ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অবসরে ফোরলান

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৩ মার্চ ২০১৫

অবসরে ফোরলান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অব্যাহত ইনজুরি সত্ত্বেও নিজেই আগ্রহ দেখিয়েছিলেন কোপা আমেরিকা কাপে খেলতে। কিন্তু ইচ্ছাটা আর পূরণ হলো না। কেননা আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন উরুগুয়ের তারকা ফুটবলার দিয়াগো ফোরলান। বৃহস্পতিবার টোকিওতে সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দেন উরুগুয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা এই ফরোয়ার্ড। উরুগুয়ের ২০১০ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলা ও ২০১১ সালের কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে অনবদ্য ভূমিকা রাখেন ফোরলান। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে তো সেরা খেলোয়াড়ই হন তিনি। দেশের জার্সিতে ১১২ ম্যাচে ৩৬ গোল করা ফোরলান অবসর প্রসঙ্গে বলেন, এটা অত্যন্ত কঠিন একটি সিদ্ধান্ত। জাপানের ক্লাব সেরেজো ওসাকায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কিন্তু আমার মনে হয়েছে এটাই সঠিক সময়। আমি আমার ক্যারিয়ারের ইতি টানছি। নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেয়াই আমার আসল লক্ষ্য। ২০০২ সালে উরুগুয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় ফোরলানের। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় দলের সবচেয়ে নির্ভরতার প্রতীক ছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে অর্জনের ঝুলিটাও কম নয়। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া যে জাতীয় দলে দীর্ঘদিন খেলেছি। অসাধারণ সব খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলেছি। যা আমাকে ভাগ্যবান করেছে। ফোরলান বলেন, উরুগুয়ের হয়ে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। সেটা পূরণ হয়েছে। এ জন্য আমি দারুণ খুশি। জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও ক্লাব ফুটবল খেলে যাবেন বলে জানিয়েছেন ফোরলান। বর্তমানে জাপানের ক্লাব সেরেজো ওসাকায় খেলছেন ৩৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে রেকর্ড অর্থে তিনি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ইন্টারন্যাশিওনাল ছেড়ে জাপানের জে লীগে যোগ দেন অথচ ইন্টারন্যাশিওনালের জার্সিতে মোটামুটি মানিয়ে নিয়েছিলেন ফোরলান। এই ক্লাবের হয়ে ৫৫ ম্যাচে ২২ গোল পেয়েছিলেন তিনি। ২০১০ বিশ্বকাপের ‘গোল্ডেন বল’ পুরস্কার পান ফোরলান। সেবার দক্ষিণ উরুগুয়েকে সেমিফাইনালে পৌঁছে দেন অনেকটা একক কৃতিত্বে। বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা জয়ীদের যা ১৯৩০ সালের পর সেরা সাফল্য। সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ তারকা নেলসন ম্যান্ডেলার দেশে নিজেকে ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে তুলে ধরেন। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলে পাঁচ গোল করে যৌথভাবে সর্বাধিক গোলদাতা হয়েছিলেন। গোলগুলো করেছিলেন গ্রুপ পর্বে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’টি, কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিরুদ্ধে একটি, হল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ও জার্মানির বিরুদ্ধে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আরও একটি করে। যৌথভাবে তিনজনের সঙ্গে সর্বাধিক গোলদাতা হলেও গোল্ডেন বুট, সিলভার বুট কিংবা ব্রোঞ্জ বুট কোনটাই পাননি ফোরলান। তবে বাজিমাত করেন টুর্নামেন্টের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’ জিতে। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই তাক লাগানো সাফল্য পাওয়া ফোরলান অনেকটা একক কৃতিত্বে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন। তার গোলগুলোর অধিকাংশই ছিল দুর্দান্ত ফ্রিকিক থেকে। সেই বিধ্বংসী ফোরলানকে ২০১০ বিশ্বকাপের পর থেকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না! কী ক্লাব ফুটবল কী জাতীয় দল সবখানেই যেন বিশ্বকাপের ছায়া। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপেও আলো ছড়াতে ব্যর্থ হন। যে কারণে জোর গুঞ্জন ছিল তাঁর অবসরের। অবশেষে সেটিই বাস্তবায়িত হলো। অবশ্য ২০১৪ সালেও তিনি অনেকটা নিভৃতে অবসর নিয়েছিলেন বলে গুঞ্জন আছে।
×