ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

র্মিসবাহদের সমালোচনায় মিয়াদাদ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

র্মিসবাহদের সমালোচনায় মিয়াদাদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে রবিবার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। আর এবারও পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয় তুলে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হার দিয়ে শুরু করায় পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের কড়া সমালোচনা করেছেন দেশটির সাবেক তারকা ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াদাদ। এ বিষয়ে আইসিসির ওয়েবসাইটে তিনি লিখেনÑ ‘বড় ম্যাচে যে কোন দল কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে হাঁটে না? বরং তাদের সেরা একাদশকেই মাঠে নামায়? দুর্ভাগ্যবশত এই সহজ ফর্মুলাটা পাকিস্তান কোনদিনই মনে রাখে না? এর ফলে জেতা ম্যাচটা বিশ্বকাপে পাকিস্তান-ভারত স্কোরলাইনটা ০-৬ করে দিল? এখন এই রেকর্ডটা থামানোর জন্য পাকিস্তানকে হয়ত আরও চার বছর অপেক্ষা করতে হবে। ম্যাচের একাদশ নির্বাচনটাই পাকিস্তান সমর্থকদের চরম হতাশ করল? ইউনুস খানকে ওপেনার হিসেবে পাঠানোর পেছনে কোন রকেট সায়েন্স ছিল? স্পেশালিস্ট উইকেটকিপার সরফরাজ আহমেদও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পারে, তা-ও ও কেন বাদ? চোট পাওয়া মোহাম্মদ হাফিজের বদলি নাসির জামশেদ শেষ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়া উড়ে গিয়েছে? ও কি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য গিয়েছে, নাকি ওকে বিশ্বকাপের ম্যাচেও খেলানো হবে? উইকেট কিপিংটা স্পেশালিস্টদের কাজ? গুরুতর মুহূর্তে উমর আকমলকে বিরাট কোহলির ক্যাচটা ওকে মিস করতে দেখে আমি কিন্তু অবাক হইনি? এ ধরনের ভুলগুলোর মানেÑ পাকিস্তান দলটা এটা জানেই না যে কোথায় তাদের শক্তি? ওরা চাইছে ৮ নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যান থাকুক? সঙ্গে ছয়টা বোলারও যেন থাকে হাতে? বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে এগুলো করা যায় না?’ পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন বিরাট কোহলি। প্রথম কোন ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে শতরানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন তিনি। এছাড়া কোহলি-ধাওয়ানের শতরানের জুটির প্রশংসা করেছেন মিয়াদাদ, যা ধোনিকে স্বস্তিতে রাখতে সহায়তা করে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত তাদের হোমওয়ার্কটা দারুণভাবে করে রেখেছিল? ধাওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে কোহলি ভারতের ইনিংসটা তৈরি করে গেল? ভারতের বিপক্ষে মিসবার কোন পরিকল্পনাই ছিল না? পাকিস্তানের পেস বোলিং ও মোহাম্মদ ইরফানের উচ্চতা নিয়ে ওরাও চিন্তিত ছিল? কিন্তু লুজ বলের জন্য অপেক্ষা করে গিয়েছে? আমার মনে হলোÑ বড় ম্যাচের চাপটা ইরফানের মধ্যে প্রভাব ফেলেছিল, না হলে বল করতে গিয়ে ডেঞ্জার জোনে বারবার ঢুকে রাউন্ড দ্য উইকেট বল করতে বাধ্য হতো না। কোহলি আর ধাওয়ান বুদ্ধিমানের মতো স্ট্রাইক বদলে গিয়েছে নিয়মিত? ধাওয়ান যদি রানআউট না হতো, আরও ৩০-৪০টা রান বাড়ত? কোহলি-ধাওয়ানের শতরানের পার্টনারশিপটাই আসলে ধোনিকে অনেক স্বস্তিতে রেখেছে। তাই রাহানের আগে ও রায়নাকে পাঠাতে পারল? ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশনের বিপক্ষে পাক বোলাররা কখনই স্বস্তিতে ছিল না? এ্যাডিলেডের মতো ব্যাটিং উইকেটে বোলাররা ক্রমাগত শর্ট বোলিং করল?’ স্পিনে ভারত সবসময়ই ভাল খেলে। তারপরও পাকিস্তান দলে তিনজন স্পিনার রাখে। তবে পেসার সোহেল খান বেশ ভাল খেলেছে। আর তার প্রশংসা করেছেন মিয়াদাদ। এ বিষয়ে তাঁর অভিমত হলো, ‘স্পিনটা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা দারুণ খেলে? তবু তিনজন স্পিনারকে নিয়ে নেমেছিল পাকিস্তান? ইয়াসিরের আটটা ওভার খুব সহজে সামলে ভারতীয়রা ৬০টা রানও করেছে? বাঁ হাতি স্পিনার হ্যারিস সোহেলকে খেলানো আর একটা ঝুঁকি? অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের পিচে ওর সফল হওয়া খুব মুশকিল? পাকিস্তানের একটাই ইতিবাচক দিক দেখলাম, পাঁচ উইকেট পাওয়া পেসার সোহেল খান?’ মিয়াদাদের মতে ভারতের বিপক্ষে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের কারণেই হেরেছে পাকিস্তান। তবে বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোতে গুরুত্ব দিতে বললেন তিনি। একক কোন খেলোয়াড়কে প্রাধান্য না দিয়ে দলের স্বার্থ দেখার পরামর্শ দিলেন মিয়াদাদ, ‘এ্যাডিলেডের পিচে কোন জুজু ছিল না? দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে ব্যাটসম্যানরা দলকে হারাল? মিসবাহ টসের সময়ই বলল, ও ইউনুসকে দিয়ে ওপেন করাবে? স্কোর বোর্ডে ৩০০ রান দেখার পর ভাবলাম, আহমেদ শেহজাদের সঙ্গে আফ্রিদিকে ওপেন করতে পাঠাতে পারে মিসবা? কিন্তু পাক অধিনায়কের তো ম্যাচ রিডিংটাই নেই! মিসবা যতই রান করুক, ওর ৭৬ রান হারের ব্যবধানটা শুধু কমিয়েছে? ১৯৯২ সালেও ভারতের কাছে পাকিস্তান হেরেছিল? কিন্তু তার পরও কাপটা জিতে ফিরেছিলাম আমরা? ভারতের ম্যাচটার পর পাকিস্তানের ওপর আর চাপ থাকল না? গ্রুপের বাকি পাঁচটা ম্যাচে মনোসংযোগ করুক? শুধু নজর রাখুক, ব্যক্তির উর্ধে উঠে টিমকে গুরুত্ব দিক? যারা ফর্মে নেই তাদের বাদ দিয়ে ঠিকঠাক টিম মাঠে নামাক মিসবা?’ বিশ্বকাপে হার দিয়ে শুরু করা পাকিস্তানের পরবর্তী ম্যাচ শনিবার। সেই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সোমবার যাদের হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম চমক উপহার দেয় আয়ারল্যান্ড।
×