ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাদারীপুরে সুদের টাকা আদায় করতে কিশোরীকে বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ৪ মার্চ ২০১৫

মাদারীপুরে সুদের টাকা আদায় করতে কিশোরীকে বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৩ মার্চ ॥ সুদের টাকা আদায় করতে শিখা আক্তার নামের এক কিশোরীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হাটের মধ্যে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে কতিপয় সুদ ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে কালকিনি উপজেলার গোপালপুর হাটে। অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে কালকিনি থানার পুলিশ লিটন সরদার ও সফুরা বেগম নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুর গ্রামের আদেল সরদারের স্ত্রী শাহীনা বেগম স্বামীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর কথা বলে কয়েক বছর আগে এলাকার একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় সোয়া ৩ লাখ টাকা সুদের বিনিময়ে এবং ধান দেয়ার শর্তে ঋণ নেয়। এরই মধ্যে আদেল সরদার মারা গেলে প্রভাবশালীরা টাকার জন্য বিধবা শাহীনার ওপর ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে এবং সুদের টাকা আদায় করতে এলাকায় একাধিক সালিশ হয়। কিন্তু টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে এবং পাওনাদারদের প্রতিদিন তাগিদের কারণে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে থাকে শাহীনা বেগম। শাহীনাকে বাড়িতে না পেয়ে পাওনাদাররা রবিবার সকালে ফজলা গাইন ও মান্নান গাইনের নেতৃত্বে শিখাকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় গোপালপুর হাটে। সেখানে নিয়ে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে জনসম্মুখে চালানো হয় নির্যাতন। এ সময় স্থানীয় মুরব্বিদের অনুরোধে শিখাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার পর লোকলজ্জা আর অপমানে শিখা একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে শিখা বলেন, ‘আমাদের কাছে যারা যে পরিমাণ টাকা পায়, তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি সুদ নিয়েছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের শেষ সম্বল বাড়ি-ঘর বিক্রি করতে গেলে সেখানেও তারা বাধা দেয়। ৫ লাখ টাকার সম্পত্তি মাত্র ৯০ হাজার টাকা দাম বলছে তারা। আমরা রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে রবিবার সকালে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হাটের মধ্যে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে।’
×