ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মুরগির ছানাও বোমাক্রান্ত!

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মুরগির ছানাও বোমাক্রান্ত!

টানা ৪৩ দিনের অবরোধ আর এর মাঝে হরতাল- এই কর্মসূচীতে পুড়ছে দেশ। রাজনৈতিক সহিংসতায় পেট্রোলবোমা মেরে দেশের দুটি স্থানে কাভার্ড ভ্যানে থাকা ৫ হাজার মুরগীর বাচ্চা মারা হয়েছে। এই খাতটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। হরতাল-অবরোধে পরিবহন বন্ধ থাকায় ডিম ও মুরগির দাম পড়ে গেছে। এতে এক ধরনের দুশ্চিন্তা চলছে খামারিদের মধ্যে। পোল্ট্রি শিল্পের এই ভয়াবহ বিপর্যয়ে রাস্তায় নামছেন পোল্ট্রি খামারিরাও। দেশের সার্বিক অবস্থা নাজুক করতে রাজনীতির নামে, রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে অর্থনীতি ধ্বংসের এমন ঘটনা কারও প্রত্যাশিত হতে পারে না। এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা প্রতিবাদ করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ জনজীবনের ধারা যেভাবে ব্যাহত হচ্ছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এভাবে দেশ চলতে পারে না। গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে এ ধরনের অবস্থা উন্নয়নের জন্য নেতিবাচক। কেবল রাজনৈতিক কারণে একের পর এক যেভাবে শিল্প ক্ষেত্রগুলো ধ্বংসের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। অনতিবিলম্বে এ অবস্থার অবসান জরুরী। দেশকে আগামীর পথে গতিশীল এবং জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার কোন বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে সারাদেশে খামারে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এ শিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত প্রায় ৭০ লাখ মানুষের জীবনও অনিশ্চয়তার পথে। খামারে ডিম ও মুরগির স্তূপ জমলেও যানবাহনের অভাবে নির্দিষ্ট মোকামে পাঠাতে পারছেন না খামারিরাÑ এটা বাস্তব পরিস্থিতি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, টাকার অভাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা অনেকেই মুরগির খাবার পর্যন্ত কিনতে পারছেন না। উৎপাদন খরচ থেকেও ৩০-৪০ শতাংশ টাকা প্রতিদিন লোকসান দিতে হচ্ছে তাদের। জাতীয় পর্যায়ে অবরোধ-হরতালের পরও স্থানীয় পর্যায়ে কোনো কোনো জেলায় নানা কর্মসূচীর কারণে পরিবহন বন্ধ থাকে, ফলে মুরগি-ডিম অন্য কোথাও যেতে পারছে না। জানা গেছে, একেকটি বড় খামারে ৩০-৪০ হাজার মুরগি থাকে। প্রতিদিন এসব খামারে ২৫-৩০ হাজার ডিম উৎপাদন হয়। পোল্ট্রি শিল্পে যেভাবে একের পর এক নেতিবাচক খবর আসছে তা এই শিল্পের জন্য অশনিসঙ্কেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু দেশ যেদিকে এবং যেভাবে এগোচ্ছে তাতে আশাপ্রদ কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অবস্থা এভাবে চলতে থাকলে বর্তমান সঙ্কট আরও বাড়বে। পোল্ট্রি শিল্পসহ অর্থনৈতিক সকল সেক্টরেই মারাত্মক ধস নামবে। এই সঙ্কট দূর হলে বাঁচবে আমাদের পোল্ট্রি শিল্পসহ সকল শিল্প।
×