ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২১৫, প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ আজ আফগানিস্তান, চ্যাম্পিয়নদের পরীক্ষায় ফেলতে চায় আফগানরা

বিপদ দেখছেন ধোনিও!

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিপদ দেখছেন ধোনিও!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হতাশ হওয়া তাঁর ধাতে নেই, তিনি ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি। যার যোগ্য নেতৃত্বে দীর্ঘ আটাশ বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করে ভারত। আইসিসির সব শিরোপাই বগলদাবা করার সৌভাগ্য হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সফরে একের পর এক ব্যর্থতায় সেই ধোনিই এখন চরিত্রের বিপরীতে কিছুটা হতাশ। আগামী রবিবার চিরশত্রু পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু চ্যাম্পিয়নদের শিরোপা ধরে রাখার মিশন। মাঠে ক্রমাগত ব্যর্থতা, ইনজুরিতে জেরবার অবস্থা, এখনও পর্যন্ত সম্ভাব্য একাদশটাই ঠিক করতে পারেনি ভারত। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে আসন্ন বিপদ আঁচ করতে পারছেন অধিনায়ক নিজেও। এই অবস্থায় আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ভারত। জেরবার চ্যাম্পিয়নদের একটা কঠিন পরীক্ষাই নিয়ে নিতে চাইছে ক্রিকেটের আগামীর শক্তি আফগনারা! ‘ক্রমশ আমাদের জন্য পরিস্থিতিটা সত্যি কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যেদিন ব্যাটসম্যানরা ভাল খেলছে, সেদিন বোলাররা পারছে না। আবার বোলাররা ভাল করলে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাটসম্যানরা। বিশ্বকাপে সাফল্য ধরে রাখতে হলে একসঙ্গে সকল বিভাগে জ্বলে উঠতে হবে। হাতে একদমই সময় নেই, খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ বলেন ধোনি। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রায় আড়াই মাস হলো অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে ভারত। এ সময়ে স্বাগতিকদের সঙ্গে চার টেস্ট, ত্রিদেশেীয় ওয়ানডে সিরিজের পর সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিধ্বস্ত হয় ধোনির দল। এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি তারা! পাকিস্তানের বিপক্ষে মুল মঞ্চের লড়াইয়ের আগে আজ আফগানিস্তানকে নিয়েও তাই ভাবতে হচ্ছে ভারতকে। ‘বিশ্বকাপের আগে আমাদের হাতে এই একটিমাত্র ম্যাচ। কম্বিনেশনটা দেখে নিতে হবে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ সেরা একাদশ বাছাই নিয়ে যে চিন্তা রয়েছে সেটি ফুটে ওঠে পরের বক্তব্যে। ‘প্রথম একাদশ বেছে নেয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আমরা আসলে দলের ইউটিলিটি ক্রিকেটারদের ওপরই ভরসা করে আছি। পেসারদের ভাল করতে হবে। আর অস্ট্রেলিয়ায় কোয়ালিটি স্পিনারের কিছু করার সুযোগ থাকবে। তাদের বাউন্স আদায় করে নিতে হবে।’ বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে একটা ম্যাচ ভাল করা খুবই জরুরী বলে মনে করেন তিনি। সেক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়, বদলে যায় দৃশ্যপট। তিনি আরও বলেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখছি। বিশ্বকাপ অনেক বড় টুর্নামেন্ট, এখানে শুরুতে দু’-একটি ম্যাচ ভাল হলে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ক্রমাগত ভাল করার সুযোগ তৈরি হয়।’ টেস্ট সিরিজের মধ্য পথে হুট করে নেতৃত্ব ছেড়ে অবসর নিয়ে নেন। ড্রেসিং রুমের পরিবেশ নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে। সেটি নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ড্রেসিং রুমে কোন সমস্যা নেই। কেবল একটিমাত্র ম্যাচ জিততে হবে।’ অন্যদিকে বোলারদেরই দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করেন গ্রেট সুনীল গাভাস্কার। সাবেক তারকার মতে, ‘ভারতীয় বোলাররা আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছে। বলের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণই নেই তাদের। কেবল শট বল করে সাফল্য পাওয়া যায় না। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে বড় ম্যাচে সুইং করাতে হবে, দিতে হবে ইয়র্কার।’ বোলিংয়ে কোন বিশেষ পরিকল্পনা দেখতে না পেয়ে যারপরনাই হতাশ গাভাস্কার। বিশ্বকাপ ধরে রাখতে এ নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি ব্যাটসম্যানদের নিয়েও খুব বেশি সন্তুষ্ট নন সাবেক গ্রেট। ‘ব্যাটসম্যানরা ভাল খেলছেন, এমনটা বলা যাবে না। তাদের মধ্যেও ধারাবাহিকতার অভাব। বড় ম্যাচ বের করতে হলে দু’-তিন জনকে বড় ইনিংস খেলতে হবে। কাউকে না কাউকে সেঞ্চুরি হাঁকাতে হবে। ত্রিদেশীয় থেকে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ পর্যন্ত এই বিষয়গুলো অনুপস্থিতি। ম্যানেজমেন্টকে আসলে সব কিছু নিয়েই ভাবতে হবে।’ ওদিকে লেজেগোবরে-এলোমেলো ভারতকে চেপে ধরতে চায় আফগানরা। অধিনায়ক ও বড় তারকা মোহাম্মদ নবি যেমন বলেন, ‘পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে, যে কোন দলের বিপক্ষেই আমরা এখন প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম। আফগানিস্তান মাঠের ক্রিকেটে ইতোমধ্যে তা প্রমাণ করেছে। আমরা ভারতকে হারানোর সামর্থ্য রাখি। জানি এখানকার কন্ডিশন ভিন্ন। কিন্তু আমাদের হাতে একাধিক ম্যাচ-উইনার পেসার আছে, যারা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। শাপুর, হামিদ ও দৌরলত যাদরান বিশ্বমানের পেসার। এখানে দারুণ করার সুযোগ ওদের।’ কেবল আজ ভারতকেই নয়, বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়েই শুরু করতে চান নবি।
×