ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

’২০ সালের আগেই সৌর বিদ্যুত সুবিধা পাবে অর্ধেক জনগোষ্ঠী

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

’২০ সালের আগেই সৌর বিদ্যুত সুবিধা পাবে অর্ধেক  জনগোষ্ঠী

শাহীন রহমান ॥ আগামী ২০২০ সালের আগেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যাবে সৌরবিদ্যুত সুবিধা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতোমধ্যে দেশে সৌরবিদ্যুত ব্যবহারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। সৌরবিদ্যুত ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে অচিরেই বাংলাদেশ সোলার ন্যাশনে পরিণত হতে যাচ্ছে। তাদের মতে সোলার হোম সিস্টেমের পাশাপাশি সোলার পাম্প, সোলার মিনিগ্রিডসহ বিভিন্ন ধরনের বড় প্রকল্পের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে এসবের বেশিরভাগ হচ্ছে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে। ব্রাইটগ্রিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান দিপাল বড়ুয়ার মতে, দেশে যেহারে সৌরবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে তাতে অচিরেই বাংলাদেশ সোলার ন্যাশনে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী সৌরবিদ্যুত ব্যবহারে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এশিয়ার অন্যতম দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে ৩২ লাখের বেশি সোলার গ্রাহক রয়েছে। প্রতি মাসে সৌরবিদ্যুত ব্যবহারকারীর সংখ্যাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার ঘোষণা দিয়েছে ২০১৭ সালের মধ্যে দেশে সৌরবিদ্যুত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬০ লাখে উন্নীত করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি ঘোষণা বাস্তবায়ন করা গেলে ২০২০ সালের মধ্যে অর্ধেক জনগোষ্ঠীর কাছে সৌরবিদ্যুত সুবিধা পৌঁছে যাবে। দেশে এখন পর্যন্ত সৌরবিদ্যুত ব্যবহারকারীদের মধ্যে সোলার হোম সিস্টেমই সবচেয়ে বেশি রয়েছে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিদ্যুত ব্যবহারের জন্য সবাই হোম সিস্টেমের প্রতি বেশি ঝুঁকছে। এর বাইরে বেসরকারিভাবে সোলার মিনিগ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুত সুবিধা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ চেষ্টায় তারা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। সোলার পাম্প ইতোমধ্যে দেশে জনপ্রিয় হয়েছে। এছাড়া সোলার লণ্ঠন, সোলার হিটার, সোলার কুকারসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার রয়েছে দেশে। বিদ্যুত ব্যবহারের ক্ষেত্রে এখন জাতীয় গ্রিডের দিকে চেয়ে থাকতে হচ্ছে না কারও। যে কেউ ইচ্ছে করলেই সহজেই সৌরবিদ্যুত ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেশে শতাধিক সোলার পাম্প বসিয়ে সেচকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সোলার হোম সিস্টেমের পাশাপাশি এবার সোলার মিনিগ্রিড প্রকল্প নিয়ে দেশে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সোলার মিনিগ্রিড বসিয়ে বিদ্যুত উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বড় গ্রিড তৈরির সরকারী প্রকল্প ব্যর্থ হচ্ছে, সেখানে সামান্য খরচেই সোলার মিনিগ্রিড প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। দেশের যেসব এলাকায় জাতীয় গ্রিড পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না সেসব এলাকায় পাড়া বা মহল্লাভিত্তিক সোলার মিনিগ্রিড করে বিদ্যুতের সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হবে। দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন ও সম্প্রসারণে শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ইডকল) নামের প্রতিষ্ঠানটি। দেশে সম্ভাবনাময় সৌরবিদ্যুত উৎপাদন ছাড়াও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ইডকলের সহায়তায় দেশে সৌর বিদ্যুত উৎপাদন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। সোলার হোম সিস্টেম জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সোলার মিনিগ্রিড ও সোলার সেচ প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রিনিউএ্যাবল এনার্জির টেকনিক্যাল ইউনিট হেড ওয়াহিদুর রহমান বলেন, সৌরবিদ্যুত উৎপাদনে সোলার সিস্টেম সফলতার পাওয়ার পর এখন বিদ্যুত উৎপাদনের বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইডকল সোলার মিনিগ্রিড প্রকল্প হাতে নিয়ে সফলতাও পেয়েছে। তিনি বলেন, সারাদেশে সোলার মিনিগ্রিডের ৭ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি গ্রিড থেকে ৫শ’ পরিবারের বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। বাকি ছয়টির মধ্যে কয়েকটি কাজ শেষ হওয়ার পথে রয়েছে। বাকিগুলো এখনও প্রকল্প পর্যায়ে রয়েছে।
×