ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা বারে আওয়ামীপন্থী প্যানেলের হারের নেপথ্যে-

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৫ মার্চ ২০১৫

ঢাকা বারে আওয়ামীপন্থী প্যানেলের হারের নেপথ্যে-

বিকাশ দত্ত/সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসী ॥ ঢাকা আইনজীবী সমিতি আইনজীবীদের অন্যতম বৃহত্তম সংগঠন। যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। দীর্ঘদিন এই বারের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। কিন্তু এবার ভোটার সংখ্যা বেশি ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। ২৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২০টি পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থীরা বিপুল বিজয় লাভ করেছেন। এছাড়া বাকি ৫টি পদে জিতেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা। ১৮ হাজার সদস্যের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৯ হাজার। অর্ধেক ভোটার ভোট দিতে আসেননি। কেন এই হার? বেশি ভোট থাকা সত্ত্বেও এই ভরাডুবি আওয়ামী লীগ সমর্থিত তরুণ আইনজীবীরা মেনে নিতে পারছেন না। ৭টি কারণে সম্মিনিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের এই ভরাডুবি হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ঢাকা বারের নেতৃত্ব নেয়ার পরিকল্পনা করে। তারই অংশ হিসেবে নির্বাচনে জামায়াত প্রচুর অর্থ যোগান দেয়। সেই অর্থে বিএনপি ভোট কিনে, আওয়ামীপন্থীদের ওভার কনফিডেন্স (অধিক আত্মবিশ্বাসী), আঞ্চলিক প্রধান্য বিস্তার, আওয়ামীপন্থী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া দেরি হওয়া, নির্বাচনের বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীগণ সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে সমন্ব^য়ের অভাব। এই কারণগুলোর জন্যই এবার সমন্বয় পরিষদ হেরেছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কম ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। সাদা প্যানেলের সাইদুর রহমান মানিককে ২৩০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। মাসুদ আহমেদ তালুকদার পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৬২ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের ওমর ফারুক ফারুকী ৫৮৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন সাদা প্যানেলের মোঃ আয়ুবুর রহমানকে। ফারুকী ভোট পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৪৩ ভোট। এদিকে ঢাকা বারের আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে দুটি সুস্পষ্ট ধারা রয়েছে। এর একটি হচ্ছে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। এর নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবু আব্দুল্লাহ। অন্যটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ। এর নেতৃত্বে আছেন এ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার ও এ্যাডভোকেট লায়েকুজ্জামান। এছাড়াও আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদ নামে আরেকটি সংগঠনও আইনজীবীদের মধ্যে কাজ করছে। তবে নামে ভিন্ন হলেও বাস্তবে এটি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদেরই সমর্থক সংগঠন। এবারের নির্বাচনে এসব সংগঠনগুলো এক্যবদ্ধ ছিল। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন গ্রুপ যেমন জাসদ-গণফোরাম-গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি সমন্বয় পরিষদের পক্ষে কাজ করলেও তাদের ভোট বিএনপিতে পড়েছে বলে জানা গেছে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সবকিছু ছাপিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আঞ্চলিকতাবোধ। ঢাকা বারে বর্তমানে বরিশাল, ময়মনসিংহ, ঢাকাইয়া এবং অধুনা নোয়াখালী জেলার আইনজীবীদের মধ্যে প্রচ- আঞ্চলিকতা গড়ে উঠেছে। দলনাশা এই আঞ্চলিকতার কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের উর্ধতন নেতৃস্থানীয় এবং সিনিয়র বহু আইনজীবী। আওয়ামী লীগ কিংবা বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ অথবা আওয়ামী আইনজীবী যুব পরিষদ যে যাই করুক না কেন নির্বাচন এলে সবকিছুর উপরে উঠে আসে সর্বনাশা আঞ্চলিকতাবোধ। পরাজয়ের বিষয়ে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। কিন্তু জামায়াতের অর্থ যোগান আর বিএনপির ভোট বিক্রির কাছে আমরা হেরে গেছি। কিছু ক্ষেত্রে আঞ্চলিকতা প্রাধান্য পেয়েছে। মাসুদ তালুকদার জামায়াতের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ভোট কিনেছেন। দ্বিতীয়ত তিনি