ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে শতাধিক বোমাবাজ সক্রিয় ॥ স্পর্শকাতর স্পট ১৫

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১০ মার্চ ২০১৫

রাজধানীতে শতাধিক বোমাবাজ সক্রিয় ॥ স্পর্শকাতর স্পট ১৫

শংকর কুমার দে ॥ অবরোধ-হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টিতে রাজধানীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতাধিক ককটেল বোমাবাজ। এসব ককটেল বোমাবাজদের নামের তালিকা করেছে পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। রাজধানীর বিভিন্নস্থানে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে আত্মগোপন করছে ককটেল বোমাবাজরা। তাদের বেশিরভাগই যেসব এলাকায় ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে, সেসব এলাকার যুবদল-ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ভাড়াটিয়া দুর্বৃত্ত। এই ককটেল বোমাবাজ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধ-হরতালের নামে নাশকতার জন্য ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য মাঠে নামানো হয়েছে যুবদল-ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ভাড়াটিয়া দুর্বৃত্তদের। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্র জানান, রাজধানীতে কয়েকদিন ধরে ককটেল বোমার বিস্ফোরণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে আবারও তাদের তালিকা তৈরি করে অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় ককটেল বোমাবাজ ও অগ্নিসংযোগকারীদের এলাকা হিসেবে দুইটি এলাকা ভাগ করা হয়েছে। গুলিস্তান থেকে পুরান ঢাকাসহ যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, জুরাইন, খিলগাঁও, সুবজবাগ, কমলাপুর ও মতিঝিল এলাকাজুড়ে একটি এলাকা ভাগ করেছে। এই এলাকায় হাতবোমা ও ককটেল তৈরির কারিগর রয়েছে। একেকটি বোমা ও ককটেল গড়ে ৫শ’ টাকা থেকে ৭শ’ টাকায় বিক্রি হয়। বংশাল, সুরিটোলা, চকবাজার, সোয়ারীঘাট, লক্ষ্মীবাজার ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় বেশিরভাগ হাতবোমা তৈরি হয়। এই এলাকা থেকে বোমা রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় সরবরাহ করা হয়। গে-ারিয়া, বংশাল ও জুরাইন এলাকায় ফারুক, কালু, পান্না, মিলন ও শহীদের নাম বোমাবাজদের তালিকায় উঠেছে। কোতোয়ালি, নয়াবাজার, সুরিটোলা, নর্থসাউথ রোড, ওয়ারী, সূত্রাপুর, নবাবপুর, গুলিস্তান এলাকায় জামাল মল্লিক, ডালিম, জাবেদ, বাপ্পী, মিন্টু, হোসেন মিয়া, ভাগ্নে শহীদ, মোহন, রবিন, মামুন ও ফারুকের নাম রয়েছে। লালবাগ, যাত্রাবাড়ী, সুবজবাগ, খিলগাঁও, শাজাহানপুর, ও মতিঝিল এলাকায় বোমারু ইসমাইল, বাবলা, রতন, ফারুক ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম রয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার ওই তালিকায় নতুন ঢাকার ১৫টি স্থানকে স্পর্শকাতর হিসেবে উল্লেখ করেছে। শাহবাগ, পল্টন, বাংলামোটর, কাওরানবাজার, ধানম-ি-২৭, আগারগাঁও, শ্যামলী, মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশন, কাজীপাড়া, সরকারী বাঙলা কলেজের সামনে, মহাখালী, বনানী কাকলী, খিলক্ষেত, এ্যালিফেন্ট রোড, বিমানবন্দর গোলচক্কর ও আজমপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সবচেয়ে বেশি বোমাবাজ ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগকারী এই চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব এলাকায় ভাড়াটিয়া বোমাবাজ গ্রুপের অন্তত অর্ধশত সদস্য সক্রিয় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এলিফ্যান্ট রোডে সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় পুলিশ তিন পিকেটারকে আটক করে। গ্রেফতারকৃত পিকেটারদের ভ্রাম্যমাণ আদালত তিন মাসের কারাদ- দিয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানিয়েছেন, যুবদল-ছাত্রদল ও শিবির প্রাধান্য এলাকায় বেশিরভাগ ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। এসব এলাকায় বার বারই ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় যুবদল-ছাত্রদল ও জামায়াতÑশিবিরের বাসাবাড়ি এবং মেস রয়েছে সেসব এলাকায় ককটেল বোমার বিস্ফোরণের দৌরাত্ম্য বেশি। যেমন কাওরানবাজার, তেজগাঁও সাত রাস্তার মোড়, মালিবাগ, বাড্ডা, পুরানো ঢাকার লালবাগ এলাকায় শিবিরের মিছিল, ককটেল বোমার নাশকতার তা-ব অব্যাহত আছে। তালিকা তৈরির পাশাপাশি যুবদল, ছাত্রদল, শিবিরের প্রাধান্য এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, রাজধানী ঢাকায় যারা ককটেল বোমাবাজি করছে তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
×