ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মমতার সফর নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা

পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ  নিচ্ছে সরকার

এম শাহজাহান ॥ এবার পশ্চিমবঙ্গে রফতানি বাড়াতে চান বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা। এ কারণে পশ্চিমবঙ্গে সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বাংলাদেশ সফর নিয়ে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারাও নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশের জামদানি, ইলিশ মাছ, আম, সবজি, ব্যাটারি, সিমেন্ট, গার্মেন্টস, রড, মসলা, বিস্কুট, চা, চাল এমনকি কাঁচামরিচেরও চাহিদা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু শুল্ক-অশুল্কজনিতসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে পশ্চিমবঙ্গে রফতানি বাড়ছে না। এবার মমতার সফরকে কেন্দ্র করে এ সব সমস্যার সমাধান চান বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। তারা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন গলানো গেলে দু’দেশের অনেক অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান সম্ভব। একইসঙ্গে বাণিজ্যও বাড়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে। আর এ কারণে মমতা ব্যানার্জির উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা নিজেদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবেন। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাজধানীর প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে এ জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ভাষা, আচার-আচরণসহ নানা বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে মিল রয়েছে। এ কারণে এদেশে তৈরি প্রায় সব পণ্যের চাহিদা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু নানা ধরনের জটিলতার কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গে রফতানি বাড়তে পারছে না। বাংলাদেশের ব্যাপারে মমতা ব্যানার্জির নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে গত কয়েক বছরে রাজ্যটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের তেমন কোন ভাল খবর নেই। অথচ বাংলাদেশের বড় মার্কেট হতে পারে কলকাতা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মমতার সফরকে গুরুত্ব দিয়ে তিস্তা চুক্তি, বর্ডার হাট, সীমান্ত সমস্যাসহ কিছু বাণিজ্যিক চুক্তি করা যায় কি-না সেটি সরকারী পর্যায়ে বিবেচনায় নিতে হবে। জানা গেছে, মমতা ব্যানার্জির সফরের সময় কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি করা হতে পারে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সোনারগাঁ হোটেলে দু’দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই) এবং ইন্ডিয়া চেম্বার অব কমার্স (আইসিসিআই) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন, আইবিসিসিআইয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আলীসহ ব্যবসায়ী নেতারা এ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিতে এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে, এদেশের জামদানি ও ইলিশ মাছের কদরের শেষ নেই। কলকাতাবাসী সব সময় বাংলাদেশী পণ্য পেতে চায়। কিন্তু নানা ধরনের বাধা বিশেষ করে মাল্টিপল ভিসা, শুল্ক-অশুল্কজনিত সমস্যা, কানেকটিভিটি এবং মোটরভেহিক্যালস চুক্তি না থাকায় সেখানে আমাদের পণ্যের রফতানি বাড়তে পারছে না। মমতা ব্যানার্জির সফরের সময় এ বিষয়গুলো ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে।
×