ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শুরু চায় শেখ জামাল’

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

‘ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শুরু  চায় শেখ জামাল’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পথ যতই হোক বন্ধুর ও অমৃসণ, লক্ষ্য যতই হোক কঠিনÑ সেটা হাসিল করার জন্য যদি না থাকে প্রয়োজনীয় রসদ, নির্দিষ্ট করে বললে সুদৃঢ় মনোবল, তাহলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ার সম্ভাবনা-আশঙ্কাই বেশি। এটা ভালভাবেই জানেন মামুনুল ইসলাম। তবে এখন তিনি যে দলে আছেন, সেই দলের ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা যে সবচেয়ে কমÑ সেটা মানবেন অধিকাংশ ফুটবলবোদ্ধাই। শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড এবার মৌসুম-সূচক ফুটবল আসর ‘ফেডারেশন কাপ’-এ শিরোপা ধরে রাখতে সক্ষম হবেন বলেই জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে অভিমত ব্যক্ত করেছেন দলটির কৃতী মিডফিল্ডার ও অধিনায়ক মামুনুল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ফেডারেশন কাপে শেখ জামালই চ্যাম্পিয়ন হবে বলে দৃঢ় আশা করছি।’ উল্লেখ্য, ২০১৪ আসরেও চ্যাম্পিয়ন ছিল শেখ জামাল। ‘এবারও যদি এই আসরে দলগত শিরোপার স্বাদ পেতে পারি, তাহলে আমি হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বাদ পাব।’ সেটা কিভাবে? রহস্য ভাঙ্গলেন মামুনুল, ‘২০১৩ আসরে আমি ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছিলাম আরেক ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে।’ উল্লেখ্য, এর আগে শেখ জামালে ২০১০ সালে এক মৌসুমের জন্য খেলেছিলেন মামুনুল। সাফল্য বলতে প্রিমিয়ার লীগে চ্যাম্পিয়ন এবং ফেডারেশন কাপে রানার্সআপ হওয়া। এবারের ফেড কাপে শিরোপা জেতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসের কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন ২৭ বছর বয়সী মামুনুল, ‘শেখ জামালের ১৪ খেলোয়াড়ই জাতীয় ফুটবল দলে খেলে। আমরা মাত্রই খেললাম বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে। আমরা যেহেতু খেলার মধ্যেই ছিলাম, তাই আমাদের আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ শেষ হওয়ার একদিন পরই বিশ্রাম নিয়ে আমরা অনুশীলন শুরু করে দিয়েছি কোচ মারুফুল হকের অধীনে। দলে কোন ইনজুরি সমস্যাও নেই।’ ইতোমধ্যেই ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের সঙ্গে একটি অনুশীলন ম্যাচও খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে মনজুর কাদেরের দল। ম্যাচে জিতেছে জামালই ৩-১ গোলে। ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোন চাপ অনুভব করছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল বলেন, ‘মোটেও নয়, বরং রানিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্মৃতিটা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণাই যোগাচ্ছে। খেলাটা আমরা উপভোগ করতে চাই।’ তবে আবাহনী, মোহামেডান, শেখ রাসেলের মতো দলগুলোরও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সামর্থ্য রাখে বলে জানান মামুনুল। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশ রানার্সআপ হওয়ার পর মাঠে কেঁদে বুক ভাসিয়েছিলেন মামুনুল ও তার সতীর্থরা। দৃশ্যটি হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে এদেশের ফুটবলপ্রেমীদের এ প্রসঙ্গে আবেগী মামুনুলের ভাষ্য, ‘এই আসরের স্মৃতি সারাজীবন মনে রাখব। দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ আমরা। আমরা হেরে যাওয়ার পরও দর্শকরা আমাদের মাঠে দাঁড়িয়ে যেভাবে সমর্থন দিয়েছে, সম্মান দিয়েছে, তা সত্যিই অকল্পনীয়। এত সম্মান কোনদিনও পাইনি। হেরে যাওয়া কোন দলকে এভাবে সমর্থন দেয়াটা ভাবাই যায় না। এটা অবিস্মরণীয়।’ ভাল ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল শৈশব থেকেই। বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী (হতে চেয়েছিলেন এ্যাথলেট) আজ দেশসেরা মিডফিল্ডার। ২০০০ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন মামুনুল। ২০০৩ সালে অনুর্ধ-১৭, ২০০৫ সালে অনুর্ধ-১৯ ও ২০০৬ সালে অনুর্ধ-২৩ জাতীয় দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। জাতীয় দলে অভিষেক ২০০৭ সালে। পেশাদার লীগে প্রথম দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। মামুনুল ২০১৪ আইএফএ শিল্ডে খেলে ভারতীয় ফ্যানদের মুগ্ধ করেন, ফলে অনেক ভারতীয় ক্লাব তাকে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে। এর কিছুদিন পরেই কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল ক্লাব এ্যাটলেটিকো ডি কলকাতায় খেলার জন্য সেখানে উড়ে যান।
×