ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্যবস্তু আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী

রাজশাহী শিবিরের কৌশল ॥ ছদ্মবেশে গুপ্ত হামলা

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রাজশাহী শিবিরের কৌশল ॥ ছদ্মবেশে গুপ্ত হামলা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ জনরোষে কোণঠাসা বিএনপি ও জামায়াত-শিবির এখনও নাশকতার পথেই হাঁটছে। তবে ধরন পাল্টে এখন ছদ্মবেশ ধারণ করে সরাসরি হামলা চালাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে ওত পেতে থেকে। এখন তাদের হামলার টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন সরকার সমর্থিত দলের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে সরকার সমর্থিত আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে টার্গেট করে তাদের ওপর হামলা চলাচ্ছে। আবার শুরু করেছে হাত-পায়ের রগ কাটার সেই পুরনো সংস্কৃতি। এই মিশনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে শিবির অধ্যুষিত বিনোদপুর এলাকায় মেহেদী হাসান ইয়ামিন নামের এক যুবলীগ নেতার হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া তার পায়ে গুলিও চালিয়েছে হামলাকারীরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগকর্মী ইশতিয়াক আহমেদ ঈসা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর বিনোদপুর এলাকায় কমেলা হক কলেজের সামনে মুখোশধারী দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন তাঁরা। আহত ইয়ামিন নগরীর মীর্জাপুর এলাকায় আসাদের ছেলে। তিনি নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া মতিহার থানার ছাত্রলীগকর্মী ঈসা একই এলাকার গাজীউল ইসলাম গাজীর ছেলে। আহতাবস্থায় রাতেই তাঁদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাঁদের অবস্থা এখন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, কমেলা হক ডিগ্রী কলেজের কাছে একটি চায়ের দোকনে বসে ইয়ামিন, ঈসাসহ কয়েকজন চা পান করছিলেন। ওই সময় ১০ থেকে ১২ জনের মুখোশধারী একটি দল সেখানে হামলা চালায়। ওরা সবাই শিবিরের ক্যাডার বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা চার থেকে পাঁচটি ককটেল ফাটিয়ে এবং গুলি ছুড়ে আতঙ্ক ছড়ালে অন্যরা পালিয়ে যান। তবে আটকা পড়েন যুবলীগ নেতা ইয়ামিন ও ছাত্রলীগকর্মী ঈসা। হামলাকারীরা ইয়ামিনের বাম হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। গুলি চালায় হাঁটুর উপরে। এছাড়া ঈসার দুই পায়ের ঊরুতে গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা আহতাবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নেয়। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলাকারীদের প্রায় শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকজন আটকও হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি। রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আশরাফুল ইসলাম জানান, ইয়ামিনের বাম পায়ের গোড়ালি ও বাম হাতের কব্জিতে গুরুতর জখম আছে। তাঁর রগের কতটা ক্ষতি হয়েছে তা দেখা হচ্ছে। এছাড়াও ঈসার দুই পায়ের ঊরুতে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এদিকে গুপ্ত হামলায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাতেই রামেক হাসপাতালে তাঁদের দেখতে গিয়ে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার জানান, জনরোষে তারা এখন প্রকাশ্যে আসতে পারছে না। তাই ছদ্মবেশে থেকে বেছে বেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে। তারা ছদ্মবেশী জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা ছদ্মবেশে থেকে বিভিন্ন নাশকতা চালাচ্ছে। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা থাকলেও বিচ্ছিন্নভাবে তারা নির্জন স্থানে ও ফাঁকা সড়কে হামলায় লিপ্ত হচ্ছে। সুযোগ পেলে পুলিশের ওপরও হামলা চালাচ্ছে তারা।
×