ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জন্মশতবর্ষে ছায়ানটের স্মরণে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১ মার্চ ২০১৫

জন্মশতবর্ষে ছায়ানটের স্মরণে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলার চারুশিল্পের ভিত্তিভূমি গড়েছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। চিত্রকলার চর্চার পাশাপাশি চারুশিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রাটাও শুরু হয়েছিল তাঁর নিবেদিত মননের ছোঁয়ায়। চলছে পথিকৃৎ এই শিল্পীর জন্মশতবর্ষের নানা আয়োজন। রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক শততম জন্মবর্ষে স্মরণ করা হচ্ছে কিংবদন্তি এই শিল্পীকে। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার বসন্ত সন্ধ্যায় গানে ও কথায় শিল্পীকে স্মরণ ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে সন্ধ্যায় হয় শিল্পাচার্যকে নিবেদিত এ অনুষ্ঠান। আয়োজনের সূচনা ছায়ানটের সহ-সভাপতি ডাঃ সারোয়ার আলীর স্বাগত কথন দিয়ে। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের মডারেটর অভিজিৎ রায়ের জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং হত্যাকারীদের প্রতি ধিক্কার জানান। এরপর তিনি জয়নুল আবেদিনের বিষয়ে আলোচনা করেন। শিল্পাচার্য প্রসঙ্গে বলেন, আমার কাছে জয়নুল আবেদিন বিস্ময়কর প্রতিভাধর একজন মানুষ। চল্লিশ দশকে বাঙালী মুসলিম সমাজে যখন কেউ বাংলা গান গাওয়ারও কথাও ভাবতে পারত না, তখন তিনি ছবি আঁকার চর্চা শুরু করেন। একপর্যায়ে এদেশে চারুকলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কেবল সাহসী মানুষের পক্ষেই এই ধরনের মহৎ কাজ করা সম্ভব। বতর্মানে যাঁরা দেশের চারুকলা ভুবনকে আলোকিত করে রেখেছেন তাঁরা সবাই জয়নুলের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা ও পাঠ নিয়েছেন। জয়নুলের ছবিতে শ্রমজীবী মানুষের জীবন অনেক বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। চিত্রকলার ক্ষেত্রে তিনি প্রথা ভাঙ্গেননি ঠিকই কিন্তু? সবসময় রক্ষণশীলতার বাধা ডিঙিয়ে শিল্পচর্চা প্রসারে কাজ করে গেছেন। তাঁর চিত্রকলা ও চিন্তায় সব সময়ই প্রাধান্য পেয়েছে লোকজ বিষয় । কথনে অংশ নেন ছায়ানট সভাপতি সন্্জীদা খাতুন। অনুষ্ঠানে শ্রোতা-দর্শকের স্বল্প সংখ্যাকে ‘মৃদু উপস্থিতি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন এই মৃদু উপস্থিতি দেখে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। তবে দেশের যে পরিস্থিতি, মানুষের মনে যে আতঙ্ক, তাতে এই উপস্থিতির স্বল্পতা মেনে নিতে হবে। ছায়ানটের প্রতিষ্ঠার সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, জয়নুল আবেদিন ছায়ানট বিদ্যায়তনের উদ্বোধন করেছিলেন ১৯৬৩ সালে। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওস্তাদ আয়াত আলী খাঁ। ওই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। সেই সময় ছায়ানটের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার উদয়ন বিদ্যালয়ের কাছাকাছি একটি স্থানে। সন্্জীদা খাতুনের স্বাগত বক্তব্যে জানান, অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা চিত্র-সমালোচক অধ্যাপক আবুল মনসুরকে। আবুল মনসুর জয়নুল আবেদিনের বিভিন্ন চিত্রকর্ম পর্দায় উপস্থাপন করে লেখা নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা করেন। আলোচনা পর্ব শেষে ছিল ছিল সংগীত পরিবেশনা। লোকসঙ্গীতের সঙ্গে ছিল রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত। লাইসা আহমেদ পরিবেশন করেন ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ’ গানটি। কানন বালা সরকার গেয়ে শোনান ‘আমার হাড় কালা করলামরে’ ও ‘সোনার ময়না পাখি’ গান দুটি। চন্দনা মজুমদারের কণ্ঠে শোনা যায় ‘আমার মনচোরারে কোথায় পাই’ আর ‘আমার বন্ধু দয়াময়’ গান দুটি। এছাড়াও একক কণ্ঠে গান শোনান মইদুল ইসলাম, ডালিয়া নওশীন ও আবুল কালাম আজাদ। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ॥ রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে অধ্যাপক ডাঃ আবু উবাইদ মুহম্মদ মুহসিন লিখিত ‘ক্যান্সার : আপনার যা জানা দরকার’ বইটির দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশনা উৎসব ও মোড়ক উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা। বিশেষ অতিথি ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ এফ.সি.এ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মোঃ ইমদাদুল হক আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক প্রখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ এম.এ হাই।
×