ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এআইইউবির সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী

শর্ত পূরণে ব্যর্থ প্রাইভেট ভার্সিটির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১ মার্চ ২০১৫

শর্ত পূরণে ব্যর্থ প্রাইভেট ভার্সিটির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার পাবলিক বা প্রাইভেট (বেসরকারী) বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোন পার্থক্য করে না। তারা সবাই দেশের সন্তান এবং জাতির ভবিষ্যত। তবে শুধু মুনাফার লক্ষ্যে পরিচালিত কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। শর্ত পূরণের সুযোগ হিসেবে সরকার তাদের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর মাঠে অনুষ্ঠিত আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) ১৫তম সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ওই সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন। বক্তব্য দেন এআইইউবি উপাচার্য কারমেন জেড ল্যামাগনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আবেদীন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সবার জন্যই আমরা মানসম্মত শিক্ষা এবং সব ধরনের সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। কিন্তু কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এভাবে তারা বেশি দিন চলতে পারবে না। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ সকল প্রকার ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখুন। নতুন জ্ঞান সৃষ্টির ওপর গুরত্ব আরোপ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সৃষ্ট জ্ঞান জাতির মৌলিক ও বিশেষ সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে পারে। এজন্য জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অনুসন্ধান করতে হবে। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বহুমাত্রিক শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার যথোপযুক্ত পরিকল্পনাও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থাকতে হবে। সমাবর্তন বক্তা পঙ্কজ শরন বলেন, শিক্ষা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শক্তি। তবে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত ও বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাকার্যক্রমে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুই দেশেই পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। নতুন সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, জীবনে তাৎক্ষণিক সাফল্য বা স্থায়ী ব্যর্থতা বলে কিছু নেই। নিজের স্বাতন্ত্র্যকে শ্রদ্ধা করে কাজের যে ক্ষেত্রের প্রতি আগ্রহ, সেখানেই লেগে থাকা উচিত। বাংলাদেশের জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে ভারতের লক্ষ্যও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। যৌথভাবে লক্ষ্য অর্জনে দুই দেশের শিক্ষিত তরুণরাই মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলেও তিনি মনে করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কারমেন জেড ল্যামাগনা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আবেদীন তাদের বক্তব্যে ডিগ্রিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থী ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত তাদের অভিভাবকদের অভিনন্দন জানান। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনের সাফল্যও কামনা করেন। এর আগে সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় সামরিক জাদুঘর এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরনেই ছিল সমাবর্তনের বিশেষ পোশাক- কালো গাউন ও মাথায় কালো ক্যাপ। শিক্ষাজীবনের বিশেষ এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে মা-বা ও অভিভাবকেরাও তাদের সঙ্গে ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এবারের সমাবর্তনে ২ হাজার ৭৫৫ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এর মধ্যে তিনজনকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক, আটজনকে ডাঃ আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক ও ১৪ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর পদক দেয়া হয়। চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রাপ্তরা হলেন ইলেকট্রনিক এ্যান্ড ইলেক্ট্র্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাফায়েত আহমেদ (স্নাতক), একই বিভাগের তাসনুভা তাসনীম (স্নাতকোত্তর) এবং প্রফেশনাল শাখায় জনস্বাস্থ্য বিভাগের নুসরাত খান (স্নাতকোত্তর)। এছাড়া অন্য কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুম্মা কুম লাউ-ডে (৯৬টি), মেঘনা কুম লাউ-ডে (১০১টি) ও কুম লাউ-ডে পদক প্রদান করা হয়।
×