ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে খালেদা মান্না গংয়ের গ্রেফতার দাবি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সংসদে খালেদা মান্না গংয়ের গ্রেফতার দাবি

সংসদ রিপোর্টার ॥ হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যার দায়ে খালেদা জিয়া এবং মাহমুদুর রহমান মান্না, সাদেক হোসেন খোকাসহ সন্ত্রাসের উস্কানীদাতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। সরকারী দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, বাংলাদেশে আর কোনদিন তৃতীয় শক্তি আসবে না। সেনাবাহিনীও কোনদিন ক্ষমতা দখল করবে না। তাই যারা মানুষ হত্যার হুকুম দিচ্ছেন, সন্ত্রাসী কর্মকা-ে উস্কানি দিচ্ছেন তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। তিনি কূটনীতিক ও বিদেশী অতিথিদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রেখে কথা বলার আহ্বান জানান। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন, উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, এ্যাডভোকেট তারানা হালিম, সানজিদা খানম, সেলিনা জাহান রিটা, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, বেগম সাবিহা নাহার, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় পার্টির এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, মাহজাবিন মোর্শেদ প্রমুূখ। সরকারী দলের প্রভাবশালী সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাদেক হোসেন খোকার টেলিফোন সংলাপের কথা উল্লেখ করে বলেন, এরা আরও লাশ ফেলার কথা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার কথা বলেন। টেলিফোনালাপসহ টকশ’তে যারা সন্ত্রাসী কর্মকা-কে উস্কানী দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আর বাংলাদেশে আর কোনদিন তৃতীয় শক্তি আসবে না। সেনাবাহিনীও আর কোনদিন ক্ষমতা দখলের সাহস পাবে না। প্রতিটি হত্যাকা-ের জন্য খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে দ্রুত তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি। সুশীল সমাজের কড়া সমালোচনা করে শেখ সেলিম বলেন, কিছু সুশীল সংলাপের কথা বলেনÑ কিন্তু কার সঙ্গে সংলাপ। সুশীল সমাজ কোথায় থেকে এলো, কে তাদের সুশীল বানালো? এরা নিজেরা নিজেদের সুশীল বানিয়েছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ক’জন সুশীল অংশ নিয়েছিল, বরং অধিকাংশ বিরোধিতা করেছিল। এরা অনির্বাচিত সরকারে বিশ্বাসী, এদের সঙ্গে জনগণের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এতো লাশের ওপর দিয়ে জঙ্গী-খুনী-নাশকতাকারীদের সঙ্গে শেখ হাসিনা কখনই সংলাপ করতে পারে না, করবে না। বরং এ সব নাশকতাকারীদের কঠোরহস্তে দমন করতে হবে। জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম বলেন, নির্বাচনে না এসে বিএনপির নেতৃত্বে একটি জোট এখন পোড়ামাটির নীতি ঘোষণা করেছে, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সারাদেশকে বার্ন ইউনিটে পরিণত করেছে। এই মুত্যুর জন্য দায়ী কারা? হুকুমদাতা কে? ৬৮ হাজার গ্রাম-বাংলার বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হচ্ছে। যারা এভাবে মানুষ হত্যা করছে তারা কী সব আইনের উর্ধে? জাতীয় পার্টির নাজমুল হক প্রধান বলেন, আগে মীরজাফর ছিল, একাত্তরে রাজাকার-আলবদর ছিল, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা ছিল, এখন খালেদা জিয়া তার পুত্র ও জামায়াতকে নিয়ে দেশ, জনগণ ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, খুনী-সন্ত্রাসী ও জঙ্গী নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোন সংলাপ হতে পারে না। যারা সংলাপের কথা বলেন, তারা কার্যত খালেদা জিয়ার নাশকতা-সহিংসতা ও মানুষকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার সমর্থক। এ্যাডভোকেট তারানা হালিম বলেন, খালেদা জিয়া লাশ ফেলেই যাচ্ছেন, আর খোকা-মান্নারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার কথা বলছেন। এটা রাজনীতি নয়, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ ও দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। দেশের জনগণের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া জাহান্নামের আগুন জ্বালিয়েছেন। দেশের জনগণকে জিম্মি করে এখন দাবি আদায়ের কৌশল নিয়েছে। এ কৌশল মেনে নিয়ে ভবিষ্যতে সন্ত্রাস-নাশকতাই উৎসাহিত হবে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। সন্ত্রাস দিয়ে সংলাপে বাধ্য করা যাবে না। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি বলেন, গালকাটা খোকা ও নষ্ট মান্নারা আরও মানুষ মারা ষড়যন্ত্র করছে। এরা সুশীল নয়, এরা উচ্ছিষ্ট। এরা জঙ্গী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে যান, বার্ন ইউনিটে দগ্ধদের দেখতে যান না। এদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সানজিদা খানম অবিলম্বে নাশকতা ও মানুষ হত্যার নির্দেশদাতা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বলেন, হরতাল-অবরোধের নামে শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার দায় কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না খালেদা জিয়া। এজন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে। স্বতন্ত্র এমপি তাহজীবের প্রতীকি ওয়াকআউট ॥ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক সফর ও তিস্তা ইস্যু নিয়ে সংসদে কথা বলতে দাঁড়ান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী। পয়েন্ট অব অর্ডারে তার বক্তব্যে বিধিসম্মত না হওয়ায় মাইক বন্ধ করে দেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। কিছুক্ষণ পর সাংবাদিক লাউঞ্জে এসে তাহজীব সিদ্দিকী জানান, মাইক বন্ধ করার প্রতিবাদে তিনি সংসদ থেকে প্রতীকি ওয়াকআউট করেছেন।
×