আঞ্চলিকতার কারণে কিছু ভোট বেশি পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ব্যাপকসংখ্যক আনসিন ভোটার (নতুন মুখের ভোটার) এবার ভোট দিয়েছেন। ঢাকা বারে প্রাকটিস করেন না এমন অনেককেই ভোট দিতে দেখা যায়। পরিচয়পত্র দেখেও ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই জাল ভোটের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে বিজয়ী এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার তার বিজয় এবং সাদা প্যানেলের পরাজয় সম্পর্কে বলেন, বর্তমান সরকার অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করে আছেন। আইনজীবীরা সমাজের সবচেয়ে সচেতন নাগরিক। সরকারের সক অগণতান্ত্রিক কাজের বিরুদ্ধে আইনজীবীরাই সর্বপ্রথম সোচ্চার হয়ে ওঠে। তাই এবারের নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিজয়। অন্যদিকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবন নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর ২০ কোটি টাকা লাইব্রেরির জন্য এক কোটি টাকা অনুদানকে আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবীগণ তাদের পক্ষে কাজে লাগাতে পারেনি। এদিকে জামায়াতে ইসলামীর টাকায় ভোট কেনা প্রসঙ্গে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেছেন, আমরা সিনিয়র থেকে জুনিয়র আইনজীবীদের ভোট পেয়েছি। অনেক আওয়ামী লীগের ভোট পেয়েছি। তা হলে কি আমরা আওয়ামী লীগেরও ভোট কিনেছি? অন্যদিকে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমাদের ভোটারের সংখ্যা বেশি হওয়ার পর নানা কারণে পরাজয় হয়েছে। সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়নের ক্ষেত্রে আগে থেকে ঠিক করা হলে এমন হতো না। স্বল্প সময়ের মধ্যে এসব প্রার্থী ভোটারদের কাছে যেতে পারেনি। কিছু সমন্বয়ের অভাব ছিল। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থীদের অনেক আগে থেকেই ঠিক করেছে। তারা সাধারণ ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যেতে পেরেছেন। আমাদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। এছাড়া সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীরা আগে থেকে নির্বাচিত হয়ে আসছে সে কারণে এবার জয়লাভে ও জন্য অধিক আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। যার ফলে নেতাকর্মীরা কাজ করেনি। অন্যদিকে বিএনপি জামায়াতের আইনজীবীগণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে নতুন ভোটারদের গিফট দিয়েছে। যার ফলে নতুন ভোটাররা অনেকেই না বুঝে ভোট দিয়েছেন। এটা ইথিক্সের পরিবর্তন কাজ করেছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এ বিষয়ে আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত। তা ছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিকতাবাদী দিয়ে কাজ করলে আগের অবস্থা ফিরে আসবে। আঞ্চলিকতার উর্ধে রেখে আদর্শের ভিত্তিতে নেতা এবং কর্মীরা ও আইনজীবীদের সুদৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে। কোনভাবেই অনৈতিকতাকে যাতে প্রশ্রয় না দেয়া হয়। তা হলে আগামীতে পুনরায় ঢাকা বারে আবার যেতে পারবে সমন্বয় পরিষদ। ঢাকা বারের নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী সাদা প্যানেলের টানা দ্বিতীয়বারের মতো ভরাডুবির নেপথ্যে আওয়ামী সমর্থক আইনজীবী নেতাদের কোন্দল, উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা যেমন ছিল, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের ছিল দীর্ঘমেয়াদী নীলনকশার বাস্তবায়ন। বার কাউন্সিলে বিএনপি সমর্থক নেতত্ব আসার সুবিধাটি নীল প্যানেল নিচ্ছে, ঢাকা বারের সদস্য করছে ঢাকার বাইরের আইনজীবীদেরও। বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা বার শাখা এ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন মানিক জনকণ্ঠকে বলেন, বিগত বার কাউন্সিলের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর থেকে নবীন আইনজীবীদের বিরাট অংশ বিএনপির পক্ষে চলে গেছে। যেহেতু বার কাউন্সিল বিএনপির হাতে সেহেতু বেশিরভাগ নবীন আইনজীবীরা শিক্ষানবিস সময়ে বিএনপি আইনজীবীদের সঙ্গে কাজ করে আইনজীবী হিসেবে সনদ পেতে সহজ হতে পারে আশায়। তিনি আরও জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আশার পর একজন আইনজীবীকে একাধিক বারের সদস্য হওয়ার সুযোগ করে দেয়। এরপর থেকে বিএনপি-জামায়াত ঢাকার বাইরের আইনজীবীদের ঢাকা বারের সদস্য করতে শুরু করে যাতে ভোট ব্যাংক বড় হয়। গাড়ি ভাড়া করে তাদের ঢাকা আনা হয় ভোটের আগে। আওয়ামী লীগ এ ধরনের কোন কৌশলই