ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

তিন বছর পর বাড়ছে ব্যয় ও সময় বিনিয়োগ বোর্ড ভবন নির্মাণে শ্লথগতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২ মার্চ ২০১৫

তিন বছর পর বাড়ছে ব্যয় ও সময় বিনিয়োগ বোর্ড ভবন নির্মাণে শ্লথগতি

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ বিনিয়োগ বোর্ডের নিজস্ব ভবন নির্মাণে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন হয়নি। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু এ সময়ে প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৪ কোটি ১ লাখ টাকা, যা মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ প্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো ব্যয় ও বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়ছে প্রকল্পটির। মূল ব্যয় ৯৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা থেকে ২৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১২৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। ব্যয় বৃদ্ধির এই সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। সেই সঙ্গে বাস্তবায়নের মেয়াদ দেড় বছর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। আগমীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। ভবন নির্মাণের অগ্রগতি কম হওয়ার কারণ বিষয়ে জানতে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র ম-লের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন বলে জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন। বিনিয়োগ বোর্ডে থেকে পরিকল্পনা কমিশনকে জানানো হয়েছে, প্রকল্পের জন্য রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্ধারিত স্থানে অবৈধ স্থাপনা, বস্তির অংশ, মাজার ও মসজিদ থাকায় সেগুলো অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য সঠিক সময় কাজ শুরু না হওয়ায় এমনটি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিনিয়োগ বোর্ড এবং গণপূর্ত অধিদফতর। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে জানান, বিনিয়োগ বোর্ডের দৈনন্দিন দাফতরিক কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য। প্রকল্পটি গুরুত্ব বিবেচনায় দায়িত্ব ও সচেতনতার সঙ্গে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে হলে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন সমাপ্ত করা সম্ভব হবে বলে প্রতীয়মান হয়। তাই প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বাড়িয়ে প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, বিনিয়োগ বোর্ড বাংলদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি। যেটি বর্তমানে একটি ভাড়া করা ভবনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্রায়সই বিনিয়োগ বোর্ডকে ভাড়াকৃত স্থানে সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামসহ বিভিন্ন দাফতরিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হয়। এতে সরকারের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। বিনিয়োগ বোর্ডের কোন নিজস্ব ভবন না থাকায় বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রয়োজনে ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় নিজস্ব একটি ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগ বোর্ডের জন্য তিনটি বেজমেন্টসহ একটি ১৪ তলা বিশিষ্ট নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য কনস্ট্রাকসন অব ১৪ স্টোরেড বিল্ডিং উইথ থ্রি বেজমেন্ট ফর হেড অফিস অব বোর্ড অব ইনভেসমেন্ট (বিওআই) এ্যাট শেরেবাংলা নগর ঢাকা নামের একটি প্রকল্প ২০১১ সালের ২১ জুন অনুমোদন দেয় একনেক। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ওকিছু নতুন বিষয়ের অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে।
×