ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ানডে- আট হাজারী ক্লাবে আফ্রিদি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৫ মার্চ ২০১৫

ওয়ানডে- আট হাজারী ক্লাবে আফ্রিদি

জাহিদুল আলম জয় ॥ আরও একটি গৌরবময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন শহীদ আফ্রিদি। পাকিস্তানের তারকা এ অলরাউন্ডার বুধবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে সাত বলে ২১ রানের হার না মানা ঝড়ো ইনিংস খেলে ওয়ানডে ক্রিকেটে আট হাজারী ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন। পাকিস্তানের মাত্র চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে আট হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ১ মার্চ ৩৫ বছরে পা রাখা আফ্রিদি। এর আগে পাকিস্তানের ইনজামাম-উল-হক, মোহাম্মদ ইউসুফ ও সাঈদ আনোয়ার আট হাজারী ক্লাবে নাম লেখান। এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে ১১ ক্রিকেটার আট হাজারী ক্লাবে প্রবেশ করেছেন। সবশেষ এ এলিট ক্লাবে ঢুকেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আফ্রিদি। আর ওয়ানডে ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের দিক দিয়ে আফ্রিদির অবস্থান ২৭ নম্বরে। ১৮,৪২৬ রান করে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন ভারতীয় ক্রিকেটঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকার। আরও একটি গৌরবময় মাইলফলকের সামনে আছেন আফ্রিদি। আট হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছার পর এখন তাঁকে হাতছানি দিচ্ছে ৪০০ উইকেটের মাইলফলক। আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ৩৯৫ ওয়ানডেতে আফ্রিদির উইকেটসংখ্যা ৩৯৫টি। আর মাত্র ৫ উইকেট পেলেই ওয়ানডেতে একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে ৮০০০ রান ও ৪০০ উইকেট পাওয়ার গৌরবময় রেকর্ড গড়বেন আফ্রিদি। ন্যাপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড় তোলেন আফ্রিদি। মারকুটে এই ব্যাটসম্যানের ইনিংসটিতে ছিল একটি চার ও দুটি ছক্কা। ৩৯৫ ওয়ানডেতে ৩৬৭ ইনিংসে আফ্রিদির বর্তমান রান ৮০১৯। এর মধ্যে ছয়টি শতক ও ৩৯টি অর্ধশতকের ইনিংসও আছে। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের মালিক ইনজামাম-উল-হক। ৩৭৫ ওয়ানডেতে সাবেক অধিনায়কের রান ১১ হাজার ৭০১। এ তালিকায় আফ্রিদির ওপরে আছেন মোহাম্মদ ইউসুফ ও সাঈদ আনোয়ার। ইউসুফের রান ৯ হাজার ৫৫৪। আর সাঈদ আনোয়ারের রান ৮ হাজার ৮২৪। ] অভিষেকের পর থেকেই তাক লাগানো পারফর্মেন্স আর নজরকাড়া গ্লামার দিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি পান আফ্রিদি। লেগ স্পিনার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেক হলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই ব্যাট হাতে করে বসেন অসাধারণ কীর্তি। ১৯৯৬ সালের ৪ অক্টোবর কেনিয়ার নাইরোবিতে কেসিএ সেন্টেনারি টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে ওপেনার সেলিম এলাহী আউট হওয়ার পর দ্রুত রান তোলার জন্য সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে আফ্রিদিকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে দেয় পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট। সুযোগ পেয়ে টগবগে যুবক আফ্রিদি যা করেন তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। মাত্র ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়েন। দীর্ঘ ১৫ বছরেও যে রেকর্ডের আশপাশে কেউ ঘোরাফেরা করতে পারেননি। তবে দ্রুততম সেঞ্চুরির এই রেকর্ড এখন আর আফ্রিদির নেই। ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম বলে সেঞ্চুরির মালিক এখন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ক্যারিয়ারের শুরুতে ড্যাশিং ব্যাটিং আফ্রিদির বোলার পরিচয় অনেকটাই ঘুচিয়ে দেয়। যেন বল করাটা মূল কাজ নয়, ব্যাটিংটাই তার আসল! এ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ফলে ক্রিকেটবিশ্বেও তাঁর পরিচয়টা ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে। পাশাপাশি নিভৃতে বোলিংটাও ভালই চালিয়ে যেতে থাকেন কার্যকরী এ অলরাউন্ডার। এরপর অবশ্য আফ্রিদির ক্যারিয়ারের দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে যায়। এখন আর তাঁর সেই বিস্ফোরক ব্যাটিং খুব একটা দেখা যায় না! তবে বল হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন সবসময়। তার লেগ স্পিন ভেল্কিতে নিয়মিত বিধ্বস্ত হচ্ছে প্রতিপক্ষের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান। ১৯৯২ সালে একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের পর পাকিস্তানের ক্রিকেটের বড় সাফল্য বলতে ২০০৯ সালে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দলগত নৈপুণ্যে পাকিস্তান এ সাফল্য পেলেও সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দলের জয়ে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন অলরাউন্ডার আফ্রিদি। মূলত ড্যাশিং এ তারকার উদ্ভাসিত নৈপুণ্যের ওপর ভর করেই শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল পাকিস্তান। এবারও বিশ্বকাপে খেলছেন সুদর্শন এ তারকা। কিন্তু পুরোপুরি নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।
×