ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাধারণ মানুষ চায় এ্যাকশন

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সাধারণ মানুষ চায় এ্যাকশন

দেশের অন্যতম প্রধান দৈনিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী জনকণ্ঠের প্রতি শনিবারের চতুরঙ্গ পাতায় আমার কলামের কিছু নিয়মিত পাঠক আছেন, যাঁরা প্রায়ই সেল-ফোনে কথা বলেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমার লেখার দুর্বলতা, ভুল-ত্রুটি, লেপসেস যেমন তুলে ধরেন তেমনি নানান পরামর্শ দিয়ে কলাম সমৃদ্ধ করেন। কখনও-সখনও তথ্য দিয়ে আমাকে সাহায্য করেন। অভিযোগেরও অন্ত থাকে না। অবশ্য তাদের অভিযোগ আমাকে সতর্ক হয়ে কলম ধরতে সাহায্য করে। গত সপ্তায় আমার কলামের শিরোনাম ছিলÑ ‘ছিঃ ছিঃ তুমি এতো খারাপ?’ পেট্রোলবোমা মেরে শিশু-নারীসহ প্রায় ১০০ মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যাকারীদের গডমাদারের তিরস্কারে এর চেয়ে শোভন ভাষা আমার জানা ছিল না বলে এক টিভি নাটকের সংলাপ শিরোনামে ব্যবহার করেছি। পাঠক খুশী হলেন, না ক্ষুব্ধ হলেন বুঝতে পারিনি। কেবল এটুকু বুঝলাম তিনি পেট্রোলবোমা ও গান পাউডারে মানুষ হত্যার দ্রুত অবসান হোক চান। সরকারের মন্ত্রী নেতা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় কর্তাদের বড় বড় বুলি মানুষ শুনছে। কোন এ্যাকশন দেখছে না। ‘একজনের বদলে দশ জনের প্রাণ রক্ষা করতে পারলে মন্দ কী’ (?) বা ‘পুলিশের হাতে অস্ত্র হাডুডু খেলার জন্য দেয়া হয়নি’ এমনি কত কথা। অথচ প্রতিনিয়ত মানুষ পুড়ছে, ট্রেন-বাস-ট্রাক-রিকশা-অটোরিকশা ভ্যান পুড়ছে, পুড়ছে গরিব সাধারণ শ্রমজীবী-কর্মজীবী-কৃষিজীবী মানুষের স্বপ্নগুলো। এরই মধ্যে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, যাদের মধ্যে দেড় বছরের শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারী রয়েছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পেট্রোলবোমা বা গান পাউডারের আগুনে পুড়ে ঝলসানো শরীরের অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছে শত শত মানুষ। এই মানুষরা কেউ রাজনীতি করে না, স্রেফ পরিবারের সদস্যদের মুখে ডাল-ভাত তুলে দেয়ার জন্য কেউ গাড়ির স্টিয়ারিং-এ বসেছে, কেউবা কর্মস্থলে যাবার জন্য বাস-ট্রেন-ভ্যান যা পাচ্ছে তাতে চড়ে বসছে, কেউবা রিকশা-অটোরিকশা নিয়ে রাজপথে বেরোচ্ছে। এরা কোন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে ঢিল মারে না, কারও বাড়া ভাতে ছাই দেয় না, তবু একটি পেট্রোলবোমা বা কিছু গান পাউডারে জীবনের পর জীবন কেড়ে নিচ্ছে, যারা বেঁচে যাচ্ছে তারাও কোনদিন জীবনটাকে টানতে পারবে না। পাঠকের প্রশ্ন পেট্রোলবোমা হামলাকারীরা চিহ্নিত, তাদের গডমাদার চিহ্নিত, তাদের বিদেশী প্রভুও চিহ্নিত, তবু কেন এই নিষ্ঠুরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। নাকি যারা দায়িত্বে আছেন তারা বন্ধ করতে চাচ্ছেন না? তবে কি এটাই ঠিক যে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনীতি সব কিছুর রন্ধ্রে রন্ধ্রে জামায়াত-শিবির, রাজাকার-আল-বদররা লুকিয়ে আছে এবং তারা তাদের কাজ করে যাচ্ছে? আর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারীরা অচেতন হয়ে আছেন? এসব প্রশ্ন আজ সাধারণ মানুষের। তারা গণতন্ত্র বোঝে না, কেবল জীবনটা বাঁচুক চায়। যারা চোরাগোপ্তা হামলা করে, সাধারণত তাদের দুর্বল মনে করা হয়। দুর্বলতার কারণেই তারা