। অনুষ্ঠানে ভারতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী কালরাজ মিশ্র, বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী পি অশোক গাজাপাথি রাজু, ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লয়িনপো টানডিন ওয়াংচুক, মিয়ানমারের মান্দালয় অঞ্চলের পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রী আং জান, সাগাইন অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ইউ থা আই, ভারতের আসাম প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গোগাই, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নাবাম তুকি এবং সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিং বক্তব্য রাখেন। আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল এবং অবশিষ্ট এলাকার মাঝে অবস্থান করায় ব্যবসায়িক দিক থেকে এর ভৌগলিক গুরুত্ব অনেক বেশি। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ গোটা ভারতসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চায়।’ তিনি সার্ক, আসিয়ান ও বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের টেকসই প্রযুক্তি, সবুজ জ্বালানি, পরিবহন, পর্যটন, মৎস্য সম্পদ খাতের উন্নয়নে যৌথ কর্মসূচী গ্রহণের তাগিদ দেন। বাংলাদেশ গত ৬ বছর ধরে ছয় শতাংশেরও বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে আমু এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে আগামী দিনে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অংশীদারিত্ব জোরদারে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে আগামী দিনে আসিয়ান এবং বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বহুগুণ বাড়বে। এ বিবেচনায় আসিয়ান এবং বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে শিল্প ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে এ সম্মেলন অনুুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, জাপান, নেপাল, ভুটান ও সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী, ভারতের সিকিম, মনিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয় অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কূটনীতিক, কর্পোরেট প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিল্পোদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, আর্থিক ও ব্যাংকিংখাতের প্রতিনিধিসহ প্রায় এক হাজার জন অংশ নিচ্ছেন। শিল্পমন্ত্রীর আগামী ১৬ মার্চ দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
×