ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের ইতিহাস নিয়ে দুটি গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের ইতিহাস নিয়ে দুটি গ্রন্থের প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেঘনা নদীর পশ্চিম প্রান্তের কীর্তিনাশা পদ্মা, ইছামতি, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা ও যুমনা বিধৌত দুই অঞ্চল বিক্রমপুর এবং মানিকগঞ্জ। শিক্ষা-সাহিত্য ও সংস্কৃতির পীঠস্থান পরস্পর সম্পর্কিত এই জনপদ দুটির রয়েছে হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য। আর এই দুই অঞ্চলের ইতিহাস এবং সেখানকার কীর্তিমান মানুষদের জীবনপঞ্জি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করে দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন মো. আজহারুল ইসলাম। বই দু’টি হলো দুই খ-ের ‘মানিকগঞ্জের শত মানিক’ এবং চার খ-ের ‘বিক্রমপুর : ইতিহাস ও ব্যক্তিত্ব’। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে সুলেখা লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ দু’টির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আর এ আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন নোবেলজয়ী ভারতীয় বাঙালী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন। অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। তাঁর বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে পুরো মিলনায়তনভর্তি শ্রোতা-দর্শক। বক্তব্যে বই দুটি সম্পর্কিত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেন বিশ্ববরেণ্য এই অর্থনীতিবিদ। বলেন, এই প্রামাণ্য গ্রন্থ দু’টি লেখকের বহুদিনের পরিশ্রমের ফসল। এ ধরনের বিষয় নিয়ে বই লেখা সহজ নয়। বিশেষ করে যেখানে থাকে ইতিহাসের মালমসলা। দুই অঞ্চলের নানা তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু চিঠি। এজন্য লেখককে অনেক খাটতে হয়েছে। আর কোন অঞ্চলের পরিপূর্ণ ইতিহাস লিখতে হলে যে বিচার-বুদ্ধির প্রয়োজন সেখানে পরিশ্রম থাকবেই। আর ওই দুই অঞ্চলের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে অমর্ত্য সেন বলেন, এই দুই স্থানের সঙ্গে রয়েছে আমার যোগসূত্র। পৈত্রিকভাবে সম্পর্ক রয়েছে মানিকগঞ্জের আর মায়ের দিক থেকে যুক্ত হয়েছে বিক্রমপুর। একজন নাগরিক হিসেবে দেশের নানা অংশের ইতিহাস জানা খুবই প্রয়োজনীয়। সেই বিবেচনায়ও বই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাস এবং অবিভক্ত বাংলার তথ্য উপস্থাপনে বই দু’টি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে অতিথিরা সবাই মিলে বই দু’টির মোড়ক উন্মোচন করেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন ভারতীয় হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সন্দ্বীপ চক্রবর্তী, সরকারী কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ, অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া, মানিকগঞ্জ সমিতির ঢাকা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম এবং মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান ভূঁইয়া। প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও সমাজবিজ্ঞানী ড. মীজানুর রহমান শেলী। আপন অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মো. আজহারুল ইসলাম। প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে প্রকাশনা উৎসব আয়োজক কমিটি। অন্য বক্তারা বলেন, অনেক দিনের গবেষণালব্ধ শ্রমের ফসলে গ্রন্থ দুটি রচনা করেছেন লেখক। বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন দুইটি পৃথক অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ফলে গ্রন্থ দুটি থেকে ভবিষ্যতে গবেষকরা নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারবে। আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসব ॥ দুই বাংলার সমকালীন ও সোনালী যুগের চলচ্চিত্র নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে শুরু হয়েছে আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসব। প্রয়াত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদকে উৎসর্গীকৃত ছয় দিনব্যাপী এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল মঙ্গলবার। প্রতিদিনের সূচী অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এদিনও চারটি পৃথক সময়সূচীতে প্রদর্শিত হয় কয়েকটি চলচ্চিত্র। সকালে সাড়ে ১০টায় প্রদর্শিত হয় তারেক মাসুদের ‘মুক্তির কথা’ এবং ‘সোনার বেড়ি’ ও ‘ইউনিসন’। বেলা সাড়ে ১২টায় দেখানো হয় ঋত্বিক ঘটক নির্মিত ছবি ‘অযান্ত্রিক’। বেলা সাড়ে ৩টায় প্রদর্শিত হয় শহীদুল ইসলাম খোকনের ছবি ‘ঘাতক’। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় দেখানো কৌশিক গাঙ্গুলী নির্মিত চলচ্চিত্র ‘অপুর পাঁচালী’।
×