প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসতে পারছে নাÑ এ ধারণা এখন অকেজো। তার প্রমাণ বাংলাদেশের জামায়াত-শিবির, হুজি, হিজবুল মুজাহিদীন, হিজবুত তাহরির এইসব ধর্মের লেবাসে সন্ত্রাসী-পেট্রোলবোমাবাজরা মুসলিম ব্রাদারহুড, আল-কায়েদা, তালেবান, বোকো হারাম, আইএস-এর মতো (তথাকথিত) ইসলামিস্ট টেরোরিস্টদের বাংলাদেশী এজেন্ট বা শাখা। নাম যাই হোক জামায়াত-শিবির ওদের এজেন্ট হিসেবেই একটি ‘ডেফিনিট টার্গেট’ নিয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার ওপর তাদের মাথার ওপর রয়েছেন বিএনপি নামক দলটির প্রধান বেগম খালেদা জিয়া ও তার দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দেশত্যাগী পুত্র তারেক রহমান। এই অর্বাচীন পুত্রটি শিবিরকে বলে এক মায়ের পেটের দুই ভাই। তা বিএনপির মায়ের পেটের ভাই না জামায়াতী-মায়ের পেটের ভাই তা তারেক পরিষ্কার করেনি। জামায়াতী-মায়ের পেটের দুই ভাই বলে ধরে নেয়া যায়। এটা বাস্তবতা। এসব আজ আর গোপন কিছু নয়। গ্রামের একজন অতি সাধারণ মানুষও তা ভালভাবেই জানেন। তবু তাদের দমানো যাচ্ছে না কেন? তাদের হাত এত লম্বা হয়েছে যে, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে পর্যন্ত বোমা ফাটাচ্ছে। পাঠকের কথা হলো, এখন ক্ষমতায় তো মহাজোট এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর হাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত। তবু দুর্বলতাটি কোথায়? আমি পাঠককে বোঝাবার চেষ্টা করলাম একটি পরিস্থিতি যখন সৃষ্টি হয়েছে তখন সামাল দিতে সময় তো লাগবেই। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই রাষ্ট্রবিরোধী, গণবিরোধী, ইসলামবিরোধী, শুভ্রতাবিরোধী হায়েনা জামায়াত-শিবির ও তাদের গডমাদারের শেকড় উৎপাটিত হবেই। এরই মধ্যে তাদের শবযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। বললাম, ১৯৭১ সালেও কিছু মানুষের মধ্যে এমন হতাশা দেখেছি। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ করতেন এমন লোকও ছিলেন। আমরা প্রাণপণ লড়াই করে চলেছি। আগস্ট- সেপ্টেম্বরের দিকে রাজাকারের উৎপাত একটু বেড়ে যায়, তখন কিছু মানুষকে বলতে শুনেছি, ভাই, আমরা বাঁচব তো? তাদের অভয় দিয়েছি, আমরা বাঁচব এবং বাঁচার মতই বাঁচব। আমরা বেঁচেছি। পাকিস্তানী মিলিটারী হায়েনা ও তাদের এ দেশীয় সহযোগী জানোয়ারদের পরাভূত করে স্বাধীনতা এনেছি। আজও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরাই জিতব ইনশাল্লাহ। খালেদা জিয়া এরই মধ্যে গাতায় পড়েছেন, তার দিন শেষ। পুত্রধন বড়জোর আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিলে অন্ধকার জগতের বাসিন্দা হতে পারবে। এর বাইরে তার কোন ভবিষ্যৎ নেই। অর্থাৎ মা বেটার অগস্ত্যযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। কেবল কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী এবং কিছু মিডিয়া তাদের মই দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখছে এখন। অবশ্য এরা ভাড়াখাঁটা বুদ্ধিজীবী। যত কুবুদ্ধি দিয়ে এরাই খালেদা জিয়াকে কুপথে নিয়ে যাচ্ছে। এখন কোমর বেঁধে নেমেও আর তুলতে পারছে না। লাভ হয়েছে জামায়াত-শিবিরের, জাতীয়তাবাদী (মূলত বিজাতীয়তাবাদী) দলটাকে খেয়ে ফেলেছে। বেশ কিছুকাল আমি টিভি টক-শো দেখতাম না। আকর্ষণ ছিল না। টক-শোগুলো মনে হতো কোন বিএনপি-জামায়াত জোটের ক্যাডারের ড্রয়িং রুমের রাজনৈতিক চক্রান্ত। কথাবার্তা মানে তো বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিষোদগারই বেশি। এমনকি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও বেআদবি। পলাতক আসামি লন্ডনে কি বলল না বলল সব লাইভ দেখানো হয় এমন ইতিহাসও আছে। যে কারণে দুই এক মিনিটের বেশি টক-শোর সামনে বসতে পারতাম না। ইদানীং টক-শো দেখি। দেখতে হয় এ জন্য যে এতে করে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ বা বিশিষ্ট নাগরিকদের মুখাবয়বের আড়ালে জঘন্য কুৎসিত চেহারাটা আবিষ্কার করতে পারি। এরা যে কত খারাপ তা সামনে চলে আসে। এক্ষেত্রে আমি কৃতিত্ব দেব কিছু চ্যানেলের কয়েকজন তরুণ সঞ্চালককে। তারা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ওদের কুৎসিত চেহারার নেকাবটা উন্মোচন করে দিচ্ছে। সেদিন দেখলাম ৭১ টিভি-এর টকশোতে নবনীতা চৌধুরীর প্রশ্নোত্তর দিতে না পেরে এক সাংবাদিক নেতা (রাজাকারপন্থী এবং রাজাকারের কাগজেরও তৃতীয় পর্যায়ের সাংবাদিক) টক-শোর মাঝখানে বিরতির মধ্যে চলে যান। যাবার আগে জোর গলায় বলছিলেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ছাত্রলীগ করতেন? টক-শোতে অপর সাংবাদিক মানিক তাঁকে প্রশ্ন করেন আপনি কোথায় লেখাপড়া করেছেন, কখন ছাত্রলীগ করেছেন, কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? এর জবাব দেননি। তবে তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে অন্তত দু’বার দেখা করেছেন এরই মধ্যে। একবার সম্ভবত চেয়েও পারেননি। তারপরও লক্ষ্য করুন এতদিন ছিলেন সুশীল সমাজ এখন হয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিক এমন একজন ড. কামাল হোসেন, আরেকজন মাহমুদুর রহমান মান্না- বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই এঁরা দু’জনই আওয়ামী লীগ করতেন। হয়ত এমন কিছু চেয়েছিলেন এবং পাননি বলে পাকিস্তান আমলের আমেনা বেগম বা স্বাধীনতার পর কাদের সিদ্দিকীর (প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুনের ভাষায় ব্রিজ সিদ্দিকী) মতো বিপ্লবী হয়েছেন। আবার কেউ কাফনের কাপড় পরে বিশিষ্ট নাগরিক হয়েছেন, কয়েকজন আছেন যারা এক সময় একটি অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন, ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। এখন হয়েছেন সুশীল সমাজ বা বিশিষ্ট নাগরিক। আকবর আলী খানের মতো কিছু প্রতাপশালী আমলাও আজ বিশিষ্ট নাগরিক। আমলা থাকাকালে জাতির কোন্ কাজটি করেছেন তার একটা হিসেব পাওয়া দরকার। আইয়ুব আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোনেম খাঁ ও এনএসএফের দালাল ভিসি ড. এম ও গণির পুত্র বর্তমান বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুক নিউইয়র্কে পালিয়ে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে হরতাল-অবরোধ সম্পর্কে বলেন, “ডযধঃ বীধস? চবড়ঢ়ষব ড়ভ ঃযব বহঃরৎব পড়ঁহঃৎু ধৎব হড়ি রহ ধ ঃড়ঁময ঃবংঃ. ঞযব নরম পযধষষবহমব রং ঃড় ঢ়ধংং ঃযরং ঃবংঃ...” (ঞযব উধরষু ঝঃধৎ, ১৯ ঋবন. ২০১৫), এরপরও তথাকথিত বিশিষ্ট নাগরিকরা কোন কথা বলেন না। বলবেন কি করে? তারা যে শত চেষ্টা করেও কেবল চারিত্রিক কারণেই সমাজের শীর্ষে আসতে পারছেন না। বদিউল মজুমদার নামের ভদ্রলোক সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। নইলে জামায়াত-শিবিরের মতো ঘৃণ্য রাজাকার দেশদ্রোহীরা যে জোটের আশ্রয়ে দেশব্যাপী মানুষ পুড়িয়ে মারছে সেই জোটের ‘অর্ধ শিক্ষিত’ বা ‘অশিক্ষিত’ নেতা মা-বেটার অধীনে রাজনীতি করে বা তথাকথিত সুশীল সমাজ হিসেবে সমর্থন করেন কি করে? করেন এ জন্য যে, যদি কোন মিলি-ভাই আসেন, তাহলে হয়তবা এডভাইজারের একটা চাকরি জুটলেও জুটতে পারে? নইলে তারা ওই মা বেটার তত্ত্বাবধানে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনাসহ গোটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে শেষ করে দেয়ার জন্য গ্রেনেড হামলার বিরুদ্ধে নীরবতা অবলম্বন কিংবা দেশব্যাপী পেট্রোলবোমায় নারী-শিশুসহ শত শত হতাহত মানুষের পোড়া শরীরের গন্ধও তাদের নাকে না ঢুকলেও সংলাপ সংলাপ করে গলা ফাটাচ্ছেন। আসলে তা সঙদের লাফ ছাড়া আর কিছু নয়। বন্ধু প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন, বন্ধু প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান, বন্ধু সাংবাদিক স্বদেশ রায় এবং শ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এরপর আমার আর এ ব্যাপারে কলম চালানোর প্রয়োজন নেই। তবে গত কলামের পাদটিকায় আমি একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলামÑ আমাদের জাতীয় গৌরব (?) শান্তির জন্য নোবেল লরেট প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস কোথায়? উইকিপিডিয়ায় দেখলাম প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূসের জন্ম ১৯৪০ সালে ২৮ জুন চট্টগ্রামে। লেখাপড়া করেছেন চট্টগ্রামে এবং ঢাকায়। পিএইচডি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানডারবিল্ট ইউনিভার্সিটিতে এবং বিশ্বের সেরা একাডেমিক পুরস্কার নোবেল পেয়েছেন ২০০৬ সালে। এর বাইরে কত যে পুরস্কার পেয়েছেন তা লিখতে গেলে বইয়ের পর বই লিখতে হবে। দেশে তো ছিলেনই, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটি বা কমিশনের চেয়ারম্যান বা সদস্য হয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বোর্ডের এডভাইজার হয়েছেন এমন সংস্থার সংখ্যা শতাধিক। মার্কিন মুলুকের হিলারী দম্পতি কিংবা সুইডেনের রানী সুফিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ফার্স্ট লেডিগণ তার বন্ধু। এই মাপের মানুষ তিনি। নোবেল শান্তির পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি নিজেই ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘বাংলাদেশের মানুষ এক রাতে ১০ ফুট লম্বা হয়ে গেছে।’ সত্যি সত্যি আমরা অনেক লম্বা হয়ে গেছিলাম। পরে দেখলাম তার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার একটা লোভ কাজ করছে। তিনি রাজনীতিকদের ‘করাপ্ট’ বলে নিজেই একটা রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিলেন। মানুষ বলতে লাগল প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূস এবার রাষ্ট্রপতি/প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি তাঁর দলের নাম দিলেন ‘নাগরিক শক্তি’ (ঈরঃরুবহ’ং ঢ়ড়বিৎ)। তাঁর দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তখন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের নাম শোনা গিয়েছিল। প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠনকে বাংলাদেশের ১০ ফুট লম্বা নাগরিকরা পছন্দ করেননি। তারপর একদিন শোনা গেল তিনি ক্ষ্যামা দিয়েছেন, দল করবেন না। করলেন না। কিন্তু প্রশ্ন হলো দেশের সঙ্কটকালে আমাদের দেশের গৌরব প্রফেসর ইউনূসকে কোন ভূমিকা রাখতে দেখছি না- না ২০১৩ সালে, না গত জানুয়ারি থেকে। তিনি কি তবে অভিমান করেছেন? না-কি রহস্য মানব? ঢাকা- ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×