ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;এরপর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করায় আর বাধা থাকবে না

কামারুজ্জামানের রিভিউ পিটিশন দাখিলের শেষ সময় ৫ মার্চ

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১ মার্চ ২০১৫

কামারুজ্জামানের রিভিউ পিটিশন দাখিলের শেষ সময় ৫ মার্চ

আরাফাত মুন্না ॥ একাত্তরের মানবতাবিরোধী কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সুপ্রীমকোর্টের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার সময়সীমা শেষ হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই। আগামী বৃহস্পতিবার ৫ মার্চ শেষ হবে রিভিউ দাখিলের জন্য থাকা ১৫ দিনের সময়সীমা। এর মধ্যে রিভিউ আবেদন দাখিল না করলে দণ্ড কার্যকরে আর কোন বাধা থাকবে না বলেই জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা দাবি করেন, সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তারা রিভিউ করতে পারবেন। তবে তাদের এই বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়েছেন এ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন সংক্রান্ত রায়ে স্পষ্ট বলা আছে আসামি রায় শোনার পর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে পারবেন। তিনি বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করার পর ১৯ ফেব্রুয়ারিই কামারুজ্জামানকে মৃত্যুপরোয়ানা ও রায় পড়ে শোনানো হয়েছে। সে হিসেবে ৫ মার্চ বৃহস্পতিবারই কামারুজ্জামানের রিভিউ করার শেষ দিন। এদিকে কামারুজ্জামানের আইনজীবী এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, কাদের মোল্লার রিভিউ সংক্রান্ত রায়ে রিভিউর বিষয়ে দুটি অপশন দেয়া আছে। একটি আসামি রায় শোনার পর এবং অন্যটি আইনজীবীরা সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, তবে আমরা সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই রিভিউ আবেদন দাখিল করব। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর বিকেলে তা পাঠানো হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ট্রাইব্যুনাল সন্ধ্যায় কামারুজ্জামানের মৃত্যুপরোয়ানা জারি করে। ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যুপরোয়ানার সঙ্গে সুপ্রীমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ও পৌঁছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। পরে ওই দিন বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ মৃত্যুপরোয়ানা ও পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয় কামারুজ্জামানকে। তিনি ওই সময় জানান, আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে রিভিউর সিদ্ধান্ত নেবেন। পরে কামারুজ্জামানের ইচ্ছা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি তার পাঁচ জন আইনজীবী তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি রিভিউ করতে বলেন। গত বছরের ৩ নবেম্বর সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদ- বহাল রাখেন। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণার সময় আদালত বলে, সর্বসম্মতিক্রমে কামারুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। অর্থাৎ- চার বিচারপতির মধ্যে তিন জনই কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহালের পক্ষে রায় দেন এবং একজন অপরাধ প্রমাণের বিষয়ে একমত হলেও মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করেন। তিনি কামারুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫৭৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে আপীল বিভাগ।
×