ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু

পেট্রোল বোমাবাজদের সঙ্গে কোন সংলাপ নয় ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৪ মার্চ ২০১৫

পেট্রোল বোমাবাজদের সঙ্গে কোন সংলাপ নয় ॥ তোফায়েল

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যারা আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ও পেট্রোলবোমায় মানুষ পুড়িয়ে মারে তাদের সঙ্গে কোন সংলাপ হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে। সংবিধান অনুযায়ীই সে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার চট্টগ্রামে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (সিআইটিএফ) উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনায় নগরীর পলোগ্রাউন্ডের সুবিশাল পরিসরে আয়োজিত এ বাণিজ্যমেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য এমএ লতিফ এমপি। বাণিজ্যমেলায় এবারও পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে রয়েছে থাইল্যান্ড। চিটাগাং চেম্বারের এটি ২৩তম আয়োজন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার বক্তব্যে বিএনপির আন্দোলনকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে নির্বাচনে আনার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব থেকে শুরু করে সংলাপে পর্যন্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এতে সাড়া দেননি। রাজনৈতিকভাবে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপি এখন আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। পেট্রোলবোমা নিক্ষেপকারীদের সঙ্গে কোন সংলাপ হতে পারে না। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে দেশে অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় আসত। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকা- বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ সরকারের অধীনে দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও মীরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণ হবে। বিএনপির কর্মসূচী জনগণ প্রত্যাখান করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়। ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও এমএ লতিফ এমপি তাদের বক্তব্যে বর্তমান সময়ে হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতা ও নৈরাজ্যের তীব্র নিন্দা করে বলেন, জনগণ পেট্রোলবোমাবাজদের প্রত্যাখান করেছে। উন্নয়নের জন্য তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কোন ধরনের নাশকতা চালিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করা যাবে না বলে তারা সতর্ক করে দেন। বর্তমান সরকার চট্টগ্রামের উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একের পর এক প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেনÑ চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুন নেওয়াজ সেলিম ও সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ। চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম জানান, দেশে বেসরকারী খাতে এটিই বৃহত্তম বাণিজ্যমেলা। প্রতিবছর এ মেলায় অন্তত অর্ধকোটি দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। এ মেলা চট্টগ্রামবাসীর কেনাকাটার পাশাপাশি বিনোদন ও আনন্দের অপার উপলক্ষ এনে দেয়। বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণকারী অনেক দেশীয় প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বৃহৎ শিল্পে সম্প্রসারিত হওয়ার মাধ্যমে ভারত, নেপাল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও ওমানসহ বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করছে। তিনি বলেন, ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষী চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্র্রি দেশে শিল্পায়ন ও বাণিজ্যের উন্নয়নে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ভূমিকা রেখে যাবে। চেম্বার সূত্রে জানানো হয়, পলোগ্রাউন্ডের প্রায় চার লক্ষ বর্গফুট এলাকায় চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে ৪শ’রও অধিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে থাকছে ২২টি প্রিমিয়ার গোল্ড প্যাভেলিয়ন, ২টি মিনি মেগা প্যাভেলিয়ন, ৮টি প্রিমিয়ার প্যাভেলিয়ন, ১৬টি স্ট্যান্ডার্ড প্যাভেলিয়ন, ১২৭টি প্রিমিয়ার মেগা বুথ, ৫০টি মেগা বুথ, ১০টি প্রিমিয়ার গোল্ড বুথ, ৩৮টি প্রিমিয়ার বুথ, ১৪টি স্ট্যান্ডার্ড বুথ ও ৩টি রেস্টুরেন্টসহ সর্বমোট ২৮টি প্যাভেলিয়ন ও ২৩৯টি স্টল। দেশের খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এতে অংশগ্রহণ করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারগণ মেলা পরিদর্শন করবেন। চীন, থাইল্যান্ড, ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল মেলা পরিদর্শন করবে। এতে করে সে সব দেশেও বাঙলাদেশী পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদী চিটাগাং চেম্বার। বিগত এগার বছরের ন্যায় এবারও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে থাকছে থাইল্যান্ড। প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে মেলায় অংশ নিচ্ছে দেশটি। এবারের বাণিজ্যমেলায় নিজস্ব পণ্য নিয়ে আর যে সব দেশ অংশগ্রহণ করছে সেগুলো হলো- ভারত, তুরস্ক, ইরান ও পাকিস্তান। প্রায় ২৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় সাজানো থাকবে বিদেশীদের স্টল।
×