নেয়নি। এছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থক অনেক আইনজীবী সরকারী আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সংগঠনকে তারা সময় দেন না। নির্বাচনের সময়ও সেভাবে কাজ করেন না। তিনি আরও বলেন, গত বছর বিএনপি সমর্থিত প্যানেল জয়লাভের সুবাদে এবার ঢাকা বারের নির্বাচন কমিশন গঠন করার সময় প্রথম ৫৪ জনের মধ্যে ৩৮ জনই বিএনপিপন্থী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে। ভারসাম্য রক্ষার রেউয়াজটি এবার তারা লঙ্ঘন করে। কমিশনের বিএনপিপন্থী সদস্যরা নিরপেক্ষ ভোটারদের প্রভাবিত করেছেন। এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন মিঠু বলেন, ঢাকা বারের আইনজীবীদের ৭৫ ভাগই হবেন পুরুষ। মনোনয়ন দেয়ার সময় নারী আইনজীবীদের প্রাধান্য দেয়ায় যোগ্য অনেক পুরুষ আইনজীবী যেমন প্রার্থিতা থেকে বঞ্চিত হন, এটি পুরুষ ভোটারদেরও ক্ষুব্ধ করে। ফলে সাদা প্যানেলের নারী সদস্যদের সর্বনিম্ন ভোট পেতে দেখা যায়, যা পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে তিনি মনে করেন। ফল বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট আবু সাঈদ সাগর জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা বারে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে তা ছিল লোক দেখানো। এখানে নেতায় নেতায় ঐক্য হয়েছে হয়তো, কর্মীদের মধ্যে ঐক্য হয়নি, ঐক্য হয়নি ভোটারদের মধ্যে যার প্রভাবে প্রতিফলিত হয়েছে ব্যালটে। কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত বঙ্গবন্ধু আইজীবী পরিষদের সদস্যরা এ সরকারের শুরু থেকেই চরমভাবে অবহেলিত। তাদের ক্ষোভ বঞ্চনার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এই ফলাফল। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই নির্বাচনী ফলে প্রতিফলিত হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে এ্যাডভোকেট সাগর বলেন, এই অবস্থা সব প্রার্থীর জন্যই সমান। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এ নির্বাচনকে মোটেও প্রভাবিত করেনি, যদিও তাই হবে তাহলে সাদা প্যানেল থেকে পাঁচজন পাস করতে পারতেন না। এসব বক্তব্য দিয়ে নিজেদের দায় এড়াতে চান দায়িত্বশীল কর্তা-ব্যক্তিরা। সাদা প্যানেলের ফলাফল বিপর্যয় সম্পর্কে আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু বলেন, দলীয় আইনজীবীদের অনেকেই পূর্ণ প্যানেলে ভোট দেননি। তিনি এজন্য আঞ্চলিকতাকে দায়ী করেন। এছাড়া হরতাল-অবরোধে অনেক ভোটার ভোট দিতে আসতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন মহানগর পিপি। এছাড়াও তার নেতৃত্বাধীন প্রায় সাড়ে চারশ সরকারী আইন কর্মকর্তার ভূমিকা বিশেষ করে ভোট গণনার রাতে তাদের অনুপস্থিতির অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তারা ছিলেন এবং কাজ করেছেন। তিনি বলেন দলের লোকজনই পূর্ণ প্যানেলে ভোট দেননি। তবে তিনি ইভিএম এ ভোট না হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। সর্বশেষে মহানগর পিপি অভিযোগ করেন, বার কাউন্সিলে বিএনপি ক্ষমতায় থাকায় আমাদের ছেলেদের ইচ্ছাকৃত ফেল করানো হয়েছে। গোড়াতেই আমাদের ছেলেদের আটকে দেয়া হয়েছে। এটা ফল বিপর্যয়ের একটা বড় কারণ। ফল বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, সাদার (আওয়ামীপন্থী) সঙ্গে নীলের (বিএনপি) ভোটের ব্যবধান ৩০০-৩৫০ ভোটের। যদি সঠিকভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা যেত তবে বিজয় অর্জন সম্ভব ছিল। আমাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী তো অতি মাত্রায় নেগেটিভ ভোটের (বিএনপির ভোট) ওপর আস্থাশীল ছিলেন, পরাজয়ের এটা একটা অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি। এবারের নির্বাচনে সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে পরাজিত সাইদুর রহমান মানিক বলেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে নির্বাচন করেছে, কিন্তু আমরা রাজনৈতিকভাবে নির্বাচন করতে পারিনি। দুদিনব্যাপী নির্বাচনের প্রথম দিনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নামে ওয়ারেন্ট দেয়ায় সাধারণ ভোটারদের অনেকেই যারা সাদা প্যানেলে ভোট দিতেন তারাও নীল প্যানেলে ভোট দিয়েছেন। ঢাকা আইনজীবী সমিতির এবার নীল প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ২০টি পদে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়। সাদা প্যানেল ৫টি পদে বিজয় হয়। ২০১৪-১৫ বর্ষের নির্বাচনে নীল প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ১৯টি পদে বিজয়ী হয়। সাদা প্যানেল কেবল ছয়টি সদস্য পদে জয়ী হয়েছিল।
×