ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ কঠিন সিদ্ধান্ত

বিএনপি জোটের নাশকতা কঠোর হাতে দমন করবে যৌথবাহিনী

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিএনপি জোটের নাশকতা কঠোর হাতে দমন করবে যৌথবাহিনী

শংকর কুমার দে ॥ অবরোধ-হরতালের নামে সহিংস সন্ত্রাস ও নাশকতা দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত জোট। এজন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী গোষ্ঠীকে মাঠে নামিয়েছে তারা। অবরোধ-হরতাল লোক দেখানো (আইওয়াশ)। ভেতরে ভেতরে চালানো হচ্ছে জঙ্গী কায়দায় মৃত্যুঘাতী পেট্রোলবোমা ও বোমাবাজির নাশকতা। এজন্য দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেয়া হতে পারে যৌথবাহিনীর অভিযান। আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিতব্য আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত্র মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে কঠোর হস্তে নাশকতা দমনের বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সূত্র জানান, আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ বৈঠকে বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা ৪২ দিনের অবরোধ-হরতালের নামে পেট্রোলবোমার আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারার নৃশংসতা ও ভয়াবহতার ঘটনা আলোচনা হবে। অবরোধ-হরতালের নামে টানা ৪২ দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচীর আড়ালে যেভাবে নাশকতার আগুনে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হচ্ছে তার ওপর পুলিশ ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় আনা হতে পারে। সূত্র জানান, পুলিশ ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট অবরোধ-হরতালের নামে সহিংস সন্ত্রাস ও নাশকতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এজন্য অবরোধের মধ্যে হরতাল দিয়ে পেট্রোলবোমার আগুনে পুড়িয়ে মারার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে বোমা ছুড়ে মারা, আগুন দেয়া, বোমাবাজির মতো ঘটনাগুলোর নাশকতা। নাশকতা চালানোর জন্য নিচ্ছে তারা নানা ধরনের কৌশল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতার মুখে পার্কিং করা গাড়িতে কিংবা যাত্রী শূন্য ট্রেনেও আগুন দিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে। এজন্য বেছে নেয়া হচ্ছে রাতের আঁধারকে। চোরাগোপ্তা কায়দায় এ ধরনের হামলায় আতঙ্ক সৃষ্টি করার কারণ হচ্ছে, নাশকতার ঘটনাকে দীর্ঘস্থায়ী করার কৌশল। অবরোধ-হরতালের ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও জনসম্পৃক্ততাহীন কর্মসূচী হওয়ায় জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসায় নাশকতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে। সূত্র জানান, অবরোধ-হরতালের নামে পেট্রোলবোমা ও বোমাবাজির নাশকতা চালানোর জন্য বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোকে। এর মধ্যে জেএমবি, হুজি ও হিযবুত তাহরীর সদস্যরা যুক্ত হয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। পুলিশ ও র‌্যাব সম্প্রতি হিযবুত তাহরীর, জেএমবি ও ছাত্র শিবিরের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অবরোধ-হরতাল কর্মসূচী লোক দেখানো, যার নেপথ্যে রয়েছে নাশকতার নীলনক্সা। সরকারের পতন ঘটানো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে নাশকতা দীর্ঘস্থায়ী করে দেশী ও বিদেশী প্রভাবশালী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতদের কাছে এ ধরনের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। সূত্র জানান, বিএনপি-জামায়াত জোট অবরোধ-হরতালের নামে নৃশংস নাশকতা চালানোর প্রেক্ষাপটে নামানো হয় বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, আনসারদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীকে। কিন্তু যৌথবাহিনীর তৎপরতা যতটা দৃশ্যমান হওয়ার কথা ছিল ততটা দৃশ্যমান না হওয়ায় সন্ত্রাসী, অপরাধী ও দুবর্ৃৃত্তরা নাশকতা চালানো অব্যাহত রেখেছে। সোমবার রাজধানী ঢাকার জামায়াতÑশিবির অধ্যুষিত বাড্ডা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। গুলশানের মতো অভিজাত এলাকা যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা চোখে পড়ার মতো সেখানে নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খানের সমাবেশস্থলে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। প্রকাশ্যে জনাকীর্ণ এলাকায় এ ধরনের চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জঙ্গী গোষ্ঠী জড়িত আছে বলে মনে করছেন গুলশান পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। খোদ রাজধানীতে এ ধরনের নাশকতার ঘটনা অব্যাহত থাকলেও যৌথবাহিনী কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা যতটা ক্ষিপ্রগতির বা দৃশ্যমান হওয়ার কথা ছিল ততটা নয় বলেই মনে করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
×