ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুরো রাজধানী ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ১১ মার্চ ২০১৫

পুরো রাজধানী ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পুরো রাজধানী ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় আনা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোরদার করতে সরকারীভাবে রাজধানীজুড়ে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে রাজধানীর বহুতল ভবনগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য ভবন মালিকদের অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি কোন ভবন থেকে ককটেল বা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে তার দায়ও ভবন মালিকদেরই নিতে হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ২৬ মার্চ উপলক্ষে মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সরকারীভাবেই পুরো রাজধানীতে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার আগে চলমান পরিস্থিতিতে রাজধানীর বহুতল ভবনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য ভবন মালিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, কোন ভবন থেকে ককটেল বা বোমা নিক্ষেপ করলে তার দায় ভবন মালিক এড়াতে পারবেন না। বৈঠকে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ হিসেবে তিনি সম্প্রতি পল্টনে একটি ভবন থেকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার উদাহরণ টানেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক টাকা দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে পারবেন, আর সিসি ক্যামেরা বসাবেন না, তা তো হতে পারে না। তাছাড়া নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশনা দেবেন যাতে সন্দেহভাজন কেউ ভবনে প্রবেশ করতে না পারেন। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন মানুষ যেন নিরাপদভাবে করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। শান্তিপূর্ণভাবে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বিএনপিসহ সব সংগঠনকে আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। বিএনপিকে চলমান অবরোধ-হরতাল প্রত্যাহারেরও অনুরাধ জানান তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোন দল সাধারণ জনগণের বাইরে নয়। সবাই এদেশের মানুষ। সবাই শান্তিপূর্ণভাবে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবেন। স্বাধীনতা দিবসে বিএনপি যেন তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচী বিরত রাখে। স্বাধীনতা দিবসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বঙ্গভবন, জাতীয় স্টেডিয়ামসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বাড়তি নিরাপত্তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া সারাদেশের প্রশাসনকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। রাজধানীতে যেসব জায়গায় বেশি মানুষ সমাগম হয়, এমন জায়গায় মেডিক্যাল টিম, ওয়াসার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত থাকবে, কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সাভার স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কূটনীতিকসহ ভিভিআইপি, ভিআইপিসহ সাধারণ মানুষ নিরাপদে যেন সেখানে যেতে পারেন সে লক্ষ্যে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, পুরো রাজধানী সিসিটিভির আওতায় আনলে রাস্তাঘাটের সব প্রকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যে কোন অপরাধ ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। এর জন্য প্রতিটি এলাকার পুলিশের উপ-কমিশনারের (ডিসি) অফিসে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে কন্ট্রোলরুমের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। এটি কার্যকর হলে রাজধানীর রাস্তায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি কমে যাবে। এমনকি কেউ পেট্রোল বোমা ছুড়লে তাকে শনাক্ত করা সহজ হয়ে যাবে।
×