চীনের শীর্ষ আদালত ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তাদের প্রতি পশ্চিমা ধাঁচের বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা পরিত্যাগ এবং ‘গণহত্যার প্রাপ্ত চিন্তাধারা’ প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রের প্রচার মাধ্যমে একথা বলা হয়। গণমাধ্যম, ভিন্নমত এবং ইন্টারনেটের ওপর কড়াকড়ি আরোপের এ সময়ের এই আহ্বান জানান হলো। দেশের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন বিচারপতি ঝাউ কিয়াংয়ের ওই আহ্বান চীনের সংস্কারের প্রত্যাশার প্রতি একটি আঘাত। খবর ওয়েবসাইটের।
চীনা সুপ্রীমকোর্টের মন্তব্য পাশ্চাত্যের প্রতি বেইজিংয়ের সর্বশেষ আক্রমণ এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংএর রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণের আরেকটি ইঙ্গিত।
পার্টি আভাস দিয়েছে যে, তারা রাজনৈতিক সংস্কারের পথে যাত্রা করবে না। যদিও আশা করা হয়েছিল সাবেক উদারপন্থী উপ-প্রধানমন্ত্রীর পুত্র শি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ হয়ত শিথিল করবেন। বুধবার সুপ্রীমকোর্টের পার্টি কমিটির এক বৈঠকে বলা হয়, চীন ‘বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা’ ও ‘ক্ষমতা পৃথকীকরণে’র পশ্চিমা ধারণায় সীমারেখা টানবে। রাষ্ট্র পরিচালিত চায়না নিউজ সার্ভিসের খবরে একথা বলা হয়। বৈঠকের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়, ‘দৃঢ়তার সঙ্গে পাশ্চাত্যের প্রাপ্ত চিন্তাভাবনা এবং ভুল দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিরোধ করুণ।’এতে বলা হয় ঝাও কিয়াং ‘অবিচলভাবে চীনা বৈশিষ্ট্যমূলক সমাজতান্ত্রিক পথ অনুসরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।’ তিনি বেইজিংয়ের অবস্থান পুনরুল্লেখ করে বলেন, বিশ্বের জনবহুল দেশ শাসন করার এটিই শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি। কমিউনিস্ট পার্টি দীর্ঘদিন ধরে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সর্বজনীন মানবাধিকারের ধারণাসহ পাশ্চাত্যের মূল্যবোধের বিরোধিতা করে আসছে। বিরোধিতার সুর আরও কর্কশ হয়ে ওঠে যখন শি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরও ‘মতাদর্শগত নির্দেশনা’ এবং মার্কসবাদ অধ্যয়নের আহ্বান জানান।
গত জানুয়ারিতে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, চীনকে অবশ্যই ‘পাশ্চাত্যের মূল্যবোধের’ বিকাশ ঘটায় এমন শিল্প সামগ্রীকে শ্রেণীকক্ষের বাইরে রাখতে হবে। গত বছর পার্টি দুর্নীতির মোকাবেলা এবং কর্মকর্তাদের বিচার বিভাগের ওপর প্রভাব বিস্তার কঠিনতর করে আইন প্রণয়ন ত্বরান্বিত করার অঙ্গীকার করে। একই সঙ্গে পার্টি আদালতের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের ওপরও জোর দেয়।