ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্রুত মন্দা কাটিয়ে উঠছে জাপান

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দ্রুত মন্দা কাটিয়ে উঠছে জাপান

জাপানের সর্বশেষ মন্দা পরিস্থিতি ছিল অপ্রত্যাশিতভাবে স্বল্পস্থায়ী। সোমবার সরকারী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জাপানী অর্থনীতি ২০১৪’র শেষ নাগাদ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে এসেছে। এর আগে বছরের মাঝামাঝি নাগাদ দুঃখজনক আকস্মিক মন্দার পর প্রবৃদ্ধিকে চাঙ্গা করে তোলা এবং অনড় মুদ্রা সঙ্কোচন পরিস্থিতির অবসান ঘটানোর প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের প্রচেষ্টার ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল। জাপানী অর্থনীতির অসংখ্য অধোগতির মতো সর্বশেষ মন্দা অবশ্য মাত্র দুই কোয়ার্টার ত্রৈমাত্রিক স্থায়ী হয়েছিল। ১৯৯৭ থেকে জাপানের অর্থনীতিতে ৬টি অধোগতি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তবু বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জনের অবস্থায় ফিরে যাওয়া তেমন আশাব্যাঞ্জক ছিল না এবং এতে এই উদ্বেগও দূরীভূত হবে না যে, আবের দুই বছরের চাঙ্গা করার পদক্ষেপ সত্ত্বেও জাপানের অর্থনীতি মৌলিকভাবে ভঙ্গুরই রয়ে গেছে। জাপানী ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান মিজুহো সিকিউরিটিজের একজন অর্থনীতিবিদ ইয়াসুনারি উয়েনো বলেন, ‘অর্থনীতি সবচেয়ে খারাপ পর্যায় অতিক্রম করে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে তবে এর গতি অনেক মন্থর থেকে যাবে মনে হয়। ক্যাবিনেট দফতর থেকে প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, ডিসেম্বরে সমাপ্ত কোয়ার্টারে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বার্ষিক ২.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। অর্থনীতিবিদরা আরও আশাবাদী হয়ে গড়পরতা বিকাশের হার ৩.৭ শতাংশ হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। ২০১২’র শেষের দিকে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করে আবে প্রবৃদ্ধিবান্ধব একগুচ্ছ নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন যা আবেনমিক্্স বলে পরিচিতি পেয়েছে। অর্থনীতি জোরদারের বেশিরভাগ পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- ব্যাংক অব জাপান, যারা সরকারী বন্ড এবং অন্যান্য সম্পদ ক্রয় করে আর্থিক সম্পদ বৃদ্ধি করছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সংস্কার কর্মসূচীর জন্য ২০১৫ হবে আবের জন্য আরও সহানুভূতিশীল বছর। আবে দ্বিতীয় দফা বিক্রয় কর বৃদ্ধি স্থগিত করেছেন, যা অক্টোবরে ধার্য করার কথা ছিল। ভোক্তাদের আস্থায় নতুন কোন ধাক্কা এড়ানোর আশায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়া একটি দুর্বল ইয়েন জাপানের রফতানি চাহিদা বৃদ্ধি করে অভ্যন্তরীণ পণ্য উৎপাদন বাড়িয়ে দেবে। পর্যটন খাতের রমরমাও বাড়ছে। একদা নিষিদ্ধ ব্যয়বহুল জাপানী শহরগুলো এখন শক্তিশালী মুদ্রার দেশগুলো থেকে আগত পর্যটকদের কাছে সুলভ বলে মনে হতে শুরু করেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি রিপোর্ট প্রকাশের পর অর্থমন্ত্রী আকিরা আমারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভোক্তাদের আস্থার দৃশ্যত উন্নতি হচ্ছে এবং সামনের দিকে তাকিয়ে আমরা আশান্বিত হতে পারি।’ সস্তা তেলও একটি অসুবিধাসহ জাপানী অর্থনীতির পাথে কাজ করছে। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে তেলের দরে নিম্নগতি অর্থনীতিতে গৃহস্থালি ও ব্যবসায়ের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে, তা যে অর্থনীতি ব্যাপকভাবে আমদানিকৃত জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল। তবে এটি আবেনমিক্সের আরেকটি লক্ষ্যের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করেছে; ভোক্তা পণ্যের মূল্য হ্রাস করার পরিবর্তে ক্রমশ সামান্য বৃদ্ধি করা- যেমনটি গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময় করা হয়েছে। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×