ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুত বিভাগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত

উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সঞ্চালন লাইন তৈরির নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সঞ্চালন লাইন তৈরির নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভবিষ্যত বিদ্যুত উৎপাদন পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে পাওয়ারগ্রিড কোম্পানিকে (পিজিসি)। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অন্তত ১০ থেকে ২০ বছরের অগ্রগতি বিবেচনায় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে পিজিসিবি’র সঞ্চালন ব্যবস্থা কোন কোন ক্ষেত্রে বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ জন্য একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা দাঁড় করাতে হবে। ভবিষ্যত উৎপাদন বৃদ্ধিতে অন্তত ১০ থেকে ২০ বছরের অগ্রগতি পর্যালোচনায় নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুত বিভাগে পিজিসিবির উন্নয়ন প্রকল্পর অগ্রগতি পর্যালোচনায় এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম, পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনীছাড়াও বিদ্যুত বিভাগ এবং পিজিসিবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানায়, সরকার বিদ্যুত উৎপাদন ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে সারাদেশে বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এজন্য এখন থেকে সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় পিজিসিবির উন্নয়ন পরিকল্পনায় সরকারের লক্ষ্যমাত্রা মাথায় রাখা হয়নি। ভবিষ্যতে কোন এলাকা থেকে কি পরিমাণ বিদ্যুত সঞ্চালন করতে হবে সে পরিকল্পনা মাথায় রেখে কাজ করা জরুরী। বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বৈঠকে বলেন, ১০ থেকে ২০ বছরের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। কোন প্রকল্প গ্রহণের কয়েক বছরের মধ্যে যেন আবার একই জায়গাতে কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন পিজিসিবি’র কর্মকা-ের সঙ্গে অন্য বিতরণ কোম্পানির উন্নয়ন প্রকল্প যাতে মিলে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য কোম্পানিগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। বৈঠকে ছয় মাসের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে গত ছয় মাসে আর্থিক এবং ভৌত উভয় অগ্রগতিতে পিছিয়ে রয়েছে পিজিসিবি। সাত প্রকল্পর ৬৫ দশমিক ৬৩ ভাগ অগ্রগতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে ৩৬ দশমিক ৩৮ ভাগ। জানুয়ারি পর্যন্ত ভৌত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০৩ দশমিক ৭৪ ভাগ। কিন্তু অর্জন সম্ভব হয়েছে ৮২ দশমিক ২৬ ভাগ। গত বছর একই সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পে পিজিসিবির অগ্রগতি ছিল ১৪০ দশমিক ৪৫ ভাগ। পিজিসিবির প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে আমিন বাজার থেকে পুরাতন বিমানবন্দর পর্যন্ত ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও এ্যাসোসিয়েড সাবস্টেশন। প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে। বিবিয়ানা-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও ফেন্সুগঞ্জ-বিবিয়ানা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ। আগামী ২০১৭ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দুটি সঞ্চালন প্রকল্পের কাজ ২০১০-এর জুলাইতে শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় বিদ্যুত সঞ্চালন নেটওয়ার্ক উন্নয়নকরণ প্রকল্পের ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। জাইকার সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পটি ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০১৭ এর জুলাইতে। পূর্বাঞ্চলীয় ১৩২ কেভি গ্রিড নেটওয়ার্ক ২০১৬ সালের জুলাইতে, ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট-এর কাজ ২০১৭ সালের জুলাইতে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলীয় সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে সম্ভাব্যতা জরি এবং পল্লী এলাকায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণে সাবস্টেশন এবং গ্রিড লাইনের সম্প্রসারণ কাজ চলছে। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২০১৭-এর ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এ ছাড়াও সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে আরও ১১টি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পিজিসিবি। যেগুলোর প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে এখন বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক হচ্ছে। তবে এখনও এসব প্রকল্পর চূড়ান্ত অনুমোদন বা অর্থ সংগ্রহ হয়নি বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
×