ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যে কারণে ইংল্যান্ডের আতঙ্ক বাংলাদেশ...

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৯ মার্চ ২০১৫

যে কারণে ইংল্যান্ডের আতঙ্ক বাংলাদেশ...

মোঃ মামুন রশীদ ॥ চার বছর আগে কী ঘটেছিল সেটা মনে করে আর লাভ নেই। অতীত ঘটনা নতুন করে প্রভাব ফেলবে না আজকের ম্যাচে। জিততে হলে আবারও খেলতে হবে সর্বোচ্চ সেরাটা দিয়ে। তাছাড়া ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিলেও বাংলাদেশের সে জয়টা নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। কারণ সহযোগী সদস্য দেশ আয়ারল্যান্ড তাদের হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের দারুণ অর্জনটাকে ম্লান করে দিয়েছিল। এবারও বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচের বাড়তি আকর্ষণ। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ঠাঁই নিয়েছে এ ম্যাচটি। কারণ এ ম্যাচের জয়ী দল নিশ্চিত করবে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং নির্ধারিত হয়ে যাবে ‘এ’ গ্রুপ থেকে কোন্ চারটি দল শেষ আট খেলবে। সমান ৪ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৫ হলেও ইংল্যান্ডের মাত্র দুই। তাই বেশ চাপে আছে ইংলিশরা। বাংলাদেশ দলের শক্তিমত্তা নিয়ে হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ২০১১ বিশ্বকাপ স্মৃতি ॥ এবার বিশ্বকাপ দলে ছিলেন না ওপেনার ইমরুল কায়েস। তিনি ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেছিলেন। তবে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ঠাঁই না পাওয়া ইমরুল এরপরও আজ তামিমের সঙ্গে নামতে পারেন। আজগুবি কোন গল্প নয়, ওপেনার এনামুল হক বিজয়ের হঠাৎ ইনজুরির কারণে ইমরুল পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে ঠাঁই করে নিয়েছেন দলে। তাই আবারও তামিমের সঙ্গে ইমরুলকে দেখা যেতে পারে ইংল্যান্ডের ডু অর ডাই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে উদ্বোধন করতে। একইভাবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য পেসার আলআমিন হোসেন দেশে ফিরে গেছেন এবং দলে ঢুকেছেন পেসার শফিউল ইসলাম। গত বিশ্বকাপে শেষ মুহূর্তে ব্যাট হাতে অপরাজিত ২৪ রান করে ইংল্যান্ডের পরাজয়ের কারণ হওয়া শফিউলও আজ আছেন। এ দুটি ঘটনা সম্ভবত ঈশ্বরের ইশারায়ই ঘটেছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার আগে সে কারণেই হয়তো আরও দুই পুরনো সমস্যা বাংলাদেশ দলে যোগ হয়েছেন। আর পরাজয়ের তিক্ত স্মৃতিটা বাড়তি এক ভয়ের শিহরণ দেবে ইংল্যান্ডকে এবং বাংলাদেশ পেতে পারে অনুপ্রেরণা। স্পিনার ॥ চলতি বিশ্বকাপে অবশ্য এখন পর্যন্ত কোন স্পেশালিস্ট স্পিনার নিয়ে মাঠে নামেনি বাংলাদেশ। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের স্পিনের ওপরই নির্ভর করে খেলেছে। তবে বাংলাদেশ দলের স্পিন আক্রমণ বিশ্বের যে কোন দলের জন্যই ভীতিকর হিসেবে বিবেচিত। আর ইতিহাস বলে ইংল্যান্ড বরাবরই স্পিনের বিরুদ্ধে কোণঠাসা। গত বিশ্বকাপে সাকিব দুটি উইকেট শিকার করেছিলেন। এবার অফটাইম বোলার হিসেবে লেগস্পিনার সাব্বির রহমান আছেন। ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা দেখেশুনে না খেললে চরম বিপর্যয়ে পড়তে পারে। তামিম ইকবাল ॥ যদিও ঠিক ছন্দে নেই বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য এ ওপেনার। কিন্তু গত ম্যাচে ৯৫ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ার পেছনে ভূমিকা রাখেন। তাঁর রানে ফেরাটা বেশ চিন্তার কারণ হতে পারে ইংলিশদের জন্য। কারণ ২০১০ সালে ঢাকায় ১২০ বলে ১২৫ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে ৮১ করেন। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ২২৫ রান তাড়া করতে নামার পর বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা দিয়েছিলেন তিনি মাত্র ২৬ বলে ৩৮ রান করে। আনপ্রেডিক্টেবল ॥ একসময় তকমাটা লেগে ছিল শুধু পাকিস্তান ক্রিকেট দলের। তবে এখন সেটা বাংলাদেশ দলের সঙ্গেও লেগে গেছে। যে কোন সময় যে কোন দলকে হারানোর সামর্থ্য রয়েছে সেটা আগেও প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। আবার গত জুনেই ভারতকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে তা ছুঁতে পারেনি, অলআউট হয়েছে ৫৮ রানে। আবার স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রানও হেসেখেলে পেরিয়েছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশ দলকে নিয়ে আগেভাগে কোন পরিকল্পনা করে খেলার সময় তা প্রয়োগ করাটা বেশ কঠিন ইংল্যান্ডের জন্য। অস্বস্তি ॥ এমন এক পরিস্থিতিতে এবার বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে ইংল্যান্ডই পড়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মোকাবেলা সেই বাংলাদেশ শক্তিমত্তায় অনেক পিছিয়ে থাকলেও পয়েন্টে এগিয়ে আছে। টানা হারে মুষড়ে পড়েছে দলটি আর উজ্জীবিত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আজ তাই ভীষণ স্নায়ুচাপে থাকবে ইংলিশরা। হারলেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়। ইংলিশদের এই অস্বস্তিই এখন উজ্জীবিত বাংলাদেশের জন্য বাড়তি এক শক্তি।
×