ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফের বার্সিলোনায় ধরাশায়ী ম্যানসিটি

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ফের বার্সিলোনায় ধরাশায়ী ম্যানসিটি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচের আগে সে কি হুঙ্কার! মনে হচ্ছিল স্প্যানিশ পরাশক্তিদের গিলে খাবে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু ময়দানী লড়াইয়ে সব ফিকে হয়ে যায়। বার্সিলোনার ছন্দময় ফুটবলের কাছে আবারও হার মানতে হয়েছে গতিধর ম্যানচেস্টার সিটিকে। মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে নিজেদের মাঠে অতিথি বার্সার কাছে ২-১ গোলে হার মানে সিটি। কাতালানদের জয়ের নায়ক উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ। সমালোচিত এই তারকা একাই করেন জোড়া গোল। সিটির হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন আর্জেন্টাইন তারকা সার্জিও এ্যাগুয়েরো। একই রাতে টুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে আরেক ম্যাচে আসরের বর্তমান রানার্সআপ বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাস। ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করেন কার্লোস তেভেজ ও আলভারো মোরাটা। জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ডের হয়ে গোল করেন মার্কো রিউস। প্রথম লেগের নিজ নিজ ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছে বার্সিলোনা ও জুভেন্টাস। গত মৌসুমেও একই মঞ্চে নিজেদের মাঠে বার্সার কাছে হেরেছিল সিটি। এ কারণে পরশু রাতে প্রতিশোধের মিশন ছিল ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির দলের। কিন্তু প্রতিশোধ দূরে থাক, আবারও হারের বেদনায় জ্বলতে হয়েছে ম্যানসিটিকে। লা লিগায় আগের ম্যাচে মালাগার কাছে হারলেও শুরু থেকেই সিটির উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে বার্সা। ১৩ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত লুইস এনরিকের দল। কিন্তু নেইমারের বাড়ানো বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন মেসি। কিছুক্ষণ পর সিটি গোলরক্ষক জো হার্টকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি সুয়ারেজ। ১৬ মিনিটে বার্সাকে এগিয়ে নেন সুয়ারেজ। মেসির দারুণ একটি ক্রস সিটি ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানি হেড করে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে তা থেকে গোল করেন উরুগুইয়ান তারকা। বার্সিলোর দ্বিতীয় গোলেও বড় অবদান মেসির। সিটির আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার জাবালেতাকে দুর্দান্ত এক ডজে বোকা বানিয়ে মেসি বাম প্রান্তে বল বাড়ান জর্ডি এ্যালবকে। এ্যালবার পাল্টা ক্রসে হার্টকে বোকা বানিয়ে আলত টোকায় গোল করেন সুয়ারেজ। বিরতির পর ম্যাচে ফিরতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাতে থাকে স্বাগতিকরা। ৫৪ মিনিটে এ্যাগুয়েরোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে ৬৯ মিনিটে এই এ্যাগুয়েরোই দারুণ গোল করে ব্যবধান ২-১ করেন। জ্যাভিয়ের মাশ্চেরানোকে বোকা বানিয়ে ডেভিড সিলভার বাড়িয়ে দেয়া বল ধরে বার্সার জালে পাঠান তিনি। এর পরপরই ৭৪ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সিটি ডিফেন্ডার গায়লে ক্লিসিকে। দশজনের দলে পরিণত হয়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি সিটি। উল্টো ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার মুহূর্তে মেসি পেনাল্টি মিস করলে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারায় বার্সা। মেসির নেয়া স্পট কিক সিটি গোলরক্ষক রুখে দিলে তা আসে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের সামনেই। ফিরতি বলেও হেড করে গোল করতে ব্যর্থতারই পরিচয় দেন সাবেক টানা চারবারের ফিফা সেরা ফুটবলার। এক বছর ধরেই বার বার পেনাল্টি মিসের মহড়া দিয়ে চলেছেন মেসি! মেসির পেনাল্টি মিসে বেশ বিরক্ত দেখা যায় সুয়ারেজকে। কেননা পেনাল্টি শটটি নেয়ার সুযোগ তাকে দেয়া হলে হয়ত বার্সিলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে তার ব্যক্তিগত হ্যাটট্রিকের অভিষেক হয়ে যেত। ম্যাচ শেষে অবশ্য কৌশলেই কথা বলেছেন সুয়ারেজ। বলেন, পেনাল্টি থেকে গোলটি পেলে আমরা ৩-১ ব্যবধানে জিতে যেতাম। সেটা আমদের জন্য আরও স্বস্তির হতো। পরের লেগে সিটির জন্য ফিরে আসাটা কষ্টসাধ্য হতো। ক্লাবের হয়ে এ পর্যন্ত ১২ পেনাল্টি মিস করেছেন মেসি। জাতীয় দলের হয়ে জার্মানি ও ব্রাজিলের বিরুদ্ধে আরও দুটি। সিটি সমর্থকদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন ম্যাচে সুপারফ্লপ বার্সা তারকা নেইমার। ম্যাচের ৮০ মিনিটে নেইমারকে তুলে নেন কোচ লুইস এনরিকে। এরপর ব্রাজিলিয়ান তারকা সিটির এক সমর্থকের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। সিটির ওই সমর্থক পর্তুগীজ ভাষায় তাকে কিছু বলছিলেন। কিছুক্ষণ ঝগড়ার পর পরিস্থিতি ঠা-া হয়। এরপর নেইমার আরেক সমর্থকের সঙ্গে সেলফি তোলেন। কিন্তু ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর নেইমার আবার ওই সমর্থকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা শুরু করেন। ম্যাচ শেষে টানেলে না গিয়ে নেইমার ওই সমর্থকের কাছে যান। তিনি আবার বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। পরে অবশ্য মাঠের এক কর্মীর হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়। সিটির ইয়াইয়া তোরের নাম লেখা জার্সি গায়ে পরা ওই সমর্থক নেইমারকে ডাইভ দেয়ার অপবাদ দিচ্ছিলেন। ম্যাচ শেষে নেইমার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি শুধু তার সঙ্গে খেলছিলাম। সে আমাকে অভিশাপ দিতে শুরু করে এবং আমি মজা করে শেষ করেছি।
×