ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বার্ধক্য জয়ের সাধনা ॥ বেঁচে থাকা যাবে ১৪২ বছর

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ১৪ মার্চ ২০১৫

বার্ধক্য জয়ের সাধনা ॥ বেঁচে থাকা যাবে ১৪২ বছর

বার্ধক্য জয়ের সাধনা মানুষের সেই কোন্ কাল থেকে। মানুষ অমরত্বের পিয়াসী। সে যৌবন অটুট রাখতে চায়। চিরযৌবনা হতে চায়। তার জন্য চেষ্টা থেমে নেই। মানুষের বিজ্ঞান সাধনা, বিশেষত চিকিৎসাবিজ্ঞান আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সে অমরত্ব বা চিরযৌবন অর্জন করতে না পারুক বার্ধক্যকে বিলম্বিত করতে, দীর্ঘায়ু লাভ করতে পারবে। কিছু কিছু ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে যেগুলোর কাজ হচ্ছে বার্ধক্যের চিহ্ন, কপালের বলিরেখা, ত্বকের কুঞ্চন সাময়িকভাবে চাপা দিয়ে রাখে। তবে সত্যিকার অর্থে দীর্ঘায়ু লাভের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অনেক দূর এগিয়ে গেছে। একটা সম্ভাবনাময় ওষুধ নিয়ে এখন গবেষণা চলছে। ইঁদুরের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে দেখা গেছে, যেখানে ইঁদুরের গড় আয়ু হলো ২৭ মাস, সেখানে ওই ওষুধ প্রয়োগ করা একটি ইঁদুর সর্বোচ্চ ৪৮ মাস পর্যন্ত বেঁচেছে। অর্থাৎ এর বেঁচে থাকার হার বেড়েছে ১.৭৭ গুণ। উন্নত বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু আজ ৮০ বছর। ওই ওষুধটি যদি মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় এবং তার আয়ু সেই ইঁদুরটির মতো ১.৭৭ গুণ বাড়ে, তাহলে সে ১৪২ বছর পর্যন্ত বাঁচবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির বদৌলতে এমনিতেও আমাদের আয়ু বাড়ছে। এক প্রজন্ম আগেও যা গালগল্প মনে হতো আজ তাই হয়ে উঠেছে বাস্তব। পাশ্চাত্যে বিশেষত আমেরিকায় মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে। আজ আমেরিকায় যে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হলো তার গড় আয়ু হবে ১৯২৫ সালে জন্ম নেয়া শিশুদের গড় আয়ুর চেয়ে পুরো ২০ বছর বেশি। এর পাশাপাশি যদি দীর্ঘায়ু লাভের ওষুধ আবিষ্কার করে ফেলা হয়, তাহলে তো আর কথাই নেই। তখন শতায়ু হওয়া কোন ব্যাপারই হবে না। দীর্ঘায়ু লাভ হবে এক অসাধারণ অর্জন। তবে তা সমাজে বাড়তি কিছু সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে। যেমন শতায়ুরা বা তারও বেশি বয়সীরা কি সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়াবে? বেশি বয়স হওয়া মানেই তো শারীরিক দিক দিয়ে অক্ষম হওয়া, কানে শুনতে না পারা, চোখে দেখতে না পারা, এমনকি চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়া। এসব কি সমাজে বাড়তি সমস্যা তৈরি করবে না? হয়ত করবে। কিন্তু তা মোকাবেলার জন্য তো আছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। বিস্ময়কর র‌্যাপামাইসিন বার্ধক্য নিরাময় বা বুড়িয়ে যাওয়ার দাওয়াই উদ্ভাবন কার্যত এক অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু সেই অসম্ভব আজ আয়ত্তের কাছাকাছি চলে এসেছে। যেমন র‌্যাপামাইসিন নামে এক ওষুধ আছে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের রোগীদের অপারেশনের পর অন্যের অঙ্গ প্রত্যাখ্যান সমস্যা রোধে দেয়া হয়। ইঁদুরের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এর আয়ু বৃদ্ধির বিস্ময়কর প্রমাণ মিলেছে। শুধু তাই নয়, সেটি দিব্যি সুস্থ-সবল আছে। বয়স বাড়লেও সেটিকে অল্পবয়সী ইঁদুরের চেয়ে ভিন্ন কিছু মনে হয় না। গায়ের পশম তেমনি কালো কুচকুচে। কৃশ শরীর এবং যথেষ্ট সক্রিয়। লিভার ও হার্ট অল্পবয়সী ইঁদুরের মতোই কাজ করছে। (চলবে